চট্টগ্রামে কি অবিশ্বাস্য ক্রিকেট খেলেছে বাংলাদেশ? না, ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলার ফল পেয়েছে? ক্রিকেটপ্রেমীরা দুটোই বলবেন। বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দাপুটে ক্রিকেট খেলে টেস্ট ড্র করেছে টাইগাররা। এই আত্মবিশ্বাসী ক্রিকেট খেলা আবার গত এক বছরের ধারাবাহিকতারই ফল। চট্টগ্রাম টেস্টে ব্যাটসম্যান ও বোলাররা যে ইতিবাচক ক্রিকেট খেলেন, সেটা ধরে রাখতে চান ঢাকা টেস্টেও। কাল বৃষ্টিস্নাত দিনে অনুশীলনের ফাঁকে পজিটিভ ক্রিকেট খেলার কথাই বললেন বাঁ হাতি ওপেনার ইমরুল কায়েশ।
চট্টগ্রামে মুশফিকবাহিনী রেখেছিল ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বপ্নকে সঙ্গী করে। দুরন্ত ক্রিকেট খেলে পুরণ করে সেই স্বপ্ন। নিশ্চিত করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। আত্মবিশ্বাসকে টেনে নিয়ে যায় আকাশে। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই খেলতে নামে টেস্টে । চতুর্থ ও পঞ্চম দিন বৃস্টিতে খেলা না হলেও আধিপত্যের চালকে বসা ছিল টাইগাররাই। ব্যাটিং ও বোলিংয়ে আধিপত্য বিস্তার করে প্রথমবার টেস্ট জয়ের আসা জাগিয়ে তোলে। যদিও বৃষ্টির সঙ্গে না পাড়ায় শেষ পর্যন্ত্ত ড্র নিয়ে ফিরতে হয়েছে ঢাকায়। ড্রয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে মিরপুরে শেষ টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে যে ইতিবাচক টেস্ট খেলেছেন তামিম, মুস্তাফিজরা, সেটা ঢাকাতেও রয়ে রাখার কথা বলেন বাঁ হাতি ওপেনার ইমরুল, 'আগেই বলেছি, যদি ঢাকাতে ড্র করতে পারি, সেটা হবে আমাদের অনেক বড় অর্জন। চট্টগ্রামে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে আমরা পজিটিভ ক্রিকেট খেলেছি। বৃস্টি বাঁধা হলেও আমরা পজিটিভ ছিলাম। আমরা সইে পজিটিভ ভাবটাই ধরে রাখতে চাই। আমরা যদি পরিকল্পিত ক্রিকেটটা খেলতে পারি, তাহলে ঢাকাতেও ভালো কিছুর স্বপ্ন দেখতে পারি।'
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে ২৬ রানের ইনিংস খেলেন। ২৩ টেস্টে ১২২২ রান করা ইমরুল কিন্তু ততটা উজ্জ্বল নন প্রোটিয়াদের বিপক্ষে। ৩ টেস্টে তার রান মাত্র ৫১। শেষ ইনিংসে ২৬। মিরপুরে এবার ভালো করার চেস্টা থাকবে বলেন বাঁ হাতি ওপেনার, 'ওপেনার হিসেবে আমার সবসময় চেস্টা থাকে যতক্ষন পর্যন্ত পারি উইকেটে থাকতে। যাতে পরের ব্যাটসম্যানরা সহজে খেলতে পারেন। বলের উজ্জ্বলতা নষ্ট করাই ওপেনারদের ব্যাসিক কাজ।' ওপেনার হিসেবে নিজের পরিকল্পনা নিয়ে বলেন, 'অবশ্যই আমার একটি পরিকল্পনা রয়েছে। তবে পরিকল্পনা করতে হয় উইকেট দেখে। একটি বিষয় হচ্ছে চট্টগ্রাম এবং ঢাকার উইকেট ভিন্ন ধরনের। ম্যাচের সময় কন্ডিশন কেমন থাকে, সেটার উপর নির্ভর করবে পরিকল্পনা সাজানো।'
বাংলাদেশ ইতিবাচক টেস্ট খেলতে চাইছে। কিন্তু কাজটি সহজ হবে না। ওয়ানডে সিরিজ হার এবং চট্টগ্রাম টেস্ট ড্র হওয়ায় ক্ষুধার্ত হাশিম আমলারা। প্রোটিয়ারা যে ছেড়ে কথা কইবে না, সেটা বেশ ভালোভাবেই জানেন ইমরুল, 'বাংলাদেশ সফরে এসে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছে না দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে সিরিজ হেরে তারা জয়ের জন্য মড়িয়া, ক্ষুধার্ত।'
ভারতের বিপক্ষে অভিষেক ইনিংসে স্ট্রোকের ফুলঝুড়ি ছুটিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের মুগ্ধ করেন লিটন দাস। চট্টগ্রামে, দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নেমে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। সেই লিটনের ভবিষ্যত উজ্জ্বল বলে মনে করেন ইমরুল, 'কোচ আমাদের প্রত্যেক খেলোয়াড়দের স্বাধীনতা দেন। কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বরংকে সবাইকে নিজ নিজ খেলা খেলতে উৎসাহিত করেন। লিটন খুব ভালো ক্রিকেটার। ওর ভবিষ্যত খুবই উজ্জ্বল। এখন যেরকম ব্যাটিং করে সে, এটা যদি ধরে রাখতে পারেন, তাহলে অনেক উপরে যাবেন।'
মিরপুরে টেস্ট খেলতে নামছে চট্টগ্রামের আত্মবিশ্বাস নিয়ে। চট্টগ্রাম আত্মবিশ্বাস যোগাবে। কিন্তু পরিসংখ্যান পিছু টানতে পারে। ৯ টেস্টের আটটিতেই হেরেছে টাইগাররা। যার সাতটি আবার ইনিংস হার এবং একটি উইকেটের ব্যবধানে। সেটা এই ঢাকাতেই, ২০০৮ সালে।