শ্রীলঙ্কা সিরিজ, এশিয়া কাপ ও টি-২০ বিশ্বকাপে ব্যাটসম্যান ও বোলারদের পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনা ছিল চারিদিকে। ব্যাটসমানদের ব্যাটে দেখা মিলছিল না রানের। ক্ষুরধার ছিলেন না বোলাররা। এশিয়া কাপ ও টি-২০ বিশ্বকাপের জন্য বন্ধ ছিল ওয়ালটন জাতীয় ক্রিকেটের ১৫ নম্বর আসর। অবশেষে দেড় মাসের বিরতি দিয়ে ১২ এপ্রিল শুরু হয় জাতীয় ক্রিকেটের ষষ্ঠ রাউন্ড। ষষ্ঠ রাউন্ডে ব্যাটসম্যান ও বোলাররা আবারও জ্বলে উঠেন। একটি ডাবল সেঞ্চুরিসহ দেখা মিলে আরও সাতটি সেঞ্চুরির। জ্বলে উঠেন বোলাররাও। ব্যাটসম্যান ও বোলারদের জ্বলে উঠার রাউন্ডে জয় পেয়েছে শিরোপা প্রত্যাশী ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা।
ষষ্ঠ রাউন্ডে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন রাজশাহীর ফরহাদ রেজা। তিনি ২৫৯ রান করেন চট্টগ্রামের বিপক্ষে। একই ম্যাচে ফরহাদের সতীর্থ মুক্তার আলী এক ইনিংসে ১৬ ছক্কা মেরে নাম লিখেন রেকর্ড বুকে। রাজশাহী ৪০৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে চট্টগ্রামকে। শিরোপা প্রত্যাশী ঢাকা ৮ উইকেটে হারিয়েছে বরিশালকে। সিলেটকে ৩১৪ রানে হারিয়েছে রংপুর এবং ঢাকা মেট্রোপলিটনকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে খুলনা।
বিকেএসপিতে বাংলা সালের প্রথম দিনই খেলা শেষ করেছে রাজশাহী। ৭৭ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর সপ্তম উইকেট জুটিতে ফরহাদ ও সাঞ্জামুল ইসলাম ৩৪৭ রান করে জাতীয় ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে রেকর্ড জুটি করেন। এই জুটিতে এবং মুক্তারের ছক্কার বৃষ্টিতে ৯ উইকেটে ৬৭৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে রাজশাহী। জবাবে চট্টগ্রামের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ২০৮ রানে। ফলোঅন না করিয়ে নিজেরাই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে রাজশাহী। ৪৬৭ রানের পর্বতসমান স্কোরে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেটে ১২৮ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। টার্গেট দেয় ৫৯৬ রানের। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ১৯২ রান তুলে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম হেরে যায় ৪০৩ রানে।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরীতে শিরোপা রেসে এগিয়ে থাকা ঢাকা ৮ উইকেটে হারিয়েছে বরিশালকে। অধিনায়ক শাহরিয়ার নাফিসের ১২৯ রানে ভর করে প্রথম ইনিংসে ৩২৩ করে বরিশাল। জবাবে তাইবুর পারভেজের সেঞ্চুরিতে (১০২) ৪৪৩ রান করে ঢাকা। ১২০ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে বরিশালের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২২৯ রান। ১১০ রানের মামুলী টার্গেটে খেলতে নেমে ২ উইকেট হারিয়ে সহজেই জয়ের বন্দরে পেঁৗছে যায় ঢাকা।
কঙ্বাজার স্টেডিয়ামে বাঁ হাতি স্পিনার আবদুর রাজ্জাক রাজের ঘূর্ণিতে স্মরণীয় হয়ে রয়েছে ম্যাচটি। রাজ্জাক এই ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৯ উইকেট। যা জাতীয় ক্রিকেটে রেকর্ড। দুই ইনিংস মিলিয়ে তার উইকেট সংখ্যা ১৩টি। প্রথম ইনিংসে ডাকা মেট্রোর সংগ্রহ ১৭২। জবাবে খুলনার প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ ২১৩ রান। ৩১ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৩ রান সংগ্রহ করে মেট্রো। ২০২ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়েই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় খুলনা। দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন তুষার ইমরান (১০৭)। ফতুল্লায় নাসুম আহমেদের দুর্দান্ত বোলিংও জেতাতে পারেনি সিলেটকে। ৩১৪ রানের বড় জয় পায় রংপুর। প্রথমে ব্যাট করে নাঈম ইসলাম ও তানভির হায়দারের জোড়া সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৩৯১ রান করে রংপুর। নাসুম নেন ৭ উইকেট। জবাবে ১৪৩ রানে শেষ হয় সিলেটের প্রথম ইনিংস। ১৪৮ রানে এগিয়ে থেকে রংপুর দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ৬ উইকেটে ২২৮ রান তুলে। ৪৭৭ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে সিলেটের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় ১৬২ রানে।