বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

স্নিগ্ধতা সারা দিন

স্নিগ্ধতা সারা দিন

♦ মডেল : সামিহা ♦ ছবি : রাব্বি

শীত বিদায় নিয়েছে অনেক দিন পেরিয়েছে। প্রকৃতিতে এখন বসন্তের রাজ। প্রতিদিনের ফ্যাশনে জায়গা করে নেবে গরমের উপযোগী সাজ ও পোশাক। কেননা, এই আবহাওয়ায় ওয়ারড্রবে রাখা জমকালো পোশাক পুরোপুরি বেমানান। আবার একেবারে সাদামাটাও চলাফেরা করা যায় না।  রূপ বিশেষজ্ঞ এবং ফ্যাশনবোদ্ধারা দেন সমাধান...

 

হঠাৎ বৃষ্টি কিংবা প্রচ- দাবদাহ। চৈত্রের শেষে বাড়ছে প্রকৃতির তাপমাত্রা। এমন দিনে বাইরে বের হওয়াই ঝক্কির ব্যাপার, আবার নিমন্ত্রণ! সাজ-পোশাক নিয়ে চিন্তা তো হয়ই। কারণ আলমারিতে থাকা জমকালো পোশাকগুলো এই আবহাওয়ায় পরাটা অস্বস্তিকর। আবার একেবারে সাদামাটাভাবেও যাওয়া যায় না। রূপ বিশেষজ্ঞ আর ফ্যাশন ডিজাইনাররা জানিয়ে দিয়েছেন সমাধান।

 

গরমও উঠেছে চরমে। বিশ্লেষকদের মতে, বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাবেই আবহাওয়ায় দেখা দিয়েছে নানা বিরূপ ভাব। ফলে চৈত্রের দিনগুলোয় প্রচ- গরম আর আকস্মিক বৃষ্টির দেখা মিলছে হরহামেশাই। বিশেষজ্ঞদের মতে, গরমের এমন দিনে কালো বাদ, গাঢ় হলুদ, সবুজের মতো রংগুলো অন্যের চোখে বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এই রংগুলো পোশাকে ব্যবহার না করাই ভালো। পাশাপাশি ভারী সাজ দূরে রেখে ফুটিয়ে তুলতে হবে স্নিগ্ধতা।

 

গরমের সময় পালাজ্জোটা বেশ স্বাচ্ছন্দ্য এনে দেয়। পালাজ্জোর কাটে আনতে পারেন ভিন্নতা। কোমর থেকে নিচ পর্যন্ত সমান ঘের দেওয়া পালাজ্জোর দুই দিকে চিকন করে পাইপিং লাগাতে পারেন। এর রংটা গাঢ় হলেই ভালো দেখাবে। তবে ফতুয়ার জন্য বেছে নিতে পারেন হালকা সবুজ, গোলাপি, সাদা না হলে আকাশি রং। থ্রি-কোয়ার্টার হাতার ফতুয়ার জমিনে ফুটে উঠতে পারে একই রঙের সুতা, অ্যাপ্লিক বা অ্যামব্রয়ডারির কাজ। এবার গলায় জড়িয়ে দিন কাঠ বা পুঁতির তৈরি দুই বা তিন লহরের মালা। এদিকে ফরমাল কোনো অনুষ্ঠানে আরামদায়ক কাপড়ে তৈরি একটু ফিউশনধর্মী নকশার পোশাক পরতে পারেন। যেমন লিনেনের তৈরি পালাজ্জোর পায়ে থাকতে পারে ব্লকপ্রিন্টের নকশা। সুতির স্লিভলেস কামিজের ওপর পরতে পারেন লম্বা হাতার কটি। এই সময়ে যারা শাড়িতে আগ্রহী তারা শিফন, জর্জেট, সুতি ঢাকাই জামদানি, মসলিন, টাঙ্গাইলের জামদানি, টাঙ্গাইল বালুচরি, কোটা- এসব শাড়ি পরতে পারেন। শিফন ও জর্জেট শাড়ি হালকা হয় বলে এ সময় এই শাড়িগুলো পরতে আরাম। এগুলোতে চুমকি, পুঁতি, রিবন, প্যাঁচ, অ্যামব্রয়ডারি কাজ করা হলেও শাড়িগুলো খুব বেশি ভারী হবে না। আসবে আভিজাত্য। সুতির শাড়িও পরতে পারেন। তবে সেটা পারিবারিক অনুষ্ঠানে হলেই ভালো হয়।  এ ক্ষেত্রে হাতের কাজ বা অ্যাপ্লিক বসানো নকশার পাড়ের শাড়ি বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেন ফ্যাশনবোদ্ধারা। এবার বিপরীতরঙা ব্লাউজের সঙ্গে আঁচল ভাঁজ করে বা ছেড়ে রেখে, যেভাবেই পরুন না কেন ফুটে উঠবে উৎসবের আমেজ। স্বচ্ছন্দবোধ করলে স্লিভলেস ব্লাউজও পরতে পারেন।

 

যারা শাড়ি পরতে অভ্যস্ত নন, তারা ঘের দেওয়া কামিজ পরতে পারেন। কামিজের গলায় আর হাতে থাকতে পারে বিভিন্ন রঙের পাইপিংয়ের ব্যবহার। পুরো কাপড়টা জর্জেটের হলেও গলার নকশায় সুতির কাপড়ে থাকতে পারে ব্লকের কাজ। হাতাকাটা কামিজ হলে অনেক বেশি আরামদায়ক হবে। তবে অনেকেই হাতাকাটা পোশাকে স্বচ্ছন্দবোধ করেন না। তাই ম্যাগি, ঘটি অথবা থ্রি কোয়ার্টার হাতাও চলতে পারে। গলার ক্ষেত্রে গোল, ইউ বা হাল ফ্যাশন মেনে ভি গলার কামিজ পরা যেতে পারে। কামিজের ছাঁটটা সোজা হলেই ভালো, তাহলে গরমে আরাম পাওয়া যাবে। এ সময়ের পোশাক একটু ঢিলেঢালা হওয়াই ভালো।

 

এই সময় চেহারায় একটা পিংক টোন ফুটিয়ে তোলা যেতে পারে। দিনের বেলায় আইশ্যাডোর ব্যবহার না করাই ভালো। এ সময় চোখে হালকা আইলাইনার আর কাজল পরলেই ভালো দেখাবে। তবে রাতের সাজে চোখে বাদামি কোনো শেড ব্যবহার করতে পারেন। আর লিপস্টিকে গাঢ় রঙের ব্যবহারে ফুটে উঠবে স্টাইলিশ লুক। ব্লাশনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করুন পিংক, ব্রাউন টোনের ব্লাশন। চোখে  লাগান বাদামি, কফি, নীলচে বা সবুজ আভার আইশ্যাডো। তবে আগে প্রাইমার লাগিয়ে নিন।

 

এ সময় অনুষ্ঠানে যেতে গলায় গয়না না পরাই ভালো। তবে কানে পরা যেতে পারে ভারী কোনো দুল। হাতে নানা নকশার বালা। আংটি পরতে পারেন মনের মতো করে। মুক্তা বা রুপার গয়না বেশ স্বস্তি নিয়ে আসে। খুব জমকালো অনুষ্ঠানে হালকা পাথর বসানো ছোট ডিজাইনের গয়না পরা যেতে পারে। এ ছাড়া এখন ছোট দুল ও পেন্ডেন্ট বেশ জনপ্রিয়। ব্যাগটাও বেশি বড় না নিয়ে ছোটখাটো ক্লাচ, পার্স নিলেই মানানসই হবে।

 

লেখা : ফেরদৌস আরা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর