সোমবার, ৬ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে আসবে জয়?

আসিফ ইকবাল

চট্টগ্রামে আসবে জয়?

দুঃস্বপ্নের পথে হাঁটছেন তামিম ইকবালরা! গত ৭ বছর ঘরের মাটিতে অজেয় হয়ে উঠেছিল টাইগাররা। সেই স্বপ্নের পথে পেরেক ঠুঁকে দিতে চাইছে জশ বাটলারের ইংল্যান্ড। মিরপুরের দুই  ম্যাচ জিতে ওয়ানডে সিরিজ নিজেদের হাতে রেখে দিয়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বাটলার বাহিনী আজ নামছে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশের টার্গেটে। তামিম, সাকিব, মাহমুদুল্লাহরাও মরিয়া হারের খোলশ ছেড়ে জয়ের পথে ফিরতে। এজন্য চাই আত্মবিশ্বাসী ক্রিকেট, টেকনিক্যাল ক্রিকেট এবং সর্বোপরি ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং-তিন বিভাগে জ্বলে উঠার ক্রিকেট। এক যুগ আগের একটি ম্যাচের সুখস্মৃতি আত্মবিশ্বাসের রসদ জোগাতে পারে আজ! ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থেকেও জিতেছিল বাংলাদেশ। জিতেছিল লড়াকু ও আত্মবিশ্বাসী ক্রিকেট খেলে। এক যুগ আগে বিশ্বকাপের ওই ম্যাচে ২২৬ রানের টার্গেটে ১৬৯ রান তুলতে ৮ উইকেট খুঁইয়ে বসেছিল সাকিব বাহিনী। দলের হার নিশ্চিত জেনে স্টেডিয়াম থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন দর্শক। এরপর মাহমুদুল্লাহ ও শফিউল ইসলাম ইংলিশদের সব বাধা বিপত্তি ডিঙিয়ে নবম জুটিতে ৫৮ রান যোগ করে অবিশ্বাস্য জয় উপহার দিয়েছিলেন দেশকে। দেশের ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা জয় বলেই বিবেচিত হয়ে আসছে ম্যাচটি। সেদিনের ইংলিশ বধের ম্যাচটি তামিম বাহিনীকে আত্মবিশ্বাস জোগাতেই পারে। বাংলাদেশ চাইছে জয়। হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়াতে মাঠে নিজেদের উজার করে দিতে হবে শতভাগ। দলের স্পিন কোচ শ্রীলঙ্কান বংশোদ্ভূত রঙ্গনা হেরাথও গতকাল মিডিয়ার মুখোমুখিতে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেন, ‘পরাজিত দলে থাকাটা সহজ কিছু নয়। তবে এটা খেলারই অংশ। আমাদের শক্তিশালী হয়ে ফিরতে হবে। আমরা এই চ্যালেঞ্জটা নিতে শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো করার জন্য মুখিয়ে আছি।’

২০১৬ সালে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের কাছে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। এরপর একে একে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও ভারতকে। টানা ৭ সিরিজ জয়ের পর শুধুমাত্র পরিকল্পিত ও টেকনিক্যাল ব্যাটিংয়ের জন্য হেরেছে বাটলার বাহিনীর কাছে। সর্বশেষ সিরিজে ভারতকে হারিয়েছিল তামিম বাহিনী। যদিও চট্টগ্রামের ম্যাচে হেরেছিল আকাশসমান ২২৭ রানে। চট্টগ্রামের উইকেটে বাড়তি বাউন্স থাকে বলে ব্যাটাররা সাবলীল ব্যাটিং করেন। চট্টগ্রামের সর্বশেষ ম্যাচে উইকেটের সহায়তায় ভারতের শুভমান গিল ডাবল সেঞ্চুরি (২১০) করেছিলেন। শেষ ম্যাচটি হারলেও পরিসংখ্যানের হিসাবে সাফল্যের পাল্লা হেলে আছে বাংলাদেশের দিকে। জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে আজকের আগে যে ২৬ ম্যাচ খেলা হয়েছে। তাতে বাংলাদেশের জয় ১৫ এবং হার ৯। পরিত্যক্ত ২। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের দুটিতে হার এবং জয় একটি। ২০১০ সালে প্রথম মুখোমুখিতে টাইগাররা হেরেছিল ৪৫ রানে। পরের বছর বিশ্বকাপে বাংলাদেশ জিতেছিল ২ উইকেটে এবং ২০১৬ সালে সর্বশেষ লড়াইয়ে ইংল্যান্ড জিতেছিল ৪ উইকেটে।

মিরপুরের উইকেটে বল লাটিমের মতো ঘুরে। নিচু হয়। এমন উইকেটে ব্যাটিং করা কঠিন। প্রথম ওয়ানডেতে ২০৯ রান করে লড়াই করেছিল তামিম বাহিনী। হেরেছিল ডেভিড মালানের আকাশসমান দৃঢ়তার সেঞ্চুরির কাছে। দ্বিতীয় ম্যাচে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ব্যাটিং, বোলিং দুই বিভাগেই ব্যবধান স্পষ্ট করে দেয়। সাবলীল ব্যাটিং করেন সেঞ্চুরি করেন জেসন রয়। বোলিংয়ে স্যাম কুরান সুইং ও আদিল রশিদ তার লেগ স্পিনের জাদুতে বধ করেন টাইগারদের।

আট বছর আগে চট্টগ্রামে শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করেছিল ইংল্যান্ড। মিরপুরে প্রথম ওয়ানডে জিতেছিল সফরকারীরা। দ্বিতীয়টি জিতে সমতা এনেছিল বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে শেষটি জিতে সিরিজ জিতে দেশে ফিরেছিলেন বাটলাররা। চলতি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর আজকের ম্যাচ জিততে কোন কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন স্পিন কোচ হেরাথ, ‘আমার মনে হয়েছে, যখন প্রতিপক্ষ ব্যাটাররা আক্রমণ করবে, তখন আমাদের একটা পথ খুঁজে বের করতে হবে। কখন আক্রমণে যেতে হবে, কখন রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে হবে। এই বিষয়গুলো আত্মস্থ করতে হবে আমাদের।’

ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ৯ মার্চ শুরু টি-২০ সিরিজ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি চট্টগ্রামে ৯ মার্চ এবং শেষ দুটি ১২ ও ১৪ মার্চ মিরপুরে। এই সিরিজ শেষ করার পরপরই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একটি টেস্ট ও ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-২০ খেলবে টাইগাররা।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর