গতি ফিরিয়ে আনতে নির্বাচিত কমিটি ভেঙে দিয়ে হকিতে অ্যাডহক কমিটি গঠন হয়। অবশ্য এ ছাড়া কোনো পথও ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুমিনুল হক সাঈদ ও সহসভাপতি রশিদ সিকদার দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। কেউ কেউ আত্মগোপনে রয়েছেন। এ অবস্থায় ফেডারেশন অচল হয়ে পড়ে। অ্যাডহক কমিটি গঠনের ছয় মাসের বেশি পার হয়েছে। এরপরও কি গতি ফিরেছে? জুনিয়র এশিয়াকাপে ভালো করায় প্রথমবার বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছে; যা হকির জন্য বড় প্রাপ্তি। কিন্তু আগের কমিটি থাকা অবস্থায় জুনিয়র খেলোয়াড়রা প্রথম ধাপ পেরিয়েছিলেন। যার শেষটা হয় অ্যাডহক কমিটির আমলে।
ফুটবল ও ক্রিকেটের পর হকিই তো দেশের তৃতীয় জনপ্রিয় খেলা। বিসিবি ও বাফুফে তাদের ঘরোয়া আসর সচল রাখলেও হকি ফেডারেশন তা পারছে না। এক বছরের বেশি সময় হয়ে গেছে হকি লিগের আয়োজন। তাও শেষটা হয়েছিল বিতর্কিতভাবে। এরপর আবার রেকর্ড সংখ্যক খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাকে শাস্তি দিয়ে আগের নির্বাচিত কমিটি ধিক্কারে পরিণত হয়। দুর্নীতিরও শেষ ছিল না। অথচ এনিয়ে কাউকে আসামি করা তো দূরের কথা, তদন্ত কমিটিও গঠন হয়নি। তাহলে কি দুর্নীতির যে অভিযোগ তা ভিত্তিহীন? হকি ফেডারেশন বলছে, তাদের বড় কাজ খেলাটা মাঠে নিয়মিত রাখা।
হকি তো মাঠেও নেই। ফেডারেশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে খেলোয়াড়রা যাতে অলস সময় পার না করে বিশেষ ব্যবস্থায় ট্রেনিংয়ে থাকে। এ উদ্যোগ একেবারে খারাপ নয়। কিন্তু এতে কি খেলোয়াড়রা স্বস্তিতে থাকবেন? তাদের আয়ের উৎস তো ক্লাবের হয়ে লিগ খেলা। প্রিমিয়ার লিগ অনিশ্চিত আর প্রথম বিভাগ বলে কোনো লিগ যে আছে তা কর্মকর্তারা ভুলেই গেছেন! কী যে হবে, দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন খেলোয়াড়রা। শোনা যায়, নানা বিষয় নিয়ে অ্যাডহক কমিটিতে বড় ধরনের মতবিরোধ রয়েছে। তাহলে কি বড় ধরনের সেশনজটে আটকে যাচ্ছে ঘরোয়া হকি। হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক লে. কর্নেল (অব.) রিয়াজুল হাসান এক মিডিয়াকে বলেছেন, ক্লাব বা সার্ভিসেস দলগুলো এখন খেলার জন্য তৈরি নয়। তাই লিগ ঘিরে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক এমন কথা বললেও বড় দুই ক্লাব মোহামেডান ও আবাহনীর ভাষ্য- ফেডারেশন তো এনিয়ে কোনো আলাপ করেনি। সংকট হয়তো আছে, তাই বলে খেলার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাব না, তা ভাবাটা ঠিক হবে না। যাক, লিগ জটিলতা ছাড়াও আরেকটা বিষয়ে বলাবলি শুরু হয়েছে অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ কতদিন? ফেডারেশন কি নির্বাচনমুখী হবে না?