পেশাদার ফুটবল লিগে দর্শক হয় না। এটা নতুন কোনো ঘটনা নয়। পাঁচ বছর ধরেই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে গ্যালারি থাকছে প্রায় ফাঁকা। শুধু ছোট নয় বড় ম্যাচগুলোতেও তেমনভাবে দর্শকের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। এক সময় মোহামেডান-আবাহনীর ম্যাচ হলে দুপুরেই গ্যালারি ভরে যেত। এখন সেসব স্মৃতিই বলা যায়। ঢাকায় যখন দর্শক হয় না তখন বাফুফে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারত অন্যভাবে। পেশাদার লিগ ঢাকা ছাড়াও অনুষ্ঠিত হবে চট্টগ্রাম-এম এ আজিজ ও গোপালগঞ্জে শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে। চট্টগ্রাম আবাহানী ও মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়াচক্র হোম গ্রাউন্ড হিসেবে দুই ভেন্যুকে বেছে নিয়েছে। এ নিয়ে কারও আপত্তি থাকার কথা নয়। ব্যবস্থাপনা ত্রুটিপূর্ণ বলে ফেনী সকার ফেনী স্টেডিয়ামকে হোম গ্রাউন্ড হিসেবে বেছে নিতে পারেনি। কিন্তু অন্য জেলার দিকে বাফুফে কেন নজর দিল না। তারা কি দেখেনি সিলেট, যশোর ও রাজশাহী স্টেডিয়ামে প্রীতিম্যাচের আয়োজন করে কেমন দর্শকের ঢল নেমেছিল। সিলেটে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এখানেও দর্শকের ঢল নেমেছিল। পেশাদার লিগের জন্য বাফুফে কেন এসব ভেন্যুকে গুরুত্ব দিল না? এ ব্যাপারে ফেডারেশন একটা যুক্তিই দাঁড় করাতে পারে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলতে পারেন, লিগেতো এসব জেলার কোনো দল অংশ নিচ্ছে না। তাই লিগ আয়োজন করব কীভাবে? না, এ কোনো যুক্তি হতে পারে না। বাফুফের উচিত ছিল অন্য ক্লাবগুলোকে সিলেট, যশোর বা রাজশাহীকে হোম ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করার নির্দেশ দিতে। এটা ঠিক ঢাকার ক্লাবগুলো খেলতে রাজি হতো না। কিন্তু ফুটবলের স্বার্থের কথা চিন্তা করে ক্লাবগুলোকে চাপ দেওয়া। ক্লাব না করবে আর বাফুফে রাজি হয়ে যাবে তাতো মানা যায় না। সত্যি কথা বলতে কি পেশাদার লিগের জন্য ক্লাবগুলো প্রচুর অর্থ ব্যয় করছে ঠিকই। কিন্তু শিরোপা জেতা ছাড়া প্রকৃতপক্ষে ফুটবলে কোনো লাভ হচ্ছে না। দর্শক না থাকায় দেশসেরা এ লিগ জমছেই না। চট্টগ্রাম ও গোপালগঞ্জে হাতে গোনা ক'টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এ লিগ আরও জেলাতে ছড়িয়ে দিলে নতুনভাবে প্রাণ ফিরে আসত। ঢাকা ছাড়া দেশের ফুটবলতো অচলই বলা যায়। এখন সিলেট, যশোর, রাজশাহী বা অন্য জেলায় লিগের আয়োজন করলে শুধু দর্শক হতো না এসব এলাকায় ফুটবল জেগে উঠত। একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলে দেখা যাবে দেশে তেমনভাবে ফুটবলারই সৃষ্টি হচ্ছে না। অথচ এক সময় যারা তারকা ফুটবলারের খ্যাতি পেয়েছিলেন তাদের অধিকাংশই আগমন ঘটেছিল ঢাকার বাইরে থেকে। উদাহরণ হিসেবে আসলাম, সালাম মুর্শেদী ও রুমির নাম উল্লেখ করা যায়। আসলে ঢাকার বাইরে এখন নতুন খেলোয়াড়ের সন্ধান মিলবে কীভাবে? দীর্ঘসময় ধরে অনেক জেলায় ফুটবল লিগই অনুষ্ঠিত হয় না। ফুটবলকে জাগিয়ে তুলতে হলে বাফুফেকে অবশ্যই নতুন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।