প্রোটিয়া অধিনায়ক ডু প্লেসিসকে বল টেম্পারিংয়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে জরিমানা গুনতে হয়েছে। এই নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা মিলিয়ে এমনিতেই প্রবল চাপে ছিলেন তিনি। তৃতীয় টেস্টে টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় তাকে ব্যাটিংয়েও নামতে হলো দ্রুত। মাঠে নামতেই তাকে স্বাগত জানানো হলো দুয়ো দিয়ে। ব্যাট হাতেই সবকিছুর জবাব দিলেন ডু প্লেসিস। দেখিয়ে দিলেন, প্রতিকূলতাকে কিভাবে পরিণত করতে হয় প্রশংসায়।
সেঞ্চুরি ছুঁয়ে যখন ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন ফাফ দু প্লেসি, দাঁড়িয়ে গেল তখন গোটা অ্যাডিলেড ওভালের গ্যালারি। খানিক পর প্রোটিয়া অধিনায়ক উপহার দিলেন দারুণ এক চমক। অ্যাডিলেডে দিবারাত্রির টেস্টের প্রথম দিনে ৯ উইকেটে ২৫৯ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
গোলাপি বলের সুইংয়ে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছেন জস হেইজেলউড ও মিচেল স্টার্ক। পার্থের দুই সেঞ্চুরিয়ান ডিন এলগার ও জেপি দুমিনি, পুরো সিরিজে বিবর্ণ হাশিম আমলা, তিন জনই ফেরেন ৫ রান করে। ডু প্লেসিস যখন নামেন তখন দলের রান ৩ উইকেটে ৪৪।
ওপেনার স্টিভেন কুককে নিয়ে বিপর্যয়টা সাময়িক সামাল দেন দু প্লেসি। কুককে ৪০ রানে ফিরিয়ে ৫১ রানের জুটি ভাঙেন স্টার্ক। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা কুইন্টন ডি কককে ফেরান হেইজেলউড। দলে ফেরা জ্যাকসন বার্ড ফিরিয়ে দেন ফর্মে থাকা আরেক ব্যাটসম্যান টেম্বা বাভুমাকে। ১৬১ রানে দক্ষিণ আফ্রিকা হারায় ৭ উইকেট।
দু প্লেসি ছিলেন অবিচল। অষ্টম উইকেটে কাইল অ্যাবটকে নিয়ে গড়েন ৫৪ রানের জুটি। ১৪৭ বলে স্পর্শ করেন ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরি। পেরিয়ে যান দুই হাজার রানের মাইলফলকও। শেষ উইকেটে তাবরাইজ শামসিকে নিয়ে ৩৯ রানের জুটিতে গড়েন। তারপর হুট করেই ইনিংস ঘোষণা দেন। দু প্লেসি অপরাজিত ছিলেন ১১৮ রানে।
কৃত্রিম আলোয় শেষ কয়েক ওভার অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের পরীক্ষা নেওয়ার ভাবনা ছিল। দু প্লেসির সিদ্ধান্তে প্রভাবক ছিল আরেকটি ব্যাপারও। চোট নিয়ে তখন মাঠের বাইরে ডেভিড ওয়ার্নার। মানে তখনই ব্যাটিংয়ে নামতে পারবেন না। অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডারে আঘাত হানার সুবর্ণ সুযোগ।
অভিষিক্ত ম্যাথিউ রেনশ আর উসমান খাওয়াজা অবশ্য বিপদ ঘটতে দেননি। প্রোটিয়া বোলাররা চেষ্টা করেছেন, তবে দুই ব্যাটসম্যান পড়ে থাকেন দাঁত কামড়ে। ব্যাটে প্রথম রানের দেখা পেতেই লেগে যায় ৩৮ বল! ১৯ বলে প্রথম রানের দেখা পান রেনশ। দু প্লেসির দিনে শেষটা অস্ট্রেলিয়া করেছে স্বস্তিতেই।
বিডি-প্রতিদিন/২৫ নভেম্বর, ২০১৬/তাফসীর-৫