বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়ছে না বিগ বাজেটের টিম শেখ রাসেলের। শক্তিশালী দল গঠন করেও কখনো ভাগ্য সহায়তা না থাকায়, কখনো বা বিতর্কিত রেফারিংয়ের শিকার হচ্ছে দেশ সেরা তারকা খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া শেখ রাসেল।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে টিম বিজিএমসি বিরুদ্ধে ম্যাচ জুড়েই আধিপত্য ছিল শেখ রাসেলের। গতিময় নান্দনিক ফুটবল খেলে দর্শকদের মাতিয়ে রাখে। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, শেষ মুহূর্তের বিজিএমসি দেয়া গোলে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে শেখ রাসেল। এ ম্যাচে বাজে রেফারিং এবং দুর্ভাগ্যের শিকার হয় শেখ রাসেল।
এদিন, ম্যাচের শুরু থেকে গতিময় ফুটবল খেলতে থাকে শেখ রাসেল। ছদ্মময় ফুটবল খেলে আক্রমণের ফোয়ারা বয়ে দেয় বিজিএমসি রক্ষণভাগে। বিপরীতে অনেক শরীরিক শক্তি প্রদর্শন করে খেলতে থাকে বিজিএমসি। ম্যাচে ৭ মিনিটে একটি সংঘবদ্ধ আক্রমণ থেকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আসে শেখ রাসেলের। ইকাঙ্গার মাটি কামড়ানো শট সাইড বারের পাশ দিয়ে বাইরে চলে যায়। ১১ মিনিটে শেখ রাসেলের খেলোয়াড়ের বাড়ানো বল হাত লাগে বিজিএমসি’র রক্ষণভাগের খেলোয়াড় খান মো. তারার। কিন্তু রেফারি বিষয়টি এড়িয়ে যায়। পরের মিনিটে শেখ রাসেলের সংঘবদ্ধ আক্রমণ। কিন্তু এবার সেই আক্রমণ অফ সাইডের পতাকা তুলে নস্যাৎ করে দেয় সহকারি রেফারি। ২১ মিনিটে আরেক দফা এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আসে শেখ রাসেলের। সতীর্থের ক্রস থেকে ডি বক্সের মধ্যেই বল পেয়ে গোল করতে পারেননি হাইতির খেলোয়াড় সাবাস্টিয়ান থুরিরে। ৪৪ মিনিটে আবার শেখ রাসেলের সুযোগ। তাদের বঞ্চিত করল ভাগ্য। রাজুর কর্নার থেকে ডি বক্সের মধ্যে বল পেয়ে যায় শেখ রাসেলের একাধিক খেলোয়াড়। বল পেয়ে একাধিক গোলবারে শটও নেন। কিন্তু প্রত্যেকবার বিজিএমসি’র রক্ষণ ভাগের খেলোয়াড়দের গায়ে লেগে প্রতিহত হয় বল। ভাগ্য অনুকূলে না থাকায় তাই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে এগিয়ে যাওয়া হয়নি শেখ রাসেলে।
বিরতির পর ৫১ মিনিটে আবারও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আসে শেখ রাসেলের। কিন্তু আবার বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় বিজিএমসি’র গোলরক্ষক হিমেলে। শেখ রাসেলের নেয়া দুরপাল্লার একটি জোরালো শট রুখে দিয়ে শেখ রাসেলকে বঞ্চিত করে হিমেল। ৫৭ মিনিটে ইকাঙ্গাকে ডি বক্সের মধ্যে ফেলে দিলেও বাঁশি বাঁজাননি রেফারি ভুবন মোহন। ৭১ মিনিটে শেখ রাসেল সমর্থকদের আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন ইকাঙ্গা। প্রায় মাঝ মাঠ থেকে দুরপাল্লার শট নেন সাবাস্টিয়ান থুরিরে। কিন্তু তার নেয়া শট রুখে দিলেও তা চলে আসে ইকাঙ্গার পায়ে। তিনি এবার গোল করতে ভুল করেননি। আলতো পায়ে ঠেলে দর্শকদের আনন্দে ভাসান।
ম্যাচের শেষ মুহূতে শেখ রাসেলে গোলরক্ষক ও ডিফেন্ডারের ভুলে সমতায় ফেরে বিজিএমসি। দু'জনের ভুলে বিজিএমসি’র সাহেদ গোল করে সমতায় ফেরায়। এরপরই ঘটে টুর্নামেন্টের লজ্জাকর একটি ঘটনা। একটি সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে চতুর্থ রেফারি জিএমসি নয়নকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে বিজিএমসি’র টিম ম্যানেজার আরিফুল হক চৌধুরী লিওন। এ সময় তিনি রেফারিকে ধাক্কাও দেন। পরে অন্যান্য অফিসিয়ালকে এসে তাকে নিবৃত্ত করেন।
ম্যাচ শেষে শেখ রাসেলের কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘রেফারি একটি নিশ্চিত পেলান্টি দেয়নি। অনেক সিদ্ধান্ত আমাদের বিপক্ষে গেছে। সিদ্ধান্তগুলো নিরপক্ষ হলে জয় আমাদের পক্ষেই আসত। এ ধরণের রেফারিং অবশ্যই দুঃখজনক।’
বিডি-প্রতিদিন/২২ নভেম্বর, ২০১৬/মাহবুব