শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ

‘যারা ডেলিভার করতে পারবে, তারা থাকবে। যারা পারবে না, আসলে তারা থাকবে না। খুবই সহজ হিসাব এখানে।’

ক্রীড়া প্রতিবেদক

টি-২০ বিশ্বকাপ থেকে এশিয়া কাপ; পুরোপুরি ব্যর্থ বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। টি-২০ ক্রিকেটে টাইগারদের ব্যর্থতার রাস্তা দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে! এ অবস্থার পরিবর্তনে অধিনায়ক পরিবর্তন করেছে বিসিবি। হেড কোচ সরিয়ে ‘টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট’ নিয়োগ দিয়েছে। অথচ দুবাই ও শারজাহর এশিয়া কাপে পরিবর্তিত সাকিব বাহিনীর পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই। ব্যাটিং ও বোলিং উভয় বিভাগেই ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করেছেন ক্রিকেটাররা। আক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় যে টি-২০ বিশ্বকাপ, সেখানে সাকিব বাহিনীর পারফরম্যান্সের কেমন হবে, এ নিয়ে বাজি ধরার লোকের অভাব হবে না!

এশিয়া কাপের আগের চার আসরের তিনবারের ফাইনালিস্ট। এবার নতুন অধিনায়ক সাকিবের টার্গেট ছিল সুপার ফোর। কিন্তু আফগানিস্তান কাছে ৭ উইকেট ও শ্রীলঙ্কার কাছে ২ উইকেটে হেরে শূন্য হাতে দেশে ফিরছে দল। ম্যাচ দুটিতে কেমন ছিল টাইগারদের পারফরম্যান্স? ব্যাটিংয়ে কতটা উজ্জ্বল ছিলেন এনামুল হক বিজয়, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহিম, সাকিব, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আফিফ হোসেনরা? কিংবা বোলিংয়ে পেসার তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, ইবাদত হোসেন, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন এবং স্পিনে সাকিব, মেহেদী হাসান মিরাজ, শেখ মেহেদি, মোসাদ্দেকরা।

এশিয়া কাপে টাইগাররা খেলেছে দুই ভেন্যুর ভিন্ন দুই উইকেটে। শারজাহর উইকেট ছিল পুরোপুরি ধীরগতির, স্পিন সহায়ক। দুবাইয়ের উইকেটে ব্যাটাররা সুবিধা পেয়েছেন। শারজাহতে দুই আফগান স্পিনার রশিদ ও মুজিবের ঘূর্ণিতে নাজেহাল হয়েছেন টাইগার ব্যাটাররা। দুই ওপেনার এনামুল বিজয় ও নাঈম শেখ পাওয়ার প্লের সুবিধা আদায়ে ব্যর্থ ছিলেন। নাঈম ৮ বলে ৬ রান, বিজয় টেস্ট মানসিকতায় ১৪ বলে ৫ রান করেন। সাকিব ৯ বলে দুই চারে ১১ রান করলেও মুজিবের বলের লাইন বুঝতে না পেরে বোল্ড হন। অভিজ্ঞ মুশফিক ৫ বলে ১ রান করে লেগ বিফোর হন। আফিফ ১২ রান করেন। শেষ দিকে মাহমুদুল্লাহ ও মোসাদ্দেক দৃঢ়তার পরিচয় দেন। মাহমুদুল্লাহ ২৭ বলে ২৫ রান, মোসাদ্দেক ৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ৩১ বলে। ১২৭ রান নিয়েও লড়াই করেছিলেন টাইগাররা। হেরে যায় সাইফুদ্দিন ও মুস্তাফিজের দুটি ওভারে। সাইফুদ্দিন এক ওভারে রান দেন ২২ এবং মুস্তাফিজ দেন ১৭ রান। শ্রীলঙ্কা ম্যাচে পরিবর্তন ছিল তিনটি। প্রথমবার ওপেন করেন মেহেদী মিরাজ ও সাব্বির। ৪৪ মাস পর টি-২০ খেলে মিরাজ ২৬ বলে ৩৮ রান করেন। ৩৫ মাস পর খেলতে নেমে ৬ বলে ৫ রান করেন সাব্বির। আবারও ব্যর্থ হন মুশফিক। দুই ম্যাচে ১ ও ৪ রান, টি-২০ ক্রিকেটে তার ভবিষ্যৎ সংশয়ের খোলশে ঢুকে পড়েছে। সাবলীল ব্যাটিং করে  সাকিব ২২ বলে ২৪, আফিফ ২২ বলে ৩৯, মাহমুদুল্লাহ ২২ বলে ২৭ ও মোসাদ্দেক ৯ বলে ২৪ রান করেন। আগের ম্যাচের মতো এবারও ব্যর্থ হয়েছেন পেসাররা। মুস্তাফিজ ৪ ওভারে ৩২, তাসকিন ৪ ওভারে ২৪ ও ইবাদত ৪ ওভারে ৫১ রান দেন। তিন পেসার ১২ ওভারে ১০৭। অভিষেক ম্যাচের প্রথম দুই ওভারে স্বপ্নের বোলিং করেন ইবাদত। ২ ওভারে ১৩ রান দিয়ে তুলে নেন ৩ উইকেট। পরের দুই ওভারে তাল, লয় হারিয়ে রান দেন ৩৮। এক ওভারেই ছিল ২২ রান। তার এই ছন্নছাড়া বোলিংয়েই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে পেসারদের সমালোচনা করে সাকিব বলেন দলের চাওয়া পাওয়া পূরণ করতে না পারলে বাদ পরতে হবে, ‘বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার উইকেটে পেসারদের বোলিংয়ের সুযোগ সবচেয়ে বেশি। সেখানকার উইকেটগুলোতে পেসারদের ১২ ওভার বোলিং করতে হবে। আমি বলছি না যে, ১২ ওভারই করতে হবে। তবে ৩ পেসারের কাছে ১২ ওভার প্রত্যাশিত। অন্তত ১০ ওভার ভালো করার প্রত্যাশা করবেন। অথচ অন্যান্য দেশগুলো ১৪-১৫ ওভার পর্যন্ত প্রত্যাশা করে। এটা পেস বোলারদের ডেলিভার করতেই হবে। যারা ডেলিভার করতে পারবে, তারা থাকবে। যারা পারবে না, আসলে তারা থাকবে না। খুবই সহজ হিসাব এখানে।’ অস্ট্রেলিয়ার উইকেটগুলো ঘাস আচ্ছাদিত হার্ড ও বাউন্সি। এমন উইকেটে টাইগার অধিনায়ক ডেথ ওভারের বোলারও খুঁজছেন, ‘আমাদের ডেথ ওভারে বোলিংয়ের জন্য বোলার খুঁজে বের করতে হবে।’

সর্বশেষ খবর