টি-২০ সিরিজ - দেশে আন্তর্জাতিকমানের ক্রিকেটার কম। তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতো খেলোয়াড়ের সংকট আছে। ৩০ খেলোয়াড়কে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে সবকিছু। তবে আশা করি ‘এ’ দল, এইচপি থেকে খেলোয়াড় উঠে আসবে।’
দিন দুই আগে টাইগাররা সফরের শেষ ওয়ানডে খেলেন পাল্লেকেলেতে। অথচ সেই পাল্লেকেলেতেই টি-২০ খেলতে নামছে এক যুগ পর। ২০১৩ সালে ক্যান্ডির ৩৫ হাজার আসনের স্টেডিয়ামটিতে একমাত্র টি-২০ ম্যাচটি খেলেছিলেন টাইগাররা। যদিও স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছিল। পাল্লেকেলেতে এ ছাড়া আরও দুটি টি-২০ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। ২০১২ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে ম্যাচ দুটি খেলেছিলেন মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে। নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের কাছে ম্যাচগুলো হেরেছিল। এক যুগ পর ফের পাল্লেকেলেতে নিজেদের ফিরে পেতে টি-২০ খেলেছে লিটন বাহিনী। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাল্লেকেলেতে একটি মাত্র ম্যাচ খেললেও দেশটির মাটিতে খেলেছেন মোট পাঁচটি। জয়ের সংখ্যা টাইগারদেরই বেশি। টাইগাররা জিতেছেন তিন ম্যাচ ও হার দুটিতে। ইতোমধ্যে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে। সিরিজ দুটি হারের ধাক্কায় মানসিকভাবে পুরোপুরি বিপর্যস্ত ক্রিকেটাররা। এবার খেলছে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ। টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের খুব কাছ থেকে দেখেছেন চম্পকা রামানায়েকে। শ্রীলঙ্কার সাবেক পেসার টাইগারদের আবার বোলিং কোচ ছিলেন। সে হিসেবে টাইগার ক্রিকেটারদের খুব ভালো করে চেনেন ও জানেন। পাল্লেকেলেতে শেষ ওয়ানডে বাংলাদেশের হার দেখে মন্তব্য করেন সাবেক টাইগার এ বোলিং কোচ। তিনি ক্রিকেটাররা মানসিকভাবে ফিট নন বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ব্যাটিং, বোলিং সামর্থ্য নিয়ে কোনো কিছু বলব না। কিন্তু তাদের খেলা দেখে মনে হয়েছে তারা মানসিকভাবে শক্তিশালী নয়।’ ক্রিকেটারদের মানসিকতা নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খানও। টাইগার সাবেক অধিনায়কও ক্রিকেটারদের ব্যাটিং মানসিকতা নিয়ে বলেন, ‘আমাদের ব্যাটারদের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছে, স্বাভাবিক যে ক্রিকেটটা, যেটা আমরা ঢাকা লিগে খেলি বা এখানে খেলি, সেটা খেলছে না। হয়তো ওভার কনসাস (অতিরিক্ত সতর্কতা)। আমার কাছে মনে হচ্ছে না যে, তারা মানসিকভাবে ফিট। হয়তো অনেক চাপ নিয়ে নিচ্ছে।’ সাবেক অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু জানিয়েছেন, দেশে আন্তর্জাতিকমানের ক্রিকেটার কম। তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতো খেলোয়াড়ের সংকট আছে। ৩০ খেলোয়াড়কে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে সবকিছু। তবে আশা করি ‘এ’ দল, এইচপি থেকে খেলোয়াড় উঠে আসবে।’
গতকাল মাঠে নামার আগে অবশ্য দুই দল সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে। গত বছর জুনে টি-২০ বিশ্বকাপের ম্যাচটি টাইগাররা জিতেছিল ২ উইকেটে। দুই দেশ সর্ব প্রথম মুখোমুখি হয় ২০০৭ সালে। সেটা ছিল টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম আসরে। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের ম্যাচটিতে টাইগাররা হেরেছিল ৬৪ রানে। দুই দেশ পরস্পরের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচটি খেলে ২০১৩ সালে। পাল্লেকেলের ওই ম্যাচ স্বাগতিকরা জিতেছিল ১৭ রানে। শ্রীলঙ্কা প্রথম ব্যাটিংয়ে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৮ রান করেছিল। ১৯৯ রানের টার্গেটে টাইগারদের সংগ্রহ ছিল ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮১ রান। দুই দল গতকালের ম্যাচটির আগে ১৭ বার পরস্পরের বিপক্ষে খেলেছে। এতে শ্রীলঙ্কার ১১ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় ৬টি।
দ্বীপরাষ্ট্রে যে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছেন টাইগাররা, তার তিন জয়ের দুটি ছিল ২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে। শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তিন জাতির ওই টুর্নামেন্টের একটি ম্যাচ বাংলাদেশ জিতেছিল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের অবিশ্বাস্য এক ছয়ে। শেষ ২ বলে টাইগারদের জিততে দরকার ছিল ৬ রান। ওভারের পঞ্চম বলে ছক্কা মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেন মাহমুদুল্লাহ। এ জয়টি এখনো টাইগারদের উজ্জীবিত করে টি-২০ ফরম্যাটের ক্রিকেটে।