বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

খুলনাকে উড়িয়ে রাইডার্সের প্রস্তুতি

প্রস্তুতি ম্যাচে তামিমের খুলনা টাইগার্সকে ৭ উইকেটে হারাল রংপুর রাইডার্স

ক্রীড়া প্রতিবেদক

খুলনাকে উড়িয়ে রাইডার্সের প্রস্তুতি

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ-বিপিএলে একমাত্র দল রংপুর রাইডার্স, যারা নিজেদের মাঠে অনুশীলন করছে। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে নিজের মাঠে গতকাল খুলনা টাইগার্সের মুখোমুখি হয়েছিল রাইডার্স। ম্যাচে তামিম ইকবালের দলকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়ে ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে নুরুল হাসান সোহানের দল।

হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যে গতকাল প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ৮৭ রানেই অলআউট হয়ে যায় খুলনা। ৮৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০.৩ ওভারে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে জিতে যায় রংপুর। রাইডার্সের হয়ে সর্বোচ্চ ২১ রান করেছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। এ ছাড়া ১৬ রান করেছেন ওপেনার হাবিবুর রহমান।

অধিনায়ক তামিম ইকবাল ব্যাট করতে নেমেছিলেন চার নম্বরে। কিন্তু সুবিধা করতে পারেননি। প্রথম বলেই লেগ বিফোর হয়ে ফিরে যান তিনি। নিজে ওপেন না করে হাবিবুরের সঙ্গে তরুণ তারকা মুনিম শাহরিয়ারকে পাঠিয়ে ছিলেন। কিন্তু তিনিও ভালো করতে পারেননি। দুই ওপেনারই ১০টি করে বল মোকাবিলা করেছেন। হাবিবুর ১৬ রান করলেও মুনিম আউট হয়ে যায় ৫ রানে।

গতকাল পুরো ২০ ওভার খেলতেই পারেনি খুলনা। ১১ বল বাকি থাকতেই তারা অলআউট হয়ে যায়।

ক্যারিশম্যাটিক বোলিং করেছেন রংপুরের তরুণ তারকা রকিবুল হাসান। এই স্পিনার চার ওভার বোলিং করে মাত্র ৮ রান দিয়ে নিয়েছেন দুই উইকেট। তিন ও চার নম্বরে নামা দুই ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসান ও তামিম ইকবাল তারই শিকার।

দারুণ বোলিং করেছেন রংপুরের জিম্বাবুইয়ান তারকা সিকান্দার রাজাও। কোনো উইকেট না পেলেও দুই ওভারে তিনি দিয়েছেন মাত্র ৬ রান।

প্রতিপক্ষের রান কম হওয়ায় ব্যাটিং অনুশীলন ঠিকঠাক মতো হয়নি রংপুরের ব্যাটারদের। সিকান্দার রাজা ২৬ বলে ৩১ রান করে আরেকজনকে সুযোগ দিয়ে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরেন। পারভেজ হোসেনও ১৫ বল খেলে রিটায়ার্ড হার্ট।

রাইডার্সের ইনিংস ওপেন করেছিলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও রনি তালুকদার। নাঈম ১০ বলে করেছেন ১৬ রান। তবে রনি ৪ বল মোকাবিলা করেও রানের খাতা খুলতে পারেননি। ক্যাপ্টেন সোহানও রান করতে পারেননি। তবে ৮৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমেও সাত ব্যাটসম্যান বাইশগজে নামার সুযোগ পেয়েছেন।

খুলনার ব্যাটসম্যানদের মতো ব্যর্থ তাদের বোলাররাও। তবে ব্যতিক্রম ছিলেন জাতীয় দলের তারকা স্পিনার নাসুম আহমেদ। তিনি দুই ওভারের মধ্যে একটি মেডেন করেছেন, দুটি উইকেটও পেয়েছেন।

যদিও প্রস্তুতি ম্যাচে হার-জিত ব্যাপার নয়। তবে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেওয়ার দারুণ একটা সুযোগ। আর এই সুযোগটা খুব ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে রংপুর রাইডার্স। প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কারণে তারা চূড়ান্ত লড়াইয়ে নামার আগে নিজেদের ভুল-ত্রুটিগুলোও সংশোধন করে নেওয়ার দারুণ একটা সুযোগ পেল।

অন্যদিকে এই প্রস্তুতি ম্যাচে হারলেও তামিমরা তাদের সামর্থ্য সম্পর্কে একটা ধারণা পেল। বিপিএলে চূড়ান্ত ম্যাচে মাঠে নামার আগে নিজেদের সমস্যা নিয়ে কাজ করার একটা সুযোগ পেল।

বিপিএলের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলো মূলত তরুণদের খেলা। বেশি প্রাধান্য থাকে অলরাউন্ডারদের। সে কারণেই এই আসরে তারুণ্যকে প্রাধান্য দিয়ে দল গঠন করেছে রাইডার্স। দলের অধিকাংশ ক্রিকেটারই অলরাউন্ডার। স্থানীয়দের মধ্যে একাদশে সুযোগ পাওয়া চার ক্রিকেটারই ছিলেন বাংলাদেশের যুব বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য।

তবে দলে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও আছেন। টি-২০ লিগে দুর্দান্ত দাপট দেখানো পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক রয়েছেন দলের সঙ্গে। এ ছাড়া গত টি-২০ বিশ্বকাপে সাড়া জাগানো অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা তো রয়েছেনই।

তারুণ্য ও অভিজ্ঞতা মিলিয়ে রংপুর যে এবার ক্যারিশম্যাটিক এক দল গঠন করেছে তার কিছুটা ঝলক কাল প্রস্তুতি ম্যাচেই দেখিয়ে দিল।

সর্বশেষ খবর