এবারের বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের শুরুটা হয়েছিল স্বপি্নল এক জয় দিয়ে। ফেবারিট ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তিন শতাধিক রান তাড়া করে জিতে বিশ্বকাপে আইরিশরা যেন নতুন এক 'রূপকথা'র জন্ম দিয়েছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছিল। প্রথম দুই ম্যাচে দুই জয় পাওয়ায় আইরিশ ক্রিকেটাররা যেন স্বপ্নে উড়ছিলেন। কিন্তু কাল তাদেরকে 'হ্যাচ্কা' টানে মাটিতে নামিয়ে আনলেন আমলা-প্লেসিসরা। ২০১ রানের বিশাল এক জয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা যেন আয়ারল্যান্ডকে 'ছোট' দল 'বড়' দলের পার্থক্যটাও বুঝিয়ে দিল।
আগের দিন প্রেস কনফারেন্সে আইরিশরা দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে অঘটন ঘটনোর ইঙ্গিত দিয়েছিল। সে আশায় গুঁড়েবালি। উল্টো বিশাল ব্যবধানে হেরে গেল তারা। অবশ্য ক্যানবেরার ম্যানুকা ওভালে প্রথম ইনিংসেই আইরিশদের জয়ের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল। হাশিম আমলা ও ফাফ ডু প্লেসিসের সামনে ভেঙে পড়েছিল তাদের বোলিং লাইন আপ। দুই প্রোটিয়াস তারকা সেঞ্চুরি তো তুলে নিয়েছেনই সেই সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকাকে এনে দিয়েছে ৪১১ রানের বিশাল এক স্কোর। বিশ্বকাপে প্রোটিয়াসদের সর্বোচ্চ স্কোর এটি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। ২০০৭ সালে বারমুডার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ৪১৩ রান করেছিল ভারত। মজার ব্যাপার হচ্ছে আগের ম্যাচেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৪ শতাধিক রান করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সে ম্যাচে দানবীয় রূপে সামনে ছিলেন অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স। এবার আমলা। প্রোটিয়াস ওপেনার গতকাল ১২৮ বলে খেলেছেন ১৫৯ রানের ইনিংস। ১৬টি বাউন্ডারির সঙ্গে চারটি বিশাল ছক্কা। ১০৯ রানের ইনিংস খেলেছেন প্লেসিস। তবে এ ম্যাচে ঝড়ো গতিতে রান তুলেছেন রিলে রুশো। প্রোটিয়া তারকা মাত্র ৩০ বলে খেলেছেন অপরাজিত ৬১ রানের ইনিংস। ডেভিড মিলার মাত্র ২৩ বলে খেলেছেন ৪৬ রানের হার না মানা ইনিংস। আগের ম্যাচের মারকুটে ভিলিয়ার্স এ ম্যাচে ৯ বল খেলে করেছেন ২৪ রান। ৫০ ওভার শেষে চার উইকেটে ৪১১ রান। ৪১২ রানের পাহাড়সম টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৫৮ রানেই ৫ উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। শেষে ৪৫ ওভারে ২১০ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। সর্বোচ্চ ৫৮ রান এসেছে ব্যালবিরনির ব্যাট থেকে। ব্যাটসম্যানদের পর এ ম্যাচে প্রোটিয়াস বোলাররাও দারুণ দাপট দেখিয়েছেন। কাইল অ্যাবট মাত্র ২১ রানে নিয়েছেন চার উইকেট। ৩৪ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন মরনে মরকেল। এছাড়া ডেল স্টেইন তার ১০০তম ম্যাচে নিয়েছেন ২ উইকেট।
চার ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় জয় এটি। দারুণ এই জয়ে ছয় পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে গেছে প্রোটিয়াসরা। ম্যাচ শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ভিলিয়ার্স বলেন, 'পরিকল্পনা কোনো ব্যাপার নয়। আমরা খেলেছি আমাদের মতো করে। দুইটা সেঞ্চুরি হয়েছে। বোলাররা ভালো বোলিং করেছেন। সব মিলে এই পারফরম্যান্সে আমি খুশি।' আইরিশ দলপতি পোর্টারফিল্ড বলেন, 'উইকেট খুবই চমৎকার। কিন্তু আমরা ভালো করতে পারিনি। তাছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা এতো চমৎকার খেলেছে যে কিছু করার নাই। তবে ব্যাটিংয়ে আমরা দ্রুত উইকেট হারানোর জন্য রানটা বেশি হয়নি। সামনের ম্যাচে ভালো করার চেষ্টা থাকবে।'