পেপ গার্ডিওলাকে বরণে ব্যস্ত বার্সেলোনা। ক্লাবের ইতিহাসে কিংবদন্তির এ কোচকে কিভাবে সংবর্ধনা দিয়ে তাক লাগিয়ে দেওয়া যায় এ নিয়েই পরিকল্পনা চলছে। এর মধ্যেও চলছে মেসি-জাভি-ইনিয়েস্তাদের ম্যাচ পরিকল্পনা। এই তিনজনকে বলতে গেলে নিজের হাতে গড়েছেন পেপ গার্ডিওলা। অন্ধকার থেকে নিয়ে এসেছেন আলোয়। আজ ন্যু ক্যাম্পে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের প্রথম লেগ খেলতে বায়ার্ন মিউনিখকে নিয়ে আসছেন পেপ গার্ডিওলা। যাকে একসময় ন্যু ক্যাম্পের ডাগ-আউটে দাঁড়িয়ে মেসিদের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনা দিতে দেখা যেত। সেই গার্ডিওলা আজও ন্যু ক্যাম্পের ডাগ-আউটে দাঁড়িয়ে দিক নির্দেশনা দিবেন। তবে আজ তা হবে মেসিদের ঘায়েল করার নির্দেশনা। নিয়তি কি নিষ্ঠুর ভূমিকাই না পালন করতে বাধ্য করে! আজ মেসিদেরও তো গুরুকে পরাজিত করার মন্ত্র জপেই মাঠে নামতে হবে!
একসময় বার্সেলোনার মিডফিল্ড নিয়ন্ত্রণ করতেন গার্ডিওলা-এনরিকে। দুজনের জুটি অনেক ম্যাচেই বার্সেলোনাকে উদ্ধার করেছে। এনে দিয়েছে সফলতা। কোচ হিসেবেও দুজন সফল। একজন বার্সেলোনায় স্বর্ণাক্ষরে একটা যুগ লিখে গেছেন। আরেকজনের সবে শুরু। তবে কোচ হিসেবে দুজনের বেড়ে উঠাটাও প্রায় একই সঙ্গে একই ক্লাবে। পেপ গার্ডিওলা যখন মেসিদের নিয়ে একের পর এক জয়ের পথে ছুটছেন তখন পিছন থেকে বার্সেলোনা বি টিমকে গড়ে তুলছিলেন লুইস এনরিকে। এ কারণেই হয়ত দুজনের ফুটবলীয় দর্শনেও অনেক মিল খুঁজে পাওয়া যায়। আজ বার্সেলোনা ও বায়ার্ন মিউনিখ যখন মুখোমুখি হবে দেখা যাবে, দুটো দলই পরস্পরকে খুব ভালোভাবেই জানে। একে অপরের কৌশল সম্পর্কে ধারণা আছে দুটো দলেরই। বায়ার্ন মিউনিখ যেমন অলআউট অ্যাটাকে যেতে পারে তেমনি বার্সেলোনাও। আবার দুটো দলই নিজেদের ডিফেন্স লাইন ধরে রাখতে পারে চরম মুহূর্তেও। তবে আজ বায়ার্ন মিউনিখ কিছুটা দুর্বলতা নিয়েই মাঠে নামছে। ইনজুরি আক্রান্ত রিবেরি নেই দলে। এমনকি রবার্ট লিওয়ান্দোভস্কিও তেমন একটা ফিট নন।
এতকিছুর পরও লিওনেল মেসি ম্যাচটাকে ফাইনালের আগে ফাইনাল বলেই স্বীকার করলেন। তিনি গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'এটা সেমিফাইনাল হলেও আমাদের কাছে ফাইনালের মতোই। আমরা কয়েক বছর আগেও এই স্টেজে বায়ার্নের কাছে হেরেছি। তবে এবারের দলটা সম্পূর্ণ আলাদা।' মেসি গুরু গার্ডিওলাকে কোনো ছাড় দিতে রাজি নন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনা-বায়ার্ন ছয়বার মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একবারই জিতেছে বার্সেলোনা। চার বার জিতেছে বায়ার্ন মিউনিখ। এক ম্যাচে ড্র করেছে দুই দল। অতীতের এই পরিসংখ্যান বায়ার্ন মিউনিখকে এগিয়ে রাখলেও পেপ গার্ডিওলা বেশ কিছুদিন আগেই বলে দিয়েছেন, সেমিফাইনালে বার্সেলোনাই ফেবারিট। দেখা যাক, গার্ডিওলার কথা সত্য করে মেসিরা সত্যিই বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে দেয় কি না! দুই মৌসুম আগে সেমিফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৭-০ ব্যবধানে (৪-০ ও ৩-০) পরাজয়ের দুঃসহ স্মৃতি তো এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় মেসিদের!