শ্রীলঙ্কা সফরে একেবারে খালি হাতে ফেরেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ১২ জুন এ দ্বীপরাষ্ট্রে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে দুই দফায় সফর করেন টাইগাররা। লম্বা সফরে দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও তিন টি-২০ ম্যাচ খেলে দুই দল। টাইগারদের হয়ে তিনটি ফরম্যাটে নেতৃত্ব দেন যথাক্রমে নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদি হাসান মিরাজ ও লিটন কুমার দাস। প্রায় দেড় মাসের এ সফরে নাজমুল ও মিরাজের অধিনায়কত্বে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ হারলেও সফল হয়েছেন টি-২০ অধিনায়ক লিটন দাস। ২-১ ব্যবধানে শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রথমবারের মতো টি-২০ সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। টাইগারদের লঙ্কা জয় সব ফরম্যাট মিলিয়ে ১৮তম সিরিজে, সময়ের হিসাবে যা দুই যুগ। শিরোপা জেতার পরদিনই পাকিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজ সামনে রেখে দেশে ফিরেছে লিটন দাসের বাংলাদেশ। বিমানবন্দরে বেশ হাসিখুশি দেখা যায় লিটন-মেহেদি হাসান মিরাজদের। টি-২০ সিরিজ জয় আলাদা আত্মবিশ্বাস দেবে হোম সিরিজে। বুধবার লিটন বাহিনীর বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ খেলতে ঢাকা পৌঁছেছে সালমান আলি আগার পাকিস্তান ক্রিকেট দল। ২০, ২২ ও ২৪ জুলাই মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দুই দল। তবে লিটনদের হালকাভাবে নিচ্ছেন না সালমান আগা। মিরপুর চ্যালেঞ্জিং হলেও টাইগার অধিনায়কের প্রত্যাশা-স্মার্ট ক্রিকেট খেললে জিতবে দল।
দেড় মাসের শ্রীলঙ্কা সফরের শুরুতেই দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে নামে নাজমুল বাহিনী। নাজমুলের জোড়া সেঞ্চুরিতে সিরিজের প্রথম টেস্ট ড্র করলেও দ্বিতীয় ম্যাচটি ইনিংস এবং ৭৮ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজ হারের পর এ ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব ছাড়েন নাজমুল। এরপর ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আবার হতাশ করে বাংলাদেশ। লঙ্কানরা পাত্তাই দেয়নি মেহেদি মিরাজদের। চারিথ আসালঙ্কার সেঞ্চুরির ম্যাচটি শ্রীলঙ্কা জেতে ৭৭ রানে। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। তানভির ইসলামের ৫ উইকেট এবং পারভেজ হোসেন ইমন-তাওহীদ হৃদয়ের হাফ সেঞ্চুরির নৈপুণ্যে ১৬ রানের জয় পান টাইগাররা। যদিও শেষ ম্যাচে ৯৯ রানে হেরে সিরিজ হাতছাড়া করে মিরাজের দল। কুশল মেন্ডিসের সেঞ্চুরির ম্যাচে বাংলাদেশ অলআউট হয় ১৮৬ রানে। প্রথম টি-২০ ম্যাচেও লঙ্কানদের কাছে পাত্তা পাননি সফরকারীরা। ৭ উইকেটের জয় পান লঙ্কানরা। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান টাইগাররা। লিটনের হাফ সেঞ্চুরির পর রিশাদ হোসেন, শরিফুল ইসলাম এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বোলিংয়ে ৮৩ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে শেখ মেহেদীর ১১ রানে ৪ উইকেটের পর তানজিদ তামিমের ৪৭ বলে ৭৩ ও সিরিজ-সেরা টাইগার অধিনায়ক লিটনের ২৬ বলে ৩২ রানের ইনিংসে ৮ উইকেটের জয় পায় বাংলাদেশ।
সিরিজ জিতে দেশে ফিরে টাইগারদের প্রশংসা করেন ম্যানেজার নাফিস ইকবাল, ‘আমরা যে সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম এ জয়টা দেশের জন্য, প্লেয়ারদের জন্য বা বোর্ডের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ টিমের ওপর আস্থা রাখতে হবে, সাপোর্ট দিলে এ টিম নিয়ে ইনশাল্লাহ অনেক দূরে যেতে পারব।’ পাকিস্তান সিরিজের পর সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ এবং সামনে ২০২৬ টি-২০ বিশ্বকাপ হলেও আপাতত সালমান-বাবরদের নিয়েই ভাবছেন লিটন। টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘মিরপুরে পাকিস্তান সিরিজ খুব একটা সহজ হবে না। তাদের প্লাস পয়েন্ট হচ্ছে অধিকাংশ প্লেয়ারই বিপিএল খেলে ও কন্ডিশন সম্বন্ধে জানে। চ্যালেঞ্জ হলেও আমি আশাবাদী, আমার টিম স্মার্ট ক্রিকেট খেললে জিততে পারব।’