ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের দেওয়া চির নির্বাসনের বিরুদ্ধে দেশটির সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করে এবার নিজেই চাপে পড়ে গেলেন প্রাক্তন ভারতীয় পেসার এস শ্রীশান্ত। ২০১৩ সালের আইপিএলের সময় তাঁকে যে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তা তখনই কেন তিনি ভারতীয় বোর্ডকে জানাননি, সেই প্রশ্ন তুললেন বিচারপতিরা।
এই কলঙ্কিত অধ্যায়ে শ্রীশান্তের ভূমিকা নিয়েও যে মোটেই সন্তুষ্ট নয় আদালত, তাও তাঁদের পর্বেক্ষণে জানিয়েছেন বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি কেএম জোসেফ। যার জেরে এই বিতর্কিত বোলার কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়েছেন।
প্রাক্তন ভারতীয় পেসারের হয়ে বুধবার আদালতে হাজির হন করেন আইনজীবী সালমান খুরশিদ। তিনি দাবি করেন, ২০১৩ সালের আইপিএলে শ্রীশান্তের বিরুদ্ধে যে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ উঠেছিল, সংশ্লিষ্ট সেই ম্যাচে আদৌ কোন ফিক্সিং হয়েছিল কি না, বা সেই ঘটনায় জড়িত থাকার জন্য তাঁর মক্কেল কোন টাকা পেয়েছিলেন কি না, তার যথেষ্ট কোন প্রমাণ নেই। খুরশিদের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই বিচারপতিদের দিক থেকে প্রশ্ন উঠে আসে, ‘‘তাহলে কেন এই ঘটনার কথা বোর্ডকে সঙ্গে সঙ্গে জানালেন না (শ্রীশান্ত)?’’
বিচারপতিদের এই প্রশ্নের উত্তরে শ্রীশান্তের আইনজীবী বলেন, ‘‘তা না করে হয়তো শ্রীশান্ত অন্যায় করেছেন। কিন্তু এই অন্যায়ের শাস্তি পাঁচ বছরের বেশি নির্বাসন হতে পারে না।’’ এবং তখনই বিচারপতিরা মন্তব্য করেন, ‘‘শ্রীশান্তের আচরণ এ ক্ষেত্রে মোটেই ঠিক হয়নি।’’ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের পেসারের চির নির্বাসনের বিরুদ্ধে যুক্তি দিতে গিয়ে মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের শাস্তির প্রসঙ্গও টেনে আনেন সালমান খুরশিদ। ২০০০ সালে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে আজহারকে সারা জীবনের জন্য নির্বাসন দিয়েছিল বোর্ড। কিন্তু ২০১২ সালের নভেম্বরে অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, বোর্ডের এই শাস্তি আইনসম্মত নয়।
এই যুক্তি দেওয়ার পরে শ্রীশান্ত আবেদনে বলেন, ‘‘আমার ক্রিকেট জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অন্তত ভারতের বাইরে আমাকে খেলতে দেওয়া হোক। প্রতি বছরই বিদেশে খেলার প্রস্তাব আসে আমার কাছে।’’ আইনজীবীর মাধ্যমে শ্রীশান্ত আদালতকে আরও বলেছেন, ‘‘আমি যদি দোষ স্বীকার না করি, তা হলে পুলিশ আমার পরিবারের উপরে অত্যাচার করবে, এই বলে হুমকি দিয়েছিল।’’
নির্বাসনের শাস্তির বিরুদ্ধে বরাবরই শ্রীশান্তের বক্তব্য ছিল, ফিক্সিংয়ে তাঁর জড়িত থাকার কোন প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও তাঁকে গুরুতর শাস্তি দিয়েছে বোর্ড।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ