বিশ্বের সর্বকালের দ্রুততম মানব উসাইন বোল্ট, দ্রুততম মানবী অ্যামি ফ্রেজারের জন্য জ্যামাইকার বিশ্বব্যাপী আলাদা পরিচিতি। ক্যারিবীয় সাগরের অন্যতম সুন্দর দ্বীপরাষ্ট্র জ্যামাইকার পরিচিতি ক্রিকেটের জন্যও। এই দ্বীপরাষ্ট্রে জন্ম নিয়েছেন কোর্টনি ওয়ালশ্ব, মাইকেল হোল্ডিং, লরেন্স রো, জর্জ হ্যাডলির মতো বিশ্বসেরা তারকা ক্রিকেটাররা। জ্যামাইকার সাবিনা পার্ক সব সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রিয় ক্রিকেট ভেন্যু। এই মাঠে টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-২০; তিন ফরম্যাটের যে কোনো একটি খেলতে পছন্দ করে। সাবিনা পার্কে এখন পর্যন্ত ৫৪টি টেস্ট খেলা হয়েছে। বাংলাদেশ্বও ২টি খেলেছে। তিন নম্বরটি খেলবে আজ। এ মাঠে ২০২১ সালের পর টেস্ট ক্রিকেট খেলা হবে। সর্বশেষ টেস্টে যদিও পাকিস্তানের কাছে হেরেছিল। তারপরও এই মাঠে ক্যারিবীয়দের পারফরম্যান্সের গ্রাপ বেশ্ব উঁচুতে। ৫৪ টেস্টের ৫২.৫০ শ্বতাংশ্ব বা ২৫টি জিতেছে। আজ দুই টেস্ট ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয়টিতে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ্ব ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবীয়দের জন্য সিরিজটি হোয়াইটওয়াশের। বিপরীতে মেহেদী হাসান মিরাজের বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশ্ব এড়ানোর ম্যাচ। জুলাইয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের পর টাইগাররা টানা দুটি সিরিজ হেরেছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। এবার টানা তৃতীয় সিরিজ হারের ধাক্কা সামলাতেই পরিচিত সাবিনা পার্কে নামছে মিরাজ বাহিনী।
বাংলাদেশ্ব এই মাঠে দুটি টেস্ট খেলেছে। প্রথমবার ২০০৪ সালে এবং দ্বিতীয়বার ২০১৮ সালে। প্রথমবার রামনারেশ্ব সারওয়ানের ডাবল সেঞ্চুরি, ২৬১* ও ব্রায়ান লারার ১২০ রানের অপরাজিত ইনিংসের ওপর ভর করে স্বাগতিক ক্যারিবীয়রা ৪ উইকেটে ৫৫৯ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। জবাবে পেড্রো কলিন্সের বিধ্বংসী বোলিংয়ে যথাক্রমে ২৮৪ ও ১৭৬ রান করেছিল বাংলাদেশ্ব। বাঁহাতি পেসার কলিন্স ৯ উইকেট নিয়েছিলেন টেস্টে। ২০১৮ সালে টাইগাররা হেরেছিল ১৬৬ রানে। স্বাগতিকরা দুই ইনিংসে করেছিল যথাক্রমে ৩৫৪ ও ১২৯ রান। টাইগাররা করেছিল যথাক্রমে ১৪৯ ও ১৬৮ রান। টাইগারদের গুঁড়িয়ে দিয়েছিরেন জেসন হোল্ডার দুই ইনিংসে ৫ ও ৬টি করে ১১ উইকেট নিয়ে। সাবিনা পার্ক বরাবরই পেসারদের স্বর্গরাজ্য। ওয়ালশ্ব এখানে ১১ টেস্টে ৪৮টি, ওয়েসলি হল ৫ টেস্টে ৩৫, ম্যালকম মার্শাল ৮ টেস্টে ৩১ ও জারমেইন টেইলর ৫ টেস্টে ২৯ উইকেট নেন। এই মাঠে টাইগারদের সেরা বোলিং বাঁহাতি স্পিনার সাকিব আল হাসানের। যিনি খেলছেন না। টি-১০ খেলছেন আবুধাবিতে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে বছরের শেষ টেস্ট সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ্ব। সফরে ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-২০ ম্যাচও খেলবে। সিরিজের প্রথম টেস্টে নর্থ সাউন্ডে ২০১ রানে হেরেছে টাইগাররা। ক্যারিবীয় পেসার কেমার রোচ, জায়দান সিলস, আলঝারি জোশেপ, শামার জোশেপরা গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন মিরাজ বাহিনীকে। প্রস্তুত টাইগার পেস অ্যাটাকও। সাবিনা পার্কে হয় তো একজন ব্যাটার কম নিয়ে চার পেসার নিয়ে খেলতে পারে। ফিরতে পারেন ‘স্পিড স্টার’ নাহিদ রানা। নর্থ সাউন্ড টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে দুর্দান্ত বোলিং করেন তাসকিন। ৬ উইকেট নেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে উইকেট নেন ৮টি। হাসান মাহমুদও দারুণ বোলিং করেন। শ্বরিফুল ইসলাম ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন। ব্যাটিংয়ে সাবলীল ছিলেন সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হক ও ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট খেলা জাকের আলী অনিক। দুজনেই হাফ সেঞ্চুরি করেন। মুমিনুল ৫০ ও জাকের ৫৩ রান করেন। তবে বরাবরের মতোই ব্যর্থ হয়েছেন ওপেনাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাভেন গ্রিভস ১১৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। এ ছাড়া মিকলি লুইস ৯৭ ও অ্যাথলি ৯২ রান করেন। নর্থ সাউন্ডে ব্যর্থ হওয়ায় মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসানের মধ্যে যে কেউ বাদ পড়তে পারেন। তাদের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ হতে পারে সাদমান ইসলাম ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের যে কোনো একজনের।