করোনা যেন কচ্ছপের কামড়ের মতো পৃথিবীকে আঁকড়ে ধরে বদলে দিয়েছে। পরিবর্তন নিয়ে এসেছে পুরনো ধারার চাকরির বাজারে। ফ্রিল্যান্সিংকে অনেকে এখন জীবিকার প্রধান পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছে। অনেকের কাছে এটি এখন চাকরির পাশাপাশি আয় বাড়ানোর একটা উৎস।
ফ্রিল্যান্সিং কী?
ফ্রিল্যান্সিং মূলত এমন একটি পেশা যেখানে আপনাকে নির্দিষ্ট অফিসে গিয়ে ঘড়ির কাটায় বন্দি থাকতে হবে না। এ পেশায় আপনি পৃথিবীর যে কোনো জায়গায় বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডেডলাইনের মধ্যে থেকে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ধরাবাধা সময়ের বাইরে থেকে।
ফ্রিল্যান্সিং কাদের জন্য?
আপনি যে বয়সেরই হন না কেন আপনার যদি নির্দিষ্ট কোনো দক্ষতায় পারদর্শিতা থাকে তবে আপনিও ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে পারবেন। চলুন কিছু জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং দক্ষতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
যেভাবে আয় হয়
ফ্রিল্যান্সিংয়ে দুভাবে আয় হয়। একটি অ্যাকটিভ আর্নিং। এটি হচ্ছে সরাসরি গ্রাহকের সঙ্গে কাজ করে আয় করা। আরেকটি প্যাসিভ বা পরোক্ষ আয়। এটি হচ্ছে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস থেকে কাজ করে আয় করা।
ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট
ডিজিটাল যুগের ক্রমবর্ধমান গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে প্রতিটি ব্যবসারই প্রয়োজন একটি ওয়েবসাইট। আর এই ওয়েবসাইট তৈরির জন্য প্রয়োজন হয় একজন ওয়েব ডিজাইনারের। একজন ওয়েব ডিজাইনার হয়ে উঠার জন্য প্রয়োজন এইচটিএমএল/সিএসএস/জাভাস্ক্রিপ্টের মতো কোডিং ভাষায় পারদর্শিতা। পাশাপাশি ইউ-আই/ইউ-এক্স ডিজাইন জ্ঞান আপনাকে অন্য সবার থেকে এগিয়ে রাখবে।
কন্টেন্ট এবং কপিরাইটিং
আপনার মধ্যে যদি সৃজনশীল স্পর্শে লেখালেখির মাধ্যমে আকর্ষণীয় গল্প তৈরি করার ক্ষমতা থাকে তবে কনটেন্ট এবং কপিরাইটিং হতে পারে আপনার পছন্দের ফ্রিল্যান্সিং পেশা। প্রতিটি ব্যবসাই সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে নিজেদের অবস্থান বাড়ানোর জন্য তৈরি করে কন্টেন্ট। একজন কন্টেন্ট এবং কপিরাইটিং রাইটার হওয়ার জন্য আপনার সংক্ষেপে গুছিয়ে লেখার দক্ষতার পাশাপাশি প্রয়োজন এসইও অপ্টিমাইজেশন এবং ওয়েব অ্যানালিটিক্স সম্পর্কে ধারণা রাখা।
গ্রাফিক ডিজাইন
২০২৩ সালের সবচেয়ে জনপ্রিয় দক্ষতাগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে গ্রাফিক্স ডিজাইন। প্রতিটি ব্যবসারই প্রচারের জন্য আকর্ষণীয় ও প্রীতিকর ভিজ্যুয়ালের প্রয়োজন হয়। এ ভিজ্যুয়ালগুলো তৈরির জন্য গ্রাফিক ডিজাইনারদের অবশ্যই কম্পোজিশন, কালার থিউরি, টাইপোগ্রাফি এবং ইলাস্ট্রেশনে শক্তিশালী দক্ষতা থাকতে হবে।
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট
এই দক্ষতাটির চাহিদা সবসময়ই থাকা সত্ত্বেও করোনা মহামারির পর থেকে এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা তাদের মূল্যবান সময় বাঁচাতে এই দক্ষতার পেশাদারদের কাজে নিয়ে থাকে। এ দক্ষতায় পারদর্শী হতে হলে আপনাকে ক্যালেন্ডার পরিচালনা, ডেটা এন্ট্রি, গ্রাহক পরিষেবার পাশাপাশি অবশ্যই শক্তিশালী সাংগঠনিক, যোগাযোগ এবং মাল্টিটাস্কিং দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
অ্যাকাউন্টিং এবং বুককিপিং
২০২৩ সালে বাংলাদেশে সবচেয়ে হয়ে ওঠা ফ্রিল্যান্সিং দক্ষতাগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে অ্যাকাউন্টিং বুককিপিং। প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে তাদের আর্থিক হিসাবগুলো সংগ্রহে রাখার জন্য এই দক্ষতাটির চাহিদা প্রচুর। এ দক্ষতায় পারদর্শী হতে হলে আপনাকে অ্যাকাউন্টিং নীতিগুলো সম্পর্কে একটি গভীর ধারণা রাখার পাশাপাশি শক্তিশালী বিশ্লেষণাত্মক ও সমস্যা সমাধানের মানসিকতা এবং যোগাযোগে দক্ষ হতে হবে।