বুধবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

পুজোয় সৌন্দর্যচর্চা

পুজোয় সৌন্দর্যচর্চা

► ছবি : বায়োজিন

শারদীয় উৎসবের সাজ। তোড়জোড় তো থাকবেই। পুজোর কয়টা দিন সবাই চায় নিজেকে সুন্দর দেখাতে। তবে এজন্য শুধু শাড়ি, গয়না, মেকআপ যথেষ্ট নয়। নতুন সাজে সুন্দরী হয়ে উঠতে চাইলে আগে থেকে যথাযথ পরিচর্যা প্রয়োজন। তাই বাড়িতে নিয়মিত ত্বক ও চুলের যত্ন নিন...

 

পুজোর কয়টা দিন সবাই চায় নিজেকে আরও সুন্দর দেখাতে। আসলে সারা বছরের অত্যাচার তো আর একবারে যাবে না। তাই প্রয়োজন উৎসবের আগে নিয়মিত পরিচর্যা। আসল কথা হলো শরীরের যেমন খাবার প্রয়োজন তেমনই ত্বকের প্রয়োজন প্রয়োজনীয় পুষ্টি। আর ত্বকের পুষ্টিতে কোনো ঘাটতি না থাকলেই আপনার ত্বক হবে উজ্জ্বল। আর তাতে আপনি হয়ে উঠবেন উৎসবে সবার মধ্যে অনন্য।

 

শারদীয় উৎসবের আগের দিনগুলোর রূপচর্চা সম্পর্কে কসমোলজিস্ট শোভন সাহা বলেন, অনেকের ব্যস্ত শিডিউলের কারণে পারলারে যাওয়ার সময় থাকে না। তারা বাড়িতেই সম্পূর্ণ ঘরোয়া উপায়ে অতি সাধারণ কিছু জিনিস দিয়েই শুরু করতে পারেন রূপচর্চা। সময়ও লাগবে না। তবে মেনে চলতে হবে বিশেষ কিছু নিয়ম।

 

নিয়মিত ত্বকের যত্ন

স্বাভাবিক, শুষ্ক বা তৈলাক্ত; ত্বক যেমনই হোক- ক্লিনজিং মাস্ট। তবে সেক্ষেত্রে সাবান নয়, এর পরিবর্তে ভালো কোনো ক্লিনজিং বা জেল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। যাদের ত্বক এমনিতেই শুষ্ক, তারা ক্লিনজিং ক্রিম ব্যবহার করুন। ক্রিম ত্বকের ময়েশ্চার ব্যালেন্স বজায় রাখতে সাহায্য করে। আর যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা ক্লিনজিং জেল ব্যবহার করুন। এতে ত্বক পরিষ্কার হবে, সঙ্গে স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় থাকবে। মুখ পরিষ্কার করার পর টোনার দিয়ে মুখ, গলা ও ঘাড় ভালো করে মুছে নিন। টোনার ত্বকের রক্তসঞ্চালনে সাহায্য করবে। ফলে ত্বক হবে মসৃণ, উজ্জ্বল এবং লাবণ্যময়।

 

তারপর মুখে, গলা ও ঘাড়ে ভালো করে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। বাজারের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে অনীহা থাকলে বাড়িতেও বানিয়ে নিতে পারেন। গোলাপজল, গ্লিসারিন ও অ্যালোভেরার রস একসঙ্গে মিশিয়ে ময়েশ্চার হিসেবে নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন।

 

সপ্তাহে দুই-তিন দিন স্ক্রাবার ব্যবহার করতে পারেন। যে কোনো কসমেটিক্সের দোকানেই স্ক্রাবার কিনতে পেয়ে যাবেন। বাড়িতেও ময়দার সঙ্গে দই, ওটমিল ও গোলাপজল মিশিয়ে স্ক্রাবার তৈরি করে নিতে পারেন। মুখে লাগিয়ে হালকা হাতে ঘষে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের মরা কোষ ঝরে যাবে। ত্বক মসৃণ হবে, ব্ল্যাকহেডসও চলে যাবে।

 

চুলের যত্ন প্রতিদিন

পুজোর সময় খোলা চুলের স্টাইল করুন বা বেঁধে রাখুন- চুল সুস্থ না হলে কোনো স্টাইলই মানাবে না। চুলে রোজ অয়েল ম্যাসাজ, শ্যাম্পু, কন্ডিশনিং-এর মতো কয়েকটি জিনিস করুন আর মাসে দুই দিন একটু সময় বের করে হেনা ট্রিটমেন্ট ট্রাই করুন। 

 

পুজোর আগেই সুন্দর চুল পেয়ে যাবেন আপনার হাতের মুঠোয়। শ্যাম্পু করার এক ঘণ্টা আগে আমন্ড অয়েল বা তিলের তেল সামান্য গরম করে নিন। বাড়িতে এসব তেল না থাকলে চিন্তার কিছু নেই। নারিকেল তেল দিয়েও হবে। আঙ্গুলের ডগা দিয়ে মাথার স্ক্যাল্পে ও চুলে তেল দিন। ম্যাসাজ করুন। এতে ব্লাড সার্কুলেশন ভালো হবে। তারপর কুসুম গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে নিংড়ে নিয়ে মাথায় পাঁচ মিনিট জড়িয়ে রাখুন। এই পদ্ধতিটা একইভাবে তিনবার ট্রাই করুন। এতে সহজে চুলের গোড়ায় তেল ঢুকবে ও পুষ্টি জোগাবে। চুল নরম ও চকচকে হবে। সব শেষে শ্যাম্পু করে নিন এবং প্রতিবার শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনিং করাতে ভুলবেন না। হেনা পাউডারের সঙ্গে লেবুর রস, কফি, ডিম, দই মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। মাসে দুবার স্ক্যাল্পে ও চুলে লাগিয়ে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। চুল নরম ও মজবুত হবে।

 

চোখের যত্ন

রাতে শোবার আগে হাতে কয়েক ফোঁটা আমন্ড অয়েল নিয়ে চোখের চারপাশে লাগিয়ে হালকা হাতে এক মিনিট করে ম্যাসাজ করুন। নিয়মিত ব্যবহারে চোখের চারপাশের চামড়া ভালো থাকবে এবং ডার্কসার্কেলের সমস্যাও কমবে।

 

ঠোঁটের যত্ন

গোসলের আগে ঠোঁটে দুধের সর লাগিয়ে এক ঘণ্টা রেখে দিন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। প্রতি রাতে শুতে যাওয়ার আগে গোলাপজল ও গ্লিসারিন মিশিয়ে ঠোঁটে লাগিয়ে নিন।

 

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন

ভালো ত্বক পেতে হলে খাদ্যাভ্যাসেও বদল আনা জরুরি। তেল, মসলা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। পরিবর্তে সবজি ও ফল বেশি বেশি খাওয়ার চেষ্টা করুন। এ সময় ভিটানিম ‘এ’ ও ‘সি’ জাতীয় ফলমূল খাওয়ার চেষ্টা করুন।

 

লেখা : নূরজাহান জেবিন

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর