সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

আর্জেন্টিনা চিনলেও বাফুফে চেনেনি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

আর্জেন্টিনা চিনলেও বাফুফে চেনেনি

বাংলাদেশের মানুষ কতটা ফুটবল পাগল তা ভালোভাবে উপলব্ধি করেছে আর্জেন্টিনা। এবার বিশ্বকাপে লিওনেল মেসির প্রতিটি ম্যাচ  ঘিরে যে উন্মাদনা সৃষ্টি হয়েছে তা আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টসহ জনগণ জেনেছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। দেখেছে আর্জেন্টিনার ম্যাচে টিভির সামনে হাজার হাজার দর্শকদের উপস্থিতি। জায়ান্ট স্ক্রিন বসিয়ে আর্জেন্টিনার জয়ে বাংলাদেশ উৎসবে মেতেছে। ১৯৮৬ সালে দিয়েগো ম্যারাডোনার নেতৃত্বে শিরোপা জেতার পর আর্জেন্টিনাকে সমর্থন করে আসছে বাংলাদেশ। অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্জেন্টিনার ম্যাচ মানেই বাংলাদেশ যেন বিশ্বকাপ খেলছে।

একথা অস্বীকার করার উপায় নেই ম্যারাডোনার জন্যই আর্জেন্টিনার প্রতি ভালোবাসা বাংলাদেশের। ম্যারাডোনা জিতলে যেমন হাসতো তেমনি হারলে কাঁদতো। তবে কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে ঘিরে যা হয়েছে তা অতীতে কখনো হয়নি। এই প্রথম আর্জেন্টিনাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য সে দেশের জনগণ বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। 

শুধু কি তাই কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের প্রশংসা করেছেন। বলেছেন, বাংলাদেশের ভালোবাসায় তিনি অভিভূত। মেসির মা-ভাইও বাংলাদেশের কথা বলেছেন। তাদের কথা আর্জেন্টিনার প্রতি ভালোবাসাতেই প্রমাণ মিলেছে বাংলাদেশ ফুটবল প্রিয় দেশ। তারা ফুটবলকে প্রচ  ভালোবাসেন। মেসির মা এটাও বলেছেন আমি ফুটবলে বাংলাদেশকে ভালো অবস্থানে দেখতে চাই।

মেসির মা জেনেছেন। সে দেশের প্রেসিডেন্ট, ফুটবল কোচ, জনগণ বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশকে ফুটবল পাগল দেশ হিসেবেই চিনেছেন। তা না হলে বিশ্বকাপ নিয়ে এতটা উন্মাদনায় থাকার কথা নয়। প্রশ্ন হলো মেসির দেশ আর্জেন্টিনা চিনেছে বাংলাদেশকে। কিন্তু দেশের ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা বাফুফে তা কি উপলব্ধি করেছে। ফেডারেশনের বড় বড় আসনে তো দেশের  জনপ্রিয় ফুটবলাররা বসে আছেন। বিশেষ করে দেশের কিংবদন্তি ফুটবলার কাজী সালাউদ্দিন তো দীর্ঘদিন ধরে সভাপতির দায়িত্বে আছেন। দেশের ফুটবলের সবই তো তার চেনা। তারপরও ফুটবলের বেহাল দশা কেন? বিশ্বকাপে আমরা অন্যদের সমর্থন দিতে পাগল হয়ে উঠি। সেখানে কিনা নিজেরাই অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছি।

কিছুদিন আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ উদ্বোধন করতে এসে বাফুফের এক কর্মকর্তা বললেন, ‘আমরা এখন ইউরোপিয়ান আদলে ঘরোয়া ফুটবল আয়োজন করব। কর্মকর্তাটি আবার ফুটবল উন্নয়নে বড় দায়িত্বে আছেন। তাঁর মুখে ইউরোপের কথা শুনে তো অবাক। কেননা যেখানে সাফে সেমিফাইনাল খেলাটা স্বপ্নে পরিণত হয়েছে সেখানে ইউরোপ আদলে কথাটি কি মানায়? ফুটবল উন্নয়নে বাফুফে কখনো কি কোনো ভূমিকা রাখতে পেরেছে। বড় বড় কথা মুখেই সীমাবদ্ধ। এমন সংকটাপন্ন অবস্থায় ফুটবলে কেউ পাশে দাঁড়াতে চায়নি। বসুন্ধরা গ্রুপই মূলত ফুটবলকে বাঁচিয়ে রেখেছে। কেননা এ গ্রুপই পেশাদারসহ সাত লিগের স্পন্সর করছে। ঘরোয়া লিগ ঘিরেও বাফুফের কোনো কৃতিত্ব নেই।

আর্জেন্টিনা ভাবে বাংলাদেশকে নিয়ে, অথচ বাফুফে এ ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকাই রাখছে না। কবে যে বন্ধ দুয়ার খুলবে এটাই প্রশ্ন।

সর্বশেষ খবর