সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সের সেরা খেলোয়াড়

আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সের সেরা খেলোয়াড়

৩২ দলের ৮৩১ জন ফুটবলারের স্বপ্নযাত্রা শুরু হয়েছিল গত ২০ নভেম্বর। ২৮ দিনের ফুটবলযজ্ঞ শেষে গত রাতে ভাঙে মিলনমেলা। আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সের ফাইনালের মধ্য দিয়ে পর্দা নামে বিশ্ব ফুটবলের ২২তম আসরের। আবার দেখা যাবে চার বছর পর যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডাতে।  এবারের কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে লড়াই করে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। বিশ্বকাপের বড় তারকা হলেন তারাই। বিশ্বকাপের শেষ বাঁশি বাজার আগ পর্যন্ত তাদের দিকেই তাকিয়ে ছিল গোটা বিশ্ব।  এসব নিয়ে রকমারি ডেস্কের আয়োজন-

 

বিশ্বকাপ লিওনেল মেসির আরাধ্য ছিল। সব ট্রফি উঠেছিল তার হাতে, বাকি শুধু বিশ্বকাপ। এটা হাতে পেলেই কি তিনি পৌঁছে যাবেন সর্বকালের সেরাদের কাতারে?  বিশ্লেষকরা এই প্রশ্নতেই বিতর্ক করেন। তারা বলেন, অতীতে সর্বকালের সেরা ফুটবলার প্রসঙ্গ উঠলেই ভেসে আসত ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো ম্যারাডোনা এবং ব্রাজিলের ফুটবল সম্রাট পেলের নাম। সেসব অতীত। গত ১৫ বছরের হিসাব জানান দেয় কিছু অন্য মতামত। এখন গোট অর্থাৎ ‘গ্রেটেস্ট অব অলটাইম’ বা সর্বকালের সেরার লড়াই মানেই মেসি। মেসি নিজেকে যে উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তা সত্যিকার অর্থেই আকাশচুম্বী। ক্লাবের হয়ে ৩৫টির বেশি ট্রফি জিতেছেন। দেশের হয়ে জিতেছেন কোপা আমেরিকা। ৩৫ বছর বয়সী এই তারকার ফাইনালের আগে বিশ্বকাপের মঞ্চে ১১টা গোল। গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে ছাপিয়ে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সর্বাধিক গোলদাতা এখন মেসি। সেমিফাইনাল ম্যাচের পর ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ডিফেন্ডার জেমি টুইট করেন, ‘মেসিই হলেন সর্বকালের সেরা।’ আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি বলেন, ‘আমার কোনো সন্দেহ নেই যে, মেসিই সর্বকালের সেরা। আমি এটা প্রথম থেকেই বলে আসছি। আমি সত্যিই গর্বিত যে মেসির মতো একজন রয়েছে আর্জেন্টিনা দলে।’ সেমিফাইনালের পর প্রেস কনফারেন্সে ক্রোয়েশিয়ার কোচ দালিচ বলেন, ‘মেসির সম্পর্কে বেশি কিছু বলার নেই, সর্বকালের সেরা প্লেয়ার ও। এই ম্যাচেও খুবই বিপজ্জনক ছিল। ওকে নিয়েই আশঙ্কা ছিল আমাদের।’

অন্যদিকে মেসির সঙ্গে ফাইনালের আগে যার নাম সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়েছে, তার বয়স মাত্র ২৩। নাম কিলিয়ান এমবাপ্পে। ফাইনালের আগেই বিশ্বকাপে তার গোলের সংখ্যা ৯। রাশিয়া ও কাতার বিশ্বকাপ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১২টি ম্যাচ খেলেছেন। অনবদ্য পারফরম্যান্সে পেছনে ফেলে দিয়েছেন বড় তারকাদের। বিশ্বকাপে গোলসংখ্যার নিরিখে নিজের দেশের থিয়েরি ওঁরি বা জিনেদিন জিদানকে আগেই ছাপিয়ে গিয়েছেন এমবাপ্পে। ২৪ বছর বয়স হওয়ার আগে বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি গোল করার পেলের নজির ছুঁয়েছেন তিনি। সাধারণভাবে বিভিন্ন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের মধ্যে তুলনা করা কঠিন। প্রতিপক্ষ, সতীর্থ, খেলার কৌশল, নিয়ম, প্রযুক্তি অনেক কিছুই বদলে যায়। স্বাভাবিকভাবেই বদলে যায় সেরা বেছে নেওয়ার নিক্তিও।  এমবাপ্পে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছেন কয়েকটি ক্ষেত্রে। এমবাপ্পের ঝুলিতে ১৪টি ট্রফি। ২৩ বছর বয়সে মেসি ১২টি এবং রোনালদো পাঁচটি ট্রফি জিতেছিলেন। দেশের প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রেও এই দুজনের থেকে পিছিয়ে নেই এমবাপ্পে।

 

লিওনেল মেসি

নিজের শেষ বিশ্বকাপে দেশকে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করার মিশনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন লিওনেল মেসি। রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী মেসি শৈশব থেকেই প্রতিভাবান। ১৩ বছর বয়সে যোগ দেন বার্সেলোনার যুব একাডেমিতে। ২০০৪ সালের অক্টোবরে ১৭ বছর বয়সে মেসি বার্সেলোনার মূল দলের হয়ে অভিষিক্ত হন। বিশ্বসেরা হয়ে উঠতে খুব বেশি সময় নেননি। ২০০৬ বিশ্বকাপের আগেই পেয়ে যান তারকাখ্যাতি। যদিও মেসির আসল উত্থান ২০০৭ সাল থেকে। স্প্যানিশ লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ডটিও মেসির দখলে। এক মৌসুমে লা লিগায় সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড (৫০), এক মৌসুমে ইউরোপীয় ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলের (৭৩) রেকর্ড, এক বর্ষপঞ্জিতে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড (৫১), এল ক্ল্যাসিকোতে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড (২৫) রয়েছে মেসির। লা লিগায় সর্বোচ্চ গোল সহায়তা বা অ্যাসিস্টের রেকর্ডও মেসির নামের পাশে লেখা হয়েছে। বর্তমানে পিএসজি ক্লাবের হয়ে খেলছেন নেইমার-এমবাপ্পেদের সঙ্গে। একই সঙ্গে মেসি প্লেমেকার এবং গোলদাতার ভূমিকায় অনন্য। কাতার বিশ্বকাপে ফুটবলের ইতি টানছেন সর্বকালের সেরা এই খেলোয়াড়।

 

কিলিয়ান এমবাপ্পে

কিলিয়ান এমবাপ্পে ফ্রান্স জাতীয় দলের অন্যতম খেলোয়াড়। ফ্রান্সের সেরা ক্লাব পিএসজির অন্যতম স্ট্রাইকারও তিনি। ১৯৯৮ সালে প্যারিসের বঁদি শহর থেকে অভিবাসী বাবা-মায়ের ঘরে জন্ম গ্রহণ করেন ফ্রান্সের এই তারকা। সেবারই ফ্রান্স প্রথম বিশ্বকাপে বিশ্বচ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করেছিল। ঠিক ২০ বছর পর ২০১৮ সালে সেই এমবাপ্পে ফ্রান্সকে এনে দিয়েছিলেন দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ।  শুধু তাই নয়, সেবার বিশ্বকাপ ফুটবলে ফ্রান্সের হয়ে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার রেকর্ডও গড়েন তিনি। এখন পর্যন্ত উদীয়মান এই তারকা বিশ্বকাপে ফ্রান্সের হয়ে করেন ৯টি গোল। যার মধ্যে চলতি বিশ্বকাপে পাঁচ গোল করে আর্জেন্টাইন সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসির সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় শীর্ষে আছেন তিনি। বলা হয়, এই প্রজন্মের সেরা তারকা খেলোয়াড় কিলিয়ান এমবাপ্পে। আর হবেই না কেন! মাত্র ২৩ বছর বয়সী এমবাপ্পের সফলতার ঝুলিতে রয়েছে জাতীয় লিগের হয়ে পাঁচটি শিরোপা এবং ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ। মাত্র দুবার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেন। যদিও এর বাইরে তার অর্জন না থাকলেও ভবিষ্যতের উদীয়মান সেরা খেলোয়াড়ের তকমা ঠিকই হাসিল করেছেন।

 

এমিলিয়ানো মার্টিনেজ

এমিলিয়ানো মার্টিনেজ আর্জেন্টিনার পেশাদার ফুটবলার। যিনি প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব অ্যাস্টন ভিলা এবং আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে গোলরক্ষক হিসেবে খেলেন। আর্জেন্টিনা দলের কোচ লিওনেল স্কালোনি দলকে অপরাজিত রেখেছেন প্রায় তিন বছর ধরে। জিতিয়েছেন কোপা আমেরিকা শিরোপা। ২০০৯ সালে মার্টিনেজ আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন। প্রায় তিন বছর ধরে আর্জেন্টিনার বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলার পর তিনি ২০২১ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে চিলির বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক করেছেন; আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে তিনি এ পর্যন্ত ১৮ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন। কোপা আমেরিকা শিরোপা অর্জনের পর আর্জেন্টিনা পোস্টের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন গোলরক্ষক মার্টিনেজ। ইতোমধ্যে অনেকে তাকে বাজপাখি খেতাবও দিয়ে ফেলেছেন। বিশ্বকাপে এক প্রকার অপ্রতিরোধ্য মার্টিনেজ। শুধু কাতার বিশ্বকাপেই নয়, গত বছর কোপা আমেরিকায়ও দুর্দান্ত অনেক শট বাঁচিয়েছিলেন। ব্রাজিলের বিপক্ষে ফাইনাল তো বটেই। বিশেষ করে কলম্বিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালে পেনাল্টিতে তার দুর্দান্ত কিপিংয়ের প্রশংসা এখনো অনেকের মুখে মুখে।

 

ওগো লরিস

ফ্রান্সের গোলপোস্টের অতন্দ্র প্রহরী ওগো লরিস। পাশাপাশি দলটির অধিনায়কের ভূমিকাও পালন করেন তিনি। ইংল্যান্ডের ক্লাব টটেনহ্যামের সেরা গোলরক্ষকও। সব মিলিয়ে যোগ্যতার বিচারে তিনি অন্যদের চেয়ে আলাদা। ক্যারিয়ারের শুরুটা করেছিলেন স্থানীয় ক্লাব নিসের হয়ে খেলার মাধ্যমে। সেখান থেকেই পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু। কিশোর হিসেবে ক্লাবে অভিষেক করেন এবং ২০০৬ সালের কুপে দে লা লিগ-এ নিয়মিত গোলরক্ষকের দায়িত্ব পালন শুরু করেন। তিন মৌসুম ক্লাবটিতে যাপন করার পর, ইয়োরিস সাতবারের লিগ-১ চ্যাম্পিয়ন ওলাঁপিক লিয়োনে যোগদান করেন। তাকে দলে ভেড়ানোর জন্য ইউরোপের বেশ কয়েকটি ক্লাব মুখিয়ে ছিল; যার মধ্যে এসি মিলান অন্যতম। বর্তমানে খেলছেন টটেনহ্যামের হয়ে। ইতোমধ্যে লরিস পেয়েছেন ক্লাব কিংবদন্তির খেতাবও। ২০১৮ সালে ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ অর্জন করেছেন। অধিনায়ক ও গোলরক্ষক হিসেবে দুটো বিশ্বকাপ জয় হাতছানি দিয়ে ডাকছে তাকে। এরই মধ্যে ফ্রান্স ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি (১৪৪) আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন। এক সপ্তাহ আগে ৩৬-এ পা দিয়েছেন লরিস। এখন শেষবেলায় ডাকছে শিরোপা জয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসেও শীর্ষে ওঠে যাওয়ার রেকর্ড।

 

জুলিয়ান আলভারেজ

জুলিয়ান আলভারেজ। সেই ছেলেবেলা থেকে মেসির অন্ধ ভক্ত। স্বপ্ন দেখতেন জাতীয় দলের জার্সিতে একদিন মেসির পাশে খেলবেন। সেই স্বপ্ন পূরণও হয়েছে। কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টাইন অধিনায়কের পাশে খেলেছেন। চলতি মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেওয়া আলভারেজ কাতারে নিজেকে চেনাচ্ছেন নতুন করে। ক্লাব পর্যায়ে তারকা স্ট্রাইকার আর্লিং হলান্ডের জন্য সেভাবে পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে আসতে না পারা এই আর্জেন্টাইন বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত চার গোল করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে সেমিফাইনালের দুটি। লিওনেল মেসির সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে তুলেছেন ২২ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার। কাতার বিশ্বকাপ আলভারেজের প্রথম বিশ্বকাপ। খুব একটা অভিজ্ঞতা নেই। অবশ্য ২২ বছরের তরুণের আর কী অভিজ্ঞতা থাকবে! এ রকমই এক তরুণ আর্জেন্টিনার আক্রমণের অন্যতম কান্ডারি। সেই আলভারজকে নিয়েই এখন স্বপ্ন দেখছে দেশবাসী।

 

আঁতোয়ান গ্রিজমান

ফ্রান্সের এমন সাফল্যের নেপথ্যে থাকা একজনের নাম কেন যেন আড়ালেই পড়ে থাকে; তিনি আঁতোয়ান গ্রিজমান। পুরো বিশ্বকাপজুড়েই দুর্দান্ত ছন্দে আছেন  গ্রিজমান। বিশ্বকাপ শুরুর আগে গ্রিজমানের ফর্ম ছিল হতাশাজনক। অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদে সুযোগ পাওয়াই তখন কঠিন হয়ে পড়েছিল তার জন্য। কিন্তু জাতীয় দলে দেখা  গেছে নতুন এক গ্রিজমানকে। লা লিগার ক্লাব অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ এবং ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে একজন আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন গ্রিজমান। ইতোমধ্যে ফরাসি দলের প্লেমেকারের খেতাব অর্জন করে ফেলেছেন এই স্ট্রাইকার। ফ্রান্সের হয়ে নিজে গোল করেন এবং অন্যকে দিয়ে গোল করান। ২০১৪-১৫ মৌসুমে লা লিগার মৌসুম সেরা দলের একজন ছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে লা লিগা সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। এমনকি ফ্রান্সের ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ অর্জনে এমবাপ্পেদের অন্যতম সতীর্থ ছিলেন তিনি।

 

রদ্রিগো ডি পল

স্কালোনির কৌশলে খুব গুরুত্বপূর্ণ ২৮ বছর বয়সী রদ্রিগো ডি পল। ভক্তদের কাছে ২৮ বছর বয়সী এই ফুটবলার হয়ে উঠেছেন অধিনায়ক লিওনেল মেসির অনানুষ্ঠানিক ‘বডিগার্ড।’ তার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ২০০২ সালে মাত্র আট বছর বয়সে। একসময় ভ্যালেন্সিয়ার হয়ে খেলেছিলেন। বর্তমানে ডি পল অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ তারকা। এই ক্লাবে তার সতীর্থদের মধ্যে রয়েছেন কোয়েরা ও মলিনা। ২০১৮ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক হয় পলের। ২০১৯-এ চিলিকে হারিয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন এবং ২০২১ সালে কোপা আমেরিকা শিরোপা অর্জন করেছেন লিওনেল মেসির অন্যতম সতীর্থ ডি পল।

 

রাফায়েল ভারান

ফরাসিদের রক্ষণভাগের প্রাণ বলা যায় রাফায়েল ভারানকে। ফ্রান্সের রক্ষণভাগের অন্যতম যোদ্ধা। তার উপস্থিতিতে রক্ষণ নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকেন কিলিয়ান এমবাপ্পেরা। প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলছেন রক্ষণভাগের এই খেলোয়াড়। ২০০০-২০০১ মৌসুমে ফরাসি ফুটবল ক্লাব এলেমের হয়ে ফুটবল জগতে প্রবেশ করেন ভারান। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৩টি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা অর্জনের কৃতিত্ব রয়েছে তার। বর্তমানে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগদান করেছেন। ভারান এ পর্যন্ত ১৯টি শিরোপা জয় করেছেন, যার মধ্যে ১৮টি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে এবং একটি ফ্রান্সের হয়ে।

 

নিকোলাস ওতামেন্দি

সেন্ট্রাল ডিফেন্সে রোমেরোর সঙ্গী তার থেকে ১০ বছরের বড় নিকোলাস ওতামেন্দি। আসরে এখন পর্যন্ত দলের সফল যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন বেনফিকার এই খেলোয়াড়। নিকোলাস ওতামেন্দি পর্তুগিজ লিগের ‘ক্লাব বেনফিকা’ এবং আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে রক্ষণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন। তিনি তার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ভেলেজ সার্সফিল্ড এবং পোর্তোর মতো ক্লাবে খেলেছেন, যেখানে তিনি ৩টি জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ২০১১ উয়েফা ইউরোপা লিগসহ সর্বমোট ৮টি প্রধান ট্রফি জয়লাভ করেছেন। ২০০৯ সাল থেকে ওতামেন্দি আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে খেলা শুরু করেন। তিনি ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপ এবং দুটি কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন লিওনেল মেসির খুব কাছ থেকে, যেখানে তার দল আর্জেন্টিনা রানার-আপ হয়েছিল। সব প্রতিযোগিতাতেই আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগের প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তিনি।

 

অলিভার জিরু

টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছে ফ্রান্স; ফরাসিদের এমন সাফল্যের রূপকারদের কথা বললে সবার আগে নাম আসবে কিলিয়ান এমবাপ্পের অলিভার জিরুর নাম। যিনি দ্য অলটাইম টপস্কোরার অব ফ্রান্স। বিশ্বকাপে এসে যেন শূন্য থেকে শিখরে উঠে এলেন ফ্রেঞ্চ এ ফরোয়ার্ড। দেশের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা এসি মিলানের এই তারকা খেলোয়াড়। ২০০৮ সালে লিগ ২-এর ক্লাব গ্রেনোবলের হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি তার পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন। ২০১১ সালে জাতীয় দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক তার। এ পর্যন্ত তিনি ৫০-এর অধিক ম্যাচ খেলেছেন, যার মধ্যে ৩০-এর অধিক গোল করেছেন। তিনি ২০১২ উয়েফা ইউরো, ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ এবং ২০১৬ উয়েফা ইউরোর মতো প্রতিযোগিতায় ফ্রান্সের হয়ে খেলেছেন। তিনি ২০১৬ উয়েফা ইউরো যুগ্ম দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন এবং টুর্নামেন্টের ব্রোঞ্জ বুট জয় করেন।

সর্বশেষ খবর