কারও মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছিল না। ড্রেসিং রুমের দরজায় বসে মাঠের দিকে নির্বাক তাকিয়ে রয়েছেন সাকিব আল হাসান। চোখ ছল ছল করছে তামিম ইকবালের। মাশরাফি বিন মর্তুজা যেন বোধশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। হতাশায় অন্য ক্রিকেটাররা যে যার মতো ড্রেসিং রুমে বসে পড়েছেন। কথা তো বলছেই না, ক্রিকেটাররা যেন নড়াচড়াও করছেন না। একটু আগেই যে ‘টস’ নামক এক বিড়ম্বনার ফাঁদে পড়ে আশা-আকাক্সক্ষা, স্বপ্ন-সম্ভাবনা সব ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।
শক্তি, সামর্থ্য, যোগ্যতা, কৌশল- সব দিক থেকেই এগিয়ে থেকেও লঙ্কান এই ‘আনাড়ি’ দলের বিরুদ্ধে টসের মাধ্যমে পরাজয়কে কেউই মেনে নিতে পারছিলেন না। লড়াই করে হারলে তবু একটা সান্ত্বনা থাকে। কিন্তু অদ্ভুত এই ‘কয়েন টসে’ পরাজয়টা বড়ই হৃদয় বিদারক! দুদিন আগে কুয়েতের বিরুদ্ধে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল মালদ্বীপকে। যে কুয়েতের ক্রিকেটাররা ঠিকমতো ব্যাটই ধরতে শিখেনি তারাই কিনা কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে যায়। তারপর মাশরাফিদের কাছে ২০৩ রানের বিশাল ব্যবধানে কুয়েত বুঝতে পেরেছে ‘ক্রিকেট কাকে বলে।’ কাল সেই টস বিড়ম্বনায় পড়তে হলো বাংলাদেশকেও। বৃষ্টি নিয়ে আগে থেকেই আশঙ্কা ছিল। আগের দিন আবহাওয়ার পূর্বাভাস শোনার পর থেকেই একটা অন্যরকম ভয় কাজ করছিল মাশরাফির মনে। কেননা টসে কি হয় তা তো বলা যায় না। এটা সম্পূর্ণ ভাগ্যের ব্যাপার। শেষ পর্যন্ত অধিনায়কের আশঙ্কাই সত্যি হলো। মাশরাফি বলেন, ‘কাল থেকেই আমাদের সবার ভেতরে একটা ভয় ছিল, বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। খেলাটা নাও হতে পারে। সেটাই হলো আর কি।’
কাল যখন বৃষ্টি নামে তখন বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১১ ওভারে ৩ উইকেটে ৫৯ রান। যদিও স্কোর কার্ড দেখে পরিস্থিতি অনুমান করা যাবে না। কেননা তিন উইকেটের পতন ঘটেছিল ৬ রানেই। তারপর ধীরে ধীরে ইনিংসটা মেরামত করেন তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমান। ৫৩ রানের অদম্য এক জুটি। যখন বাংলাদেশের রানের চাকা সচল হচ্ছিল ঠিক তখনই আঘাত হাতে বৃষ্টি। স্থানীয় সময় ২টা ৫০ মিনিটে বৃষ্টি শুরু হয়, থামে ৪টা ১৫ মিনিটে। সঙ্গে সঙ্গেই মাঠ প্রস্তুত করার কাজ শুরু হয়ে যায়। ভারতীয় ম্যাচ রেফারি বেনকাটাপাথি রাজু জানিয়ে দেন, ৫টা ১০-এর মধ্যে মাঠ প্রস্তুত হলে ৫ ওভার খেলা সম্ভব। সাড়ে ৫টা থেকে ৫টা ৫০ মি. হচ্ছে ‘সুপার ওভারে’র জন্য নির্ধারিত সময়। এরপর ‘টস’। মাশরাফি ভেবেছিলেন হয়তো সুপার ওভারেই গড়াতে যাচ্ছে ম্যাচটি। সেভাবে প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু কোনো লাভ হলো না। শেষ পর্যন্ত টসেই নির্ধারিত হলো ভাগ্য। আর তাতে কপাল পুড়ল মাশরাফিদের। স্বর্ণ জেতা হলো না বাংলাদেশের। ম্যাচ শেষে মাশরাফি বলেন, ‘ভাগ্য আমাদের সহায় ছিল না। টস হলে কিছু করার নেই। সবাই হতাশ। কারণ আমরা সবাই আশা করেছিলাম, আমরা ফাইনাল খেলব। কিন্তু হলো না।’
মাশরাফি মনে করেন এত বড় আসরে অবশ্যই একটা রিজার্ভ ডে থাকা উচিত ছিল। তা ছাড়া বড় দলের জন্য টসে হারটা মেনে নেওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে যায়। অধিনায়ক বলেন, ‘যেহেতু নকআউট পদ্ধতি সেহেতু টুর্নামেন্টটা আরেকটু আগে শুরু করে রিজার্ভ ডে রাখা যেত তবে অনেক ভালো হতো। তা ছাড়া কারও কারও জন্য আনফেয়ারও হয়ে যায়। টস করে গেলে কিছুই করার থাকে না।’ এবারের এশিয়ান গেমসটা ক্রিকেটারদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো। মাত্র ৪ রানে পরাজিত হয়ে একটুর জন্য স্বর্ণ হাতছাড়া হয়ে গেছে মেয়েদের। কিন্তু মাশরাফিরা তো ফাইনালেও উঠতে পারলেন না। বৃষ্টির ‘গ্যাড়াকলে’ পড়ে ‘কয়েন টসে’ হারতে হলো। এ কষ্ট আসলেও ভোলার নয়।
শিরোনাম
- কাতার-আমিরাতের পর আকাশসীমা বন্ধ করলো কুয়েত
- উখিয়ায় ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় গুলিতে একজন নিহত
- কুষ্টিয়ায় র্যাবের অভিযানে বিলুপ্তপ্রায় ৬৭ কচ্ছপ উদ্ধার
- কোনোদিন ভোটকেন্দ্রে যায়নি, তারা শেখাচ্ছে কীভাবে ভোট হবে: রনি
- ঝুঁকিতে পোশাকশিল্প
- অর্থনৈতিক সংকট বাড়বে আগামী বছর
- কাতারে মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইরানের হামলার নিন্দা আমিরাতের
- আড়াই কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি ১৩ হাজার টাকায়
- রাজধানীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেত্রী আয়েশা গ্রেফতার
- লন্ডন বৈঠকে নির্বাচনী টানেলে প্রবেশ করেছে দেশ : আমীর খসরু
- বাবা হারালেন পিয়া জান্নাতুল
- ইসরায়েলে হামলায় আরেকটি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করল ইরান
- নাটোরে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাসহ আটক ১৪
- বাংলাদেশে ১ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করবে ইইউ
- ইরান অবশ্যই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না বলে একমত জোট : ন্যাটো প্রধান
- নেতানিয়াহুকে ‘হাঁটু গেড়ে না বসানো’ পর্যন্ত হামলা চলবে: ইরান
- ইরানের বিষয়ে এখনও কূটনীতিতে আগ্রহী ট্রাম্প: হোয়াইট হাউস
- বরগুনায় সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান
- শতভাগ ভোট পড়া কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের তথ্য চেয়ে ইসিতে দুদকের চিঠি
- ঢাকার মশা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
মাশরাফির আক্ষেপ
এ কষ্ট ভোলার নয়
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর