ইনচেন এশিয়াডে হকি দল ভালো খেলবে। এই প্রত্যাশা খেলোয়াড়দেরই। দেশবাসীও চান গেমসে ভালো খেলে হকি দল প্রশংসিত হোক। কিন্তু কীভাবে? পারফরম্যান্স ও মান বিচার করলে হকিতে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ এক ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা গ্রুপে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও মালয়েশিয়ার মতো শক্তিশালী দল। দুর্বল প্রতিপক্ষ আছে সিঙ্গাপুর। বর্তমানে হকির যে মান তাতে সিঙ্গাপুরকে হারানোর সামর্থ্য রয়েছে। বাকি তিন ম্যাচে জয়তো নয় বাংলাদেশ যদি কাউকে রুখে দিয়ে ড্র করতে পারে তা হবে বিশাল প্রাপ্তির। এখন ভালো খেলার যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে তা কি কোরিয়া, জাপান বা মালয়েশিয়ার বিপক্ষে জয়। কোনো খেলোয়াড় কিন্তু তিন দলের বিপক্ষে জয়ের কথা বলেননি। কিন্তু ভালো খেলার প্রতিশ্রুতি যখন দেওয়া হচ্ছে তখনতো ধরে নিতে হবে তিন দলের বিপক্ষে কিছু করার আশা করছেন। অবশ্য শুধুমাত্র সিঙ্গাপুরকে হারানোটাই ভালো খেলার মধ্যে পড়ে কিনা তা কে জানে।
অধিনায়ক মামুনুর রহমান চয়ন স্পষ্ট করেই বলেছেন, এবারে গেমসে বাংলাদেশের টার্গেট পাঁচ কিংবা ছয়ে থাকা। গত এশিয়ান গেমসে অবস্থান ছিল আটে। এই লজ্জাকর অবস্থান থেকে মুক্তি পেতে চয়নরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাবেন।
হকিতে কে কোন অবস্থানে থাকবে বলা মুশকিল। তবে টপ ফোরের কথা যদি বলি তাহলে ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া বা জাপানের থাকার কথা। কেননা তারা সেই মানেরই দল। পাঁচ যে বাংলাদেশ থাকতে পারবে না তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। ছয়ও অসম্ভব মনে হচ্ছে। প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে খেলোয়াড়রা আর ভালো খেলার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন কেন? এশিয়াডের জন্য বাংলাদেশ কতটুকু প্রস্তুত তা খেলোয়াড়রাই ভালো বলতে পারবেন। তবে হকি ফেডারেশনের উদ্যোগের প্রশংসা করতে হয়। প্রায় তিন মাস আগে থেকে খেলোয়াড়দের অনুশীলনের নামিয়েছে। ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলিয়েছে। এত প্রস্তুতি এত উদ্যোগ। তবু সংশয় জাগছে গেমসে হকিতে স্মরণকালের বিপর্যয় ঘটবে কিনা? কারণ তিন মাস ধরে প্রস্তুতির পরও ঢাকায় ওয়ার্ল্ড হকি লিগে চয়নরা যে পারফরম্যান্স শো করেছে তা হতাশাজনক বললেও ভুল হবে না। হ্যাঁ, তিন দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত আসরে বাংলাদেশ প্রথম হয়ে পরবর্তী রাউন্ডে জায়গা করে নিলেও শ্রীলঙ্কা ও হংকংয়ের সঙ্গে জিততেই যে ঘাম ঝড়িয়েছে তাতে এশিয়ান গেমসে কি করবে সেই শঙ্কাটাই জেগে উঠেছে। সত্যি বলতে কি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভাগ্যের জোরে জয় পেয়েছে। আর যে হংকংকে নিয়ে লঙ্কানরা আগের দিন ছেলেখেলা খেলেছে। তাদেরকেই হারাতে কিনা চয়নদের হিমশিম খেতে হয়েছে। হয়তোবা ওয়ার্ল্ড হকি লিগ থেকে ভুল শুধরিয়ে এশিয়াডে জ্বলে উঠতে পারে। কিন্তু ঢাকায় যে খেলা দেখিয়েছে তার যদি উন্নয়ন ঘটাতে না পারে তাহলে বাংলাদেশ আগের আট নম্বর অবস্থান ধরে রাখতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কেননা দুই গ্রুপের শীর্ষে থাকা চার দল সেমি ফাইনাল খেলবে। ফাইনালে নিষ্পত্তি হবে স্বর্ণ ও রৌপ্য পদকের। তারপর সেমিতে হারা দুই দলের তামা জিততে লড়াই হবে। চয়নরা শেষ চারে ঠাঁই পাবে তা কেউ আশা করছে না। কিন্তু পজিশন থাকার লড়াইয়ে বাংলাদেশ কতটা কুলিয়ে উঠবে সেটাই প্রশ্ন।
সে হিসেবে বাংলাদেশ যদি জাপান বা মালয়েশিয়াকে পিছনে ফেলে যদি পাঁচ-এ থাকতে পারে তাহলে বাংলাদেশের হকির ইতিহাসে বড় সাফল্য হিসেবেই চিহ্নিত হবে। মাঠের লড়াইয়ে চয়নরা কি করবেন সেটাই এখন অপেক্ষা।