প্রথম ওয়ানডেতে মুশফিকুর রহিমকে কিপিং করতে দেখে বিস্ময়ে চোখ ছানাবড়া হয়ে গিয়েছিল ভারতীয় মিডিয়াকর্মীদের। কোনোভাবেই তাদের মাথায় আসেনি কেন কিপিং করছেন মুশফিক? শুধু ভারতীয় মিডিয়া কর্মীরাই নন, বিস্মিত হয়েছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরাও। বৃদ্ধাঙ্গুলীর সমস্যায় যিনি ফতুল্লা টেস্টে কিপিং করেননি, সেই মুশফিক কিভাবে কিপিং করেন? ৭৯ রানে ভারতকে হারানোয় টেস্ট অধিনায়ককে কিপিং করানোর সমালোচনায় পড়তে হয়নি টিম ম্যানেজমেন্টকে। সমালোচনার তরবারিতে এফোর-ওফোর হতে হয়নি মুশফিককেও। দুই দুটি ক্যাচ মিস করেন। কিন্তু ধরেন পাঁচ ক্যাচ। কাল মুশফিক খেলেছেন। কিন্তু কিপিং আর করা হয়নি। তার জায়গায় কিপিং করেন দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা লিটন কুমার দাস। ২০০৬ সালে হারারেতে অভিষেক ওয়ানডেতে মুশফিক খেলেছিলেন একজন স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে। ওই ম্যাচে কিপিং করেছিলেন খালেদ মাসুদ পাইলট। একই বছরের ডিসেম্বরে ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মুশফিক খেলেন কিপার হয়ে। ৯ বছর পর লিটন অভিষেক ম্যাচ খেলেন স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে। অভিষেক ম্যাচে স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে খেললেও ৯ বছর আগে ব্যাটিং করেননি মুশফিক। লিটন অভিষেক ম্যাচে ব্যাটিং করে ওয়ান ডাউনে। ৮ রানের বেশি করতে পারেননি। কাল কিপার হিসেবে খেলতে নেমে লিটন ক্যাচ নেন ৩টি। বেশ অনেকদিন ধরেই বিষয়টি আলোচিত হচ্ছিল। মুশফিক যেন কিপিং ছেড়ে ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেন। ক্রিকেট বোর্ডের বক্তব্য, এতে অনেকটা চাপমুক্ত খেলতে পারবেন দেশসেরা এ ব্যাটসম্যান। কিন্তু কোনো এক আশঙ্কায় রাজি হচ্ছিলেন না মুশফিক। পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগেই কিপিং করেন এবং ক্যাচ মিসও করেন। জোর করে গ্লাভস হাতে নামায় রানও পাচ্ছিলেন না মুশফিক। বিশেষ করে টেস্টে টানা পাঁচ ইনিংসে কোনো বড় স্কোর নেই দেশসেরা এ ব্যাটসমানের। তারপরও প্রথম ওয়ানডেতে ব্যথা নিয়েই কিপিং করেন। তার আগে অবশ্য ব্যাটিংয়ে রান করেন ২। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৫ ক্যাচ নিয়ে মুশফিক স্পর্শ করেন সাবেক অধিনায়ক পাইলটকে। প্রথম ওয়ানডের আগে মুশফিক কিপিং করবেন কি না, প্রশ্নোত্তোরে টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বলেছিলেন, 'মুশফিক দেশের সেরা ব্যাটসম্যান। ৮ বছর ধরে নিয়মিত কিপিং করছেন। তার হাতে ব্যথা রয়েছে। কিপিং করবেন কি না, এটা তার উপর নির্ভর করছে।' মাশরাফি নেতিবাচক কিছু বলেননি। কিন্তু মুশফিক খেলেন এবং কিপিং করে রেকর্ড গড়েন। তখন মনে হয়েছিল দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হয়তো কিপিং করতেও পারেন। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্ট ঝুঁকি নেননি। গ্লাভস হাতে দাঁড় করিয়ে দেন লিটনকে। টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক প্রমাণিত করেন লিটন তিন ক্যাচ নিয়ে। মুশফিক ক্যারিয়ারের অভিষেক ম্যাচে কিপিং করেননি। ১৫১ নম্বর ওয়ানডে খেলে ১২০ ক্যাচ ও ৩৭টি স্ট্যাম্পিং করেন মুশফিক। দেড়শর উপর ম্যাচ খেলা মুশফিক এখন পর্যন্ত ১০ বার গ্লাভস হাতে দাঁড়াননি। ২০১০ সালে প্রথম ইনজুরিতে পরে আয়ারল্যান্ডের সিরিজে কিপিং করেননি। ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কা সিরিজে এবং একই বছর এশিয়া কাপে কিপিং করেননি মুশফিক। কাল তার কিপিং না করানো যুক্তিতে এক নির্বাচক বলেন, 'তার আঙুলে এখনো ব্যথা রয়েছে। আগের ম্যাচে পাঁচ ক্যাচ নিলেও দেখে মনে হয়েছে আত্মবিশ্বাসে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে তার।' পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনা টেস্টে রুবেলের বল ধরার সময় আঙুলে আঘাত পান।