বছরের শুরুতে ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রামে যখন কুমার সাঙ্গাকারা ট্রিপল সেঞ্চুরি করেন, তখন মাঠে দাঁড়িয়ে লঙ্কান ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং সৌকর্য দেখছিলেন ইমরুল কায়েস। সাঙ্গাকারার ব্যাটিং দেখেই হয়তো মনে মনে নিজেকে তৈরি করে নিয়েছিলেন বাঁ হাতি ওপেনার। জবাব দিয়েছিলেন সেঞ্চুরি করে। দ্বীপরাস্ট্রের বিপক্ষে যে টেস্টটি ড্র করেছিল বাংলাদেশ, তাতে কিয়দংশ সহযোগিতা ছিল সেঞ্চুরিয়ান ইমরুলের। সেটাই ছিল ইমরুলের ১৭ টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষটি। অবশ্য বাংলাদেশেরও সেটা শেষ টেস্ট। লঙ্গার ভার্সান ক্রিকেটে বড় ইনিংস খেলার ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন এই বাঁ হাতি ওপেনার। কাল বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ফাইনালের তৃতীয় দিন তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। তার ডাবল সেঞ্চুরিই এখন বিসিএলের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছে প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চলকে। তার ডাবল সেঞ্চুরিতেই বিসিবি উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে ৩ উইকেটে ৪১০ রান তুলেছে দক্ষিণাঞ্চল। এগিয়ে রয়েছে ৪৪৬ রানে। ফাইনালের বাকি এখনো দুদিন।
প্রথম দিন ছিল বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের। নিয়েছিলেন ৮৬ রানে ৮ উইকেট। দ্বিতীয় দিনটি ভাগাভাগি করে নেন নাসির হোসেন ও আল-আমিন। কাল তৃতীয় দিনের নায়ক ইমরুল। ৩৬ রানে এগিয়ে থেকে কাল দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে দক্ষিণাঞ্চল। দুই ওপেনার ইমরুল ও এনামুল হক বিজয় ৫৭ রান যোগ করেন স্কোর বোর্ডে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সৌম্য সরকারের সঙ্গে যোগ করেন ৮০ রান। ১৩৭ রানে এনামুল ও সৌম্যের পতনের পর তৃতীয় উইকেটে ইমরুল জুটি বাধেন মো. মিথুনের সঙ্গে। দুজনে তৃতীয় উইকেট জুটিতে যোগ করেন ২৫৪ রান। দুজনেই তুলে নেন তিন অঙ্কের স্কোর। এরমধ্যে ইমরুল খেলেন ২০৪ রানের নান্দনিক এক ইনিংস। এ মৌসুমে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের চতুর্থ ডাবল সেঞ্চুরি এটা। বিসিএলের প্রথম ম্যাচে ওয়াল্টন কেন্দ্রীয় অঞ্চলের পক্ষে শামসুর রহমান শুভ খেলেছিলেন ২৬৭ রানের ইনিংস। এরপর জাতীয় ক্রিকেটে ঢাকা বিভাগের তাইবুর রহমান পারভেজ ২০৭, রাজশাহীর ফরহাদ রেজা এপ্রিলে খেলেন ২৫৯ রানের ইনিংস। কাল বিসিএলের ফাইনালে খেললেন ইমরুল। ২৬৬ বলের ইনিংসটি খেলতে ক্রিজে ছিলেন প্রায় ৬ ঘণ্টা। তাতে ছিল ছিল ২০টি চার ও ৯টি ছক্কা। দিনের খেলা শেষ হওয়ার ১৭ বল আগে সাজঘরে ফিরেন বাঁ হাতি ওপেনার। ইমরুলের পথ অনুসরণ করে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মিথুন অপরাজিত রয়েছেন ১১১ রানের ইনিংস খেলে। তার ১৫৫ বলের ইনিংসটিতে রয়েছে ১৩টি চার ও ৫টি ছক্কা।
প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত বোলিং করা তাইজুল কাল ছিলেন ম্লান। ২৭ ওভার বোলিং করে ১০৯ রানের খরচে উইকেট পেয়েছেন মাত্র একটি। ফরহাদ রেজা আউট করেছেন ইমরুলকে এবং অন্যটি রান আউট। বাংলাদেশ 'এ' দলের পক্ষে দুটি চারদিনের, তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি-২০ ম্যাচ খেলতে ২২ জানুয়ারি ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাচ্ছেন ইমরুল।