বিশ্বকাপ ফুটবলের উত্তেজনার পারদ বেড়েই চলেছে। এর অাঁচে পুড়ছে ব্রাজিল থেকে হাজার হাজার মাইল দূরের বাংলাদেশ। কাল সেই বিশ্বকাপকে ম্লান করে আলোয় আলোকিত হলো আইপিএল। ভারতের টি-২০ টুর্নামেন্ট। কিন্তু সাকিব আল হাসানের জন্য আসরটি ভীষণ জনপ্রিয় বাংলাদেশে। তাই আইপিএলের সপ্তম আসরের ফাইনালে গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের ক্রিকেটপ্রেমীদের সমর্থন ছিল বাংলাভাষী কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রতি। ব্যাট-বলে সাকিব জ্বলে উঠতে পারেননি ঠিকই। কিন্তু তার দল, বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের দল কলকাতা নাইট রাইডার্স বাজিমাত করেছে শেষ ওভারে। প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলতে আসা প্রীতি জিনতার কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবকে হারিয়েছে ৩ উইকেটে। কলকাতার উইনিং বাউন্ডারিটি হাঁকান পিযুস চাওলা। গত তিন বছরে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আইপিএল সেরা হল কলকাতা নাইট রাইডার্স। অবশ্য কলকাতাকে চ্যাম্পিয়ন করতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন মনিশ পাণ্ডে, ৯৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে। পাণ্ডের ইনিংসে ম্লান হয়ে যায় ঋৃদ্ধিমান সাহার সেঞ্চুরি (১১৫)। চ্যাম্পিয়ন হয়ে ভারতীয় ১৫ কোটি টাকা প্রাইজমানি পেয়েছে কলকাতা। ঋৃদ্ধিমান সাহার বাড়ি বাংলায়। সে হিসেবে খেলার কথা কলকাতা নাইট রাইডার্সে। অথচ খেললেন প্রীতি জিনতার পাঞ্জাবের পক্ষে। কাল ব্যাঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলেন জন্মস্থান কলকাতার বিপক্ষে। শুধু খেলেননি, ব্যাটকে খাপ খোলা তলোয়াড়ে পরিণত করে এফোর-ওফোর করেছেন কলকাতার বোলারদের। মাত্র ৪৯ বলে সেঞ্চুরি করে অপরাজিত ছিলেন ১১৫ রানে। টি-২০ ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করতে ঋৃদ্ধিমানের বল খরচ হয়েছে মাত্র ৫৫টি। ২০৯.০৯ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটি সাজানো ছিল ১০ চার ও ৮ ছক্কায়। বাংলার এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরিতেই প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলতে আসা পাঞ্জাব স্কোরবোর্ডে জমা করে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৯ রান। সাকিব ছাড়া নাইট রাইডার্সের সব বোলারেরই নাভিশ্বাস তুলেছিলেন ঋৃদ্ধিমান। সাকিব ৪ ওভারে ২৬ দেন। রান কম দিলেও কোনো উইকেট পাননি তিনি। গগণচুম্বী স্কোর গড়লেও প্রথম ১০ ওভারে পাঞ্জাবের সংগ্রহ ছিল ৫৮ রান। শেষ ১০ ওভারে পাঞ্জাব যোগ করে ১৪১ রান। ২০০ রানের টার্গেট। খেলতে নেমে ওপেনার মনিশ পাণ্ডের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় কলকাতা। পাণ্ডে ৯৪ রান করে সাজঘরে ফিরেন ১৭ নম্বর ওভারের শেষ বলে। ৫০ বলের ইনিংসটিতে ৭টি চার ও ৬টি ছক্কা। রান আউট হওয়ার আগে সাকিব করে ৭ বলে ১২ রান। ইনিংসটিতে ছিল দুটি চার। ইউসুফ পাঠান করেন ২২ বলে ৩৬ রান। শেষ ওভারে জয়ের জন্য কলকাতার দরকার ছিল পাঁচ রান। প্রথম দুই বলে এক রান উঠার পর দরকার হয় চার বলে চার। চতুর্থ বলেই চাওলা পয়েন্টে বাউন্ডারি মেরে কলকাতাকে আবারও আইপিএল সেরা করেন।