ক্রিকেট যেমন 'গ্লোরিয়াস আনসার্টেন গেম'। একই সঙ্গে কুসংস্কারেরও খেলা। সাফল্য পেতে, কিংবা প্রতিপক্ষের উপর চড়াও হতে কখনো ব্যাটসম্যানদের দেখা যায় বাঁ পায়ের প্যাড আগে পরতে। কখনো আবার ডান পা আগে দিয়ে মাঠে নামতে। অথবা বোলারকে দেখা যায় বোলিংয়ের আগে বলে চুমু খেতে। কত কুসংস্কার ক্রিকেটারদের মধ্যে! এ সবই খেলার মাঠে নিজেকে ফিরে পেতে। সাফল্য পেতে। অনেক দল আবার ভাগ্যদেবীর সহায়তা নিতে উপস্থিত হন মসজিদ, মন্দিরে। এতে করে সাফল্যও পায় দলগুলো। শ্রীলঙ্কা সিরিজ এবং এশিয়া কাপে টানা ৯ হারে এখন টলটলায়মান টাইগাররা। মানসিকভাবে অনেকটাই আত্মবিশ্বাসহীন মুশফিকরা। এ থেকে উদ্ধার পেতে দুই দুটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছেন মুশফিকরা। তারপরও মানসিক শান্তি, স্বস্তি খুঁজতে এবং হারানো আত্মবিশ্বাসের খোঁজে মিরপুরের স্থানীয় এক এতিমখানায় উপস্থিত হয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। এতিম ছেলেদের সঙ্গে মিশে, ক্রিকেট খেলে উদ্দীপ্ত হয়েছেন, উজ্জীবিত হয়েছেন মুশফিক, তামিম ইকবাল, রাজ্জাক রাজরা। টি-২০ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের কঠিন ব্যারিয়ার পেরোতে যারপরনাই মরিয়া টাইগার ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটের সব সংস্কার, কুসংস্কারের বেড়া টপকাতে চাইছেন যেনতেনভাবে। গত দুই মাসের টানা হারের ধাক্কায় ক্রিকেটাররা এমনভাবে লাইনচ্যুত হয়েছেন যে, আবারও লাইনে উঠতে অলিগলির সব পথ মাড়াতে চাইছেন। আজ টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ। আইসিসির সর্ববৃহৎ ইভেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের আজ কঠিন প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটির বেড়া ডিঙালেই চূড়ান্ত অনেকটাই নিশ্চিত মুশফিকদের। তাই আফগানিস্তানকে নিয়ে এখনো যুযুর ভয় টাইগারদের। এশিয়া কাপে আফগানদের কাছেই হেরেছিলেন মুশফিকরা। যাতে লজ্জায় ঢিঢি পড়েছিল পুরো দেশে। মাথা কাটা পড়েছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের আনকোড়া আফগানিস্তানের কাছে হারায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ওটাই ছিল যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটির বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ। টেস্ট খেলুড়ে দেশটির জন্য সহজ প্রতিপক্ষ ছিল আফগানরা। কিন্তু পারেনি। হেরেছিল ৩২ রানে। সেই আফগানদের বিপক্ষে আজ নামছেন মুশফিকরা। লড়াইটি সহজ হবে না বলেই জানেন টাইগার অধিনায়ক। তবে জয়ের জন্য জানপ্রাণ বাজি রাখতে এক পায়ে খাড়া টাইগার অধিনায়ক, 'আফগানিস্তানের চেয়ে আমরা অবশ্যই ভালো দল। আমরা কাল (আজ) জয়ের জন্যই নামব।' চূড়ান্ত পর্বে ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলতে হলে আজ জিততেই হবে মুশফিকদের। সুতরাং জানবাজি লড়াই না করে কোনো উপায়ও নেই টাইগারদের। মুশফিক যেমন জিততে মরিয়া। তেমনি মরিয়া আফগানিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবীও। আফগান অধিনায়ক আবার একধাপ এগিয়ে। টি-২০ ফরম্যাটের ক্রিকেটে নিজেদের এগিয়ে রেখেছেন বাংলাদেশের চেয়ে, 'টি-২০ ফরম্যাটে আমরা ভালো দল। আমি মনে করি টি-২০ ফরম্যাটের ক্রিকেটে আমরা এগিয়ে।'
দুই দল এর আগে কোনোবারই আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে মুখোমুখি হয়নি। ২০১০ সালে গুয়াংজুতে স্বর্ণ জয়ের লড়াইয়ে টাইগাররা ৫ উইকেটে হারিয়েছিল আফগানদের। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১১৮ রান করেছিল আফগানিস্তান। টাইগাররা ৩ বল হাতে রেখে ম্যাচটি জিতেছিল তরুণ সাবি্বর রহমান রুম্মনের ১৮ বলে ৩৩ রানের অপরাজিত ইনিংসে। ওই ছোট্ট ঝড়ো ইনিংসে ছিল তিন তিনটি ছক্কা। আজ সাবি্বরের খেলার সম্ভাবনা ফিফটি-ফিফটি। একাদশ সাজাতে অবশ্য হিমশিম খেতে হচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টের। তামিমের জুটি কে হবেন, এটা ঠিক করতে গলদগর্ম ম্যানেজমেন্টের।