সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

অভিশপ্ত ভানগড় দুর্গে প্রবেশ নিষেধ

♦ ভানগড় দুর্গের গল্প শুধু রাজস্থানেই নয়, সারা ভারতেই বিখ্যাত ♦ সূর্যোদয়ের আগে এবং সূর্যাস্তের পরে এর সীমানায় থাকা নিষিদ্ধ

রণক ইকরাম

অভিশপ্ত ভানগড় দুর্গে প্রবেশ নিষেধ

‘নো এন্ট্রি’ বা ‘প্রবেশ নিষেধ’ কথাগুলোর সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। কিন্তু অভিশাপ কিংবা ভুতুড়ে কর্মকান্ডের জন্য যদি কোনো স্থানের সামনে এমন সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয় তাহলে কেমন লাগার কথা? অবশ্যই ভীতিকর এবং বিস্ময়কর একটি বিষয়। এমনই একটি ভয়ংকর দুর্ধর্ষ জায়গা ভারতের ভানগড় দুর্গ। ভানগড়ের সীমানায় একটি বোর্ডও রয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে যে, সূর্যোদয়ের আগে এবং সূর্যাস্তের পরে শহরে থাকা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। অভিশাপ, ভূতদের উৎপাতের কারণে জায়গাটি এত বেশি কুখ্যাতি অর্জন করেছে, সরকারিভাবেই রাতের আঁধারে এখানে প্রবেশের ওপর জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ভানগড় দুর্গটি অবস্থিত ভারতের রাজস্থানের আলোয়ার জেলার জয়পুর আর দিল্লির মাঝামাঝিতে। দুর্গের প্রতিটি ইটে রয়েছে মুঘল সাম্রাজ্যের আভিজাত্যের চিহ্ন। যদিও এই কেল্লার চারপাশে নেই কোনো জনবসতি। ভয়ংকর ইমেজের কারণে সন্ধ্যা নামার আগেই ভানগড় থেকে যতটুকু সম্ভব দূরে সরে যাওয়া নিরাপদ মনে করেন এলাকার লোকজন। তাদের বিশ্বাস, এখানে থাকলে অস্বাভাবিক কিছু ঘটবেই। এখানে থাকলে মানুষের মনের অস্থিরতা বেড়ে যায়। আর মনের মধ্যে ভর করে অজানা অচেনা আতঙ্ক কিংবা ভয়। বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, স্থানীয় লোকজন দুর্গের আশপাশের এলাকায় বাড়ি তৈরি করতে পারেন না। আবার সাহস করে কেউ যদি বাড়ি নির্মাণও করে ফেলেন, তাহলে সেই বাড়ির ছাদ রাখা যায় না। সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হলো, কেউ যদি ছাদ নির্মাণও করেন তাহলে সেটি আপনাআপনি ধসে যায়। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, এই দুর্গের সীমানাতে ঢুকলেই অদ্ভুত অনুভূতি ঘটে সবারই। মনে হয় কেউ তাদের অনুসরণ করছেন। দুর্গের মধ্যে কেউ পিছু পিছু হাঁটে, কেউ পেয়েছেন নিঃশ্বাসের তাপ। আবার অনেকের মতে, দুর্গ থেকে চিৎকার, কান্না ও চুড়ির শব্দও শোনা যায়। তবে এই দুর্গে পরবর্তীতে বেশ কিছু মৃত্যুও ঘটেছে। স্থানীয়দের মতে, কথিত আছে যে, একবার তিন বন্ধু এই দুর্গে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তারা জানতে চেয়েছিলেন স্থানটি সত্যিই ভুতুড়ে কি না! তবে রাত কাটিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু পরের দিন বাড়ি ফেরার পথে তারা দুর্ঘটনায় মারা যান। ভানগড় দুর্গের প্রকৃত ইতিহাস আজও অজানা। তবে এ সম্পর্কে বেশ কয়েকটি ধারণার প্রচলন রয়েছে। এর মধ্যে একটি অনুসারে সতেরো শতকে রাজা মান সিংয়ের ছোট ভাই মাধো সিং এ দুর্গের নির্মাতা। মুঘল শাসনের প্রতাপ প্রতিপত্তি কমার সঙ্গে সঙ্গেই দুর্গটির দুর্দশা শুরু হয়। নগরীর শুরু দিকে ভানগড়ের লোকসংখ্যা ছিল প্রায় ১০ হাজার। সীমানাপ্রাচীরের মাঝে মাঝে পাঁচটি তোরণ তৈরি করে শহরটিকে আশপাশের এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছিল। মধ্যযুগীয় শাহজাহানাবাদ শহরের প্রভাব থাকায় চারপাশে বিশাল কাঠের গেট এবং সীমানার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে জলপ্রপাত রয়েছে, যার ফলে জায়গাটি শীতল থাকে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো- ভানগড় দুর্গ নগরীর ধ্বংসস্তূপের মধ্যে এখনো টিকে আছে মসজিদ আর মন্দির। টিকে আছে হুনুমান, শিব, নারায়ণ এবং গোপীনাথের মন্দির। এ নগরীকে অভিশপ্ত মনে করার পেছনে ইতিহাসের বেশকটি শক্ত কারণ রয়েছে। এর  পেছনে দুটি গল্প পাওয়া যায়। শোনা যায়, ভানগড়ের সঙ্গেই ছিল গুরু বালুনাথের আশ্রম। গুরু বালুনাথ রাজা ভানু সিংকে নগর তৈরি করার সময় বলেছিলেন যেন তাকে বিরক্ত না করা হয়। এ বিষয়ে গুরু রাজাকে একাধিকবার সতর্ক করেছিলেন। একবার সতর্কবার্তা পাঠান গুরু। আর সেই বার্তাটি ছিল প্রাসাদের ছায়া তার আশ্রম ছোঁয়া মাত্রই শহর ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু রাজা ভানু সিং বালুনাথের কথা মানেননি। পরবর্তী সময়ে গুরু বালুনাথের কথাই সত্যি হয়। প্রাসাদের উচ্চতার কারণে ছায়া পড়ে তার আশ্রমে। এর পরেই ধ্বংস হয়ে যায় এ শহর। প্রচলিত বিশ্বাসের সেই গুরু বালুনাথের সমাধিও রয়েছে ভানগড়ে। নগরী ধ্বংসের পেছনে আরও একটি কারণ প্রচলিত রয়েছে। ভানগড়ের রাজকুমারী রত্নাবতী বয়ঃপ্রাপ্ত হলে বিভিন্ন রাজ্য থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসতে থাকে। সে সময় ভানগড় এলাকায় সিংহিয়া নামে এক তান্ত্রিক বাস করতেন।

আরেকটি গল্প হলো রাজকুমারী রত্নাবতীর, যিনি খুব সুন্দরী মহিলা ছিলেন। সিংহিয়া রাজকুমারী রত্নাবতীকে ভালোবাসতেন। কিন্তু তান্ত্রিক সিংহিয়া তন্ত্রবলে জানতে পেরেছিলেন রত্নাবতী তার প্রেমে সাড়া দেবে না। এর পরও দমে যাওয়ার পাত্র ছিলেন না সিংহিয়া। তিনি সুযোগের অপেক্ষা করতে লাগলেন। এক দিন রাজকুমারী সহচারীদের সঙ্গে নিয়ে কাছের বাজারে পছন্দের সুগন্ধি তেল কেনার জন্য আসেন। সুযোগটা ব্যবহার করে তান্ত্রিক সুগন্ধির ওপর জাদুর প্রভাব বিস্তার করেন। তার উদ্দেশ্য ছিল- এ সুগন্ধির প্রভাবে রাজকুমারীকে নিজের বশে নিয়ে আসা। কিন্তু রাজকুমারী ছিলেন দারুণ বুদ্ধিমতী। তিনি তান্ত্রিকের কুমতলব আঁচ করতে পারলেন। বুঝতে পেরে রাজকুমারী বাজার থেকে কেনা সুগন্ধি তেল মাটিতে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে ঘটে যায় এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। রাজকুমারীর ফেলে দেওয়া তেল থেকে তৈরি হয় বিশাল এক অগ্নিকুন্ড। অগ্নিকুন্ডের লকলকে জিব তাড়া করে জাদুকরকে। আগ্নেয়লাভা জাদুকরকে দ্রুত ধরে ফেলে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারে। শেষ নিঃশ্বাস নেওয়ার আগে তান্ত্রিক শহরের ওপর অভিশাপ দিয়ে যান। পরের বছর এক যুদ্ধে প্রাণ হারান রাজকুমারী। যার ফলে এটি ধ্বংস হয়ে যায়। যুদ্ধের ক্ষতে ধ্বংস হয়ে যায় নগরী। এরপর থেকে এ নগরী অভিশপ্ত নগরী হিসেবে পরিচিতি পায়  ভারতজুড়ে। ভানগড় নগরীকে কেন্দ্র করে এমন উপকথা আর এ সময়ে মানুষের ভয়ের গল্প শুনলে যে কারোর কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হওয়ার কথা। মনের ভিতর প্রশ্ন আসবে সত্যি আবার এমন হতে পারে নাকি। কিন্তু ভারতজুড়ে তো বটেই বিশ্বজুড়েও ভানগড়ের অদ্ভুতুড়ে কীর্তিকলাপ ফলাও করে প্রচার হয়েছে। শুধু কি তাই? ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভানগড়ের সামনে ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক দফতর একটা সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছে। যাতে লেখা- ‘সূর্যাস্তের পরে এবং সূর্যোদয়ের আগে এখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ।’

 

পুতুল দ্বীপ

সচরাচর পুতুলকে খুব মিষ্টি এবং মায়াবী করে তৈরি করা হয়। শিশুদের খেলার উপকরণ হিসেবে পুতুল সেই আদিকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু এই পুতুলও কখনো কখনো ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। এর আগে রকমারি পাতার আরেকটি আয়োজনে আমরা অ্যানাবেল নামের এক পৈশাচিক পুতুলের ভয়ংকর গল্প জেনেছিলাম। তবে আজকের গল্প একটা দ্বীপের। যে দ্বীপটি সবার কাছে ভয়ংকর পুতুলের দ্বীপ হিসেবে পরিচিত। একটা সাধারণ ঘটনা থেকেই এই দ্বীপের রহস্যমন্ডিত অগ্রযাত্রার শুরু। আর এ ঘটনাটি আজ থেকে প্রায় ৮০ বছরেরও বেশি সময় আগের। তিন মেক্সিকান শিশু শীতল অন্ধকার দ্বীপটিতে খেলাচ্ছলে পুতুলের বিয়ে দিচ্ছিল। আর পুতুল বিয়ে খেলতে গিয়ে তিন শিশুর একজন নিখোঁজ হয়ে যায়! অনেক খোঁজাখুঁজির পর দ্বীপের পাশের একটি খালে শিশুটির মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া গেল। সেই শুরু। এরপর থেকে ভয়ে কেউ আর ওই পথ মাড়াত না। ভয়ংকর এই পুতুলের দ্বীপটি মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটি থেকে ১৭ মাইল দক্ষিণে জোকিমিলকো জেলায় অবস্থিত। এই দ্বীপে ঢুকলে অসীম সাহসী মানুষেরও বুক কেঁপে কেঁপে উঠবে। দ্বীপজুড়ে শুধু পুতুল আর পুতুল। ভয়ংকর এই দ্বীপকে ঘিরে বছরের পর বছর ধরে প্রচলিত হয়ে আসছে নানা কাহিনি। এত সব রহস্যের কারণেই ১৯৯০ সালে মেক্সিকান সরকার জোকিমিলকো জেলার এই দ্বীপটিকে ন্যাশনাল হেরিটেজ ঘোষণা করে। মেক্সিকান সরকার এই দ্বীপকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে পর্যটন অঞ্চল বানানোর উদ্যোগ নেয়। কিন্তু পর্যটকরা কদাকার পুতুল দেখে বোধহয় রাতে দুঃস্বপ্ন দেখতে চান না। তাই তারা কখনো আসেন না। এই দ্বীপে একেক মৌসুমে ২০-৩০ জনের বেশি পর্যটক কখনই আসেননি। ১৯৫০ সালের দিকে ডন জুলিয়ান সানতানা নামের এক যাজক এই দ্বীপে এসেছিলেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল এখানে তিনি নির্জনে তপস্যা করবেন। সেই যাজকের ভাষ্য অনুসারে, দ্বীপটিতে আশ্রম গড়ে তোলার পর থেকে তিনি প্রায়ই ওই মৃত শিশুটির আত্মার দেখা পেতেন। তাঁর সঙ্গে মৃত শিশুটির আত্মার নাকি কথাও হতো। এক দিন ওই শিশুর আত্মা জুলিয়ানের কাছে পুতুলের বায়না ধরে। আবার এক্ষেত্রে একটি শর্তও জুড়ে দেয়। সাধারণ কোনো পুতুল হলে চলবে না। পুতুল অবশ্যই বীভৎস হতে হবে। অর্থাৎ শিশুটির আত্মা-যেগুলো দেখলে মনে হবে তারা মানুষের নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছে। ওই আত্মার অনুরোধেই জুলিয়ান তাঁর আশ্রমে চাষ করা সবজির বিনিময়ে মানুষের কাছ থেকে নষ্ট পুতুল সংগ্রহ করতে থাকেন। জঙ্গলে এনে গাছের ডালের সঙ্গে এগুলো বেঁধে রাখলেই খুশি হতো শিশুটির আত্মা। এমনিভাবে কুড়িয়ে পাওয়া কিংবা কিনে আনা হাজার হাজার পুতুল দিয়েই জুলিয়ান গড়ে তোলেন মৃত পুতুলের দ্বীপ। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, দ্বীপটিতে এখনো মৃত শিশুটির আত্মা ঘোরাঘুরি করে। মাঝে মাঝে শোনা যায় ভুতুড়ে আওয়াজ।  বিশ্ববাসীর কাছে মৃত পুতুলের দ্বীপ আসলেই বড়সড় আতঙ্কের নাম।

 

ভিলেজ অব ডেড

আজনিকুনি হ্রদের পাশেই একটি গ্রাম। এই হ্রদটি উত্তর-পশ্চিম কানাডায় অবস্থিত। যা এখন নুনাভূত অঞ্চলের অংশ। এটি কাজান নদীর তীরে পাওয়া অনেকগুলো হ্রদের মধ্যে একটি। হ্রদের উপকূল হার্নে ডোমেনের অংশ, পশ্চিমে চার্চিল প্রদেশ। নিভৃত এই গ্রামটি পশুর লোম উৎপাদনের জন্য খ্যাত ছিল। পশম কেনার জন্য সেখানে ব্যবসায়ীদের ভালো যাতায়াত ছিল। ঘটনার প্রথম প্রত্যক্ষদর্শী জো লাবেল নামের একজন পশম ব্যবসায়ী। লাবেলের ভাষ্যমতে, তিনি এক দিন পশম সংগ্রহের উদ্দেশ্যে গ্রামে যান। আর গ্রামের ভিতর গিয়ে দেখেন সেখানে একটা মানুষও নেই। গ্রামের সব মানুষ কোথায় যেন উধাও হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, তারা যে শার্টগুলো বুনছিল সেগুলো অসমাপ্ত অবস্থায় পড়েছিল। খাবারগুলো তখনো চুলোতে গরম হচ্ছিল। দেখে মনে হচ্ছে একটু আগেও এখানে অনেক মানুষের উপস্থিতি ছিল। সময়টা তখন ১৯৩০ সালের নভেম্বর মাস। উত্তরের হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যেই গ্রামটির অসংখ্য পুরুষ, মহিলা এবং শিশু; অর্থাৎ গোটা গ্রামের মানুষই অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। একটির পর একটি বাড়ি ঘুরেও কোনো মানুষের দেখা পাওয়া গেল না। কোনো কিছুর আক্রমণ কিংবা লড়াইয়ের চিহ্নও ছিল না। সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাপার ছিল- গ্রামটির কুকুরগুলোর অনুপস্থিতি। পরে সাতটি কুকুরকে অনাহারে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল। এমনকি মৃতরাও তাদের কবর থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল! গ্রামের একমাত্র কবরস্থানের সব কবর পাওয়া গেল খোদিত অবস্থায়! কিন্তু কবরস্থানের ভিতরে কোনো লাশের দেখা মিলল না। ভিতরের সব লাশ কোথায় যেন উধাও হয়ে গেছে। এটা কোনো প্রাণীর কাজ নয়, কারণ কবরের সঙ্গে যে পাথরের ফলক ছিল সেগুলো যথাস্থানেই ছিল। আশ্চর্যের বিষয় হলো- কী এমন ঘটনা ঘটল যে, গ্রামের সবাই পালাতে বাধ্য হয়েছিল? এর কোনো সঠিকও উত্তর মেলেনি। দ্য রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশকে খবর দেওয়া হলো। মেজর থিওডোর লিস্টোর্টের নেতৃত্বে দ্য রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ পুরো গ্রাম ও আশপাশের এলাকা তন্নতন্ন করে খুঁজল। কোনো গ্রামবাসীকে পাওয়া গেল না। তদন্তকারী পুলিশও দেখে কবরস্থানের কবর খনন করা এবং প্রতিটি লাশই সম্পূর্ণরূপে গায়েব হয়ে গিয়েছিল। আজনিকুনি হ্রদের রহস্য পরবর্তীকালে কানাডার সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী অমীমাংসিত রহস্য হিসেবে থেকে যায়। লেখক জর্জ সাভারভিও, যিনি এই অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ১৯৩১ সালের জানুয়ারিতে নর্থওয়েস্ট জার্নালে এ সংক্রান্ত ৫ পর্বের একটি নিবন্ধ লেখেন। তার ভাষ্যমতে, পুলিশ দেখল, ওই গ্রামের এস্কিমোদের পূর্বপুরুষদের সব কবর খোদিত অবস্থায় আছে আর সেগুলোর ভিতর থেকে লাশগুলো গায়েব! এই গ্রামে আজনিকুনি উপজাতীয় গোত্রের ২০০০ মানুষের বসবাস ছিল। এদের আর কখনো দেখা যায়নি। এখনো আজনিকুনি হ্রদ আছে, আছে শান্ত পরিবেশও। তবে এর পাশেই অবস্থিত গ্রামটি ‘দ্য ভিলেজ অব দ্য ডেড’ নামে পরিচিত।

সর্বশেষ খবর