বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
বিপিএল নিয়ে সাকিব

আমাকে সিইওর দায়িত্ব দিলে সব ঠিক করতে সর্বোচ্চ ১-২ মাস লাগবে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

আমাকে সিইওর দায়িত্ব দিলে সব ঠিক করতে সর্বোচ্চ ১-২ মাস লাগবে

বিপিএলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-২০ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। গালফ অয়েলের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে গতকাল এক দিনের জন্য প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহীর প্রতীকী দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এ সময় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নানা বিষয়ে কথা বলেন সাকিব। বিপিএল নিয়ে কথা উঠতেই নিজের ক্ষোভের কথা জানালেন অকপটে। জানালেন, বিপিএল কাক্সিক্ষত স্থানে পৌঁছতে পারেনি। এ ব্যাপারে বিসিবির সদিচ্ছার অভাব আছে বলে মনে করেন সাকিব।

সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আমাকে যদি বিপিএলের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব দেওয়া হয়, আমার বেশি দিন লাগবে না। আমার ধারণা, খুব বেশি হলে সর্বোচ্চ এক থেকে দুই মাস লাগবে সবকিছু ঠিক করতে। দুই মাসও লাগার কথা নয়। দুই মাস অনেক দূরের কথা বলছি। নায়ক সিনেমা দেখেছেন না! একদিনেও অনেক কিছু করা সম্ভব। যে করতে পারে, সে পারে সবসময়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই সবকিছু বাদ দিয়ে নতুন করে আবার ড্রাফট হবে, অকশন হবে, ফ্রি সময়ে বিপিএল হবে, আধুনিক প্রযুক্তি থাকবে, ব্রডকাস্ট ভালো থাকবে, হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভেন্যু থাকবে।’

এত বছরেও কেন বিপিএল কাক্সিক্ষত গন্তব্য খুঁজে পায়নি? সাকিব বলেন, ‘পারেনি নাকি চায়নি? জানি না, বলাটা কঠিন। চাইলে না পারার কোনো কারণ আমি দেখি না, বাংলাদেশের যে সম্ভাবনা। আমার ধারণা, আমরা সৎ মনে কখনো চাইনি, ওরকম কিছু করতে। এ কারণেই হয়নি এখনো পর্যন্ত।’ বাংলাদেশের চেয়ে ক্রিকেট জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে থেকেও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলো অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দেশগুলোতে বেশ জনপ্রিয়। সেখানকার খেলার মানও অনেক ওপরের লেভেলের। সাকিব বলেন, ‘(বিপিএলের) বাজার  নেই, কারণ বাজার আমরা তৈরি করতে পারিনি। আমরা যদি তৈরি করতে পারতাম, ভ্যালু অ্যাড করতে পারতাম, অবশ্যই এই বাজার অনেক বড় হওয়ার কথা ছিল। আপনি গ্রামেও এমন কোনো প্রত্যন্ত অঞ্চল দেখবেন না, যেখানে ক্রিকেট খেলাটা হচ্ছে না। এমন তো নয়, এটার (ক্রিকেটের) জনপ্রিয়তা  নেই।’ সাকিব মনে করেন, ১৬ থেকে ২০ কোটি মানুষের এই দেশে ক্রিকেট অনেক জনপ্রিয় খেলা। বিপিএলের বাজার না থাকাটা দুঃখজনক। মার্কেটিংয়ের জায়গায় ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন আয়োজকরা। এক্ষেত্রে সদিচ্ছারও অভাব আছে বলে মনে করেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘সদিচ্ছা থাকলে কোনো কিছু থেমে থাকার কিছু আমি দেখি না। সদিচ্ছা থাকলে আমি  তো কোনো কারণই দেখি না কেন ডিআরএস থাকবে না, তিন মাস আগে ড্রাফট কিংবা নিলাম হবে না, দলগুলো দুই মাস আগে থেকে ঠিক হবে না। এখন একজন ক্রিকেটার এক দিন আসবে, দুই দিনে চলে যাবে, কে কখন আসবে-যাবে, কেউ জানে না। মানে, যা-তা অবস্থা।’

বিপিএলের চেয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের মান অনেক ভালো বলে মনে করেন সাকিব আল হাসান। ‘আমাদের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগও আরও ভালোভাবে হয়। কারণ দলটা আগে থেকে গোছাতে পারে, আরও আগে থেকে জানে যে দলটা কী হতে পারে, সেভাবে কাজও হতে পারে। আমার ধারণা, আপনি যদি পরের প্রিমিয়ার লিগের কথা বলেন, সবাই জানে কার কোন দল। বিপিএলে তো  কোনো কিছুর ঠিক-ঠিকানা বুঝতে পারি না। ম্যাচ শুরু হওয়ার পর বিপিএল শুরু হয়।’ অন্যান্য দেশে ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পায় বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটাররা। কিন্তু বিপিএল মানদন্ডটা ঠিক রাখতে পারছে না। এ কারণে এখানে ভালো খেলেও জাতীয় দলের পথ উন্মুক্ত হচ্ছে না বলে মনে করেন সাকিব আল হাসান। পরিস্থিতি খুবই হতাশাজনক। তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই হতাশাজনক পর্যায়ে রয়ে গেছি।’

সর্বশেষ খবর