চলতি মাসেই সুপ্রিম কোর্টের গঠিত 'লোধা কমিশনের' রায়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ষষ্ঠ আসরে দুর্নীতি প্রমাণিত হয়েছে। ফলে আজীবন নিষিদ্ধ হয়েছেন চেন্নাই সুপারকিংসের অন্যতম উদ্যোক্তা, এন শ্রীনিবাসনের জামাতা গুরুনাথ মায়াপ্পন ও রাজস্থান রয়্যালসের কর্তা রাজ কুন্দ্রা। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুই বছরের জন্য আইপিএল থেকে বহিষ্কারাদেশ পেয়েছে চেন্নাই সুপারকিংস ও রাজস্থান রয়্যালসের মতো প্রভাবশালী দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি। কিন্তু গতকাল দিল্লির পাতিয়ালা আদালত যে রায় দিয়েছে, তাতে প্রশ্ন উঠেছে, একই অভিযোগের পরিণতি দুটো ভিন্ন জায়গায় ভিন্ন হয় কীভাবে? স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে দুই বছর আগে দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া রাজস্থান রয়্যালসের তিন ক্রিকেটার শান্তাকুমারন শ্রীশান্ত, অজিত চাণ্ডিলা ও অঙ্কিত চাভানকে যাবতীয় অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছে ওই আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের নিয়ে গঠিত লোধা কমিশন সঠিক, নাকি দিল্লি পুলিশ সঠিক। লোধা কমিশনের হাতে যদি মায়াপ্পন কিংবা রাজ কুন্দ্রাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে থাকে, তাহলে দুই বছর আগে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেও শ্রীশান্তদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ কেন হাজির করতে পারল না দিল্লি পুলিশ? পুরো বিষয়টিই হাস্যকর ঠেকছে ভারতীয় ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টদের কাছে। হাস্যাস্পদ হয়ে পড়ছে দিল্লি পুলিশের কার্যক্রমও।
পাতিয়ালা আদালতই জানিয়েছে শ্রীশান্ত, চাণ্ডিলা ও চাভানকে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে দুই বছর আগে গ্রেপ্তার করলেও এই তিন ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে স্পট ফিক্সিংয়ের কোনো শক্ত প্রমাণ হাজির করতে পারেনি দিল্লি পুলিশ। আর প্রমাণ না থাকায় এই তিন ক্রিকেটারকে যাবতীয় অভিযোগ থেকে মুক্তি না দেওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পায়নি আদালত।
শ্রীশান্ত অবশ্য আদালতের এই রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করে খুব দ্রুত ক্রিকেটে ফিরতে চেয়েছেন। কিন্তু শ্রীশান্তের এই ইচ্ছার প্রতিফলন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ঘটাবে না সেটা বলে দেওয়াই যায়। কারণ এই রায়ে খুশি নয় ক্রিকেট বোর্ডও। আদালতে দাঁড়িয়ে শ্রীশান্ত যতই ক্রিকেটে ফেরার কথা বলুন, ভারতীয় বোর্ড নাকি তার নিষেধাজ্ঞা তুলবে না বলেই পণ করেছে। বোর্ড জানিয়ে দিয়েছে, বোর্ডের নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে ফৌজদারি দণ্ডবিধির কোনোই সম্পর্ক নেই। বোর্ড শ্রীশান্তসহ তিন ক্রিকেটারকে শাস্তি দিয়েছে তাদের নিজস্ব আইন মেনে। এই মুহূর্তে তারা ভাবছে শ্রীশন্তের ক্রিকেটে ফেরা ঠেকাতে উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেওয়ার কথাও। পুরো বিষয়টি নিয়েই বিব্রত ভারতীয় ক্রিকেট মহল। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
বিডি-প্রতিদিন/২৬ জুলাই ২০১৫/শরীফ