কুমিল্লায় পিটিয়ে হত্যার পর ঘরের মধ্যেই মাটিচাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল নুরুল ইসলাম (৪০) নামে এক ব্যক্তির লাশ। শিয়াল-কুকুরে মাটি আঁচড়ে বের করে ফেলে একটি হাত। বের হওয়া অর্ধগলিত হাত থেকে আসে তীব্র দুর্গন্ধ। ওই দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখা মেলে গর্তে মানুষের লাশ। ঘটনাটি ঘটে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বারুর-পিরোজপুর গ্রামের সীমান্তে। গতকাল মাটিচাপা দেওয়া অর্ধগলিত লাশটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত নুরুল ইসলাম হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পানিওন্দা গ্রামের মরগিছ ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় নোয়াজ আলী (৬০) নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। নোয়াজ নবীগঞ্জের বড়কান্দি এলাকার আবদুল আলী ছেলে। গতকাল লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দেবিদ্বার থানার ওসি (তদন্ত) শাহিনুল ইসলাম এ তথ্য জানান। জানা যায়, নুরুল ইসলামকে দিনমজুরের কাজের কথা বলে ২১ সেপ্টেম্বর দেবিদ্বার নিয়ে আসেন অভিযুক্ত নোয়াজ আলী। দুজনই থাকতেন চরবাকর-এলাহাবাদ সংযোগ সড়কের সঙ্গে বারুর-পিরোজপুর গ্রামের সীমান্তের একটি ভাড়া ঘরে। নোয়াজ আলী দেবিদ্বারের বিভিন্ন এলাকায় লোক নিয়ে শ্রমিকের কাজ করতেন। জাফরগঞ্জ ইউপি সদস্য মো. নাসির বলেন, ‘লাশ দেখার পর আমরা নোয়াজ আলীকে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় ধরে আনি। তাকে জিজ্ঞাসা করি লোকটা কীভাবে মারা গেল? তিনি এক পর্যায়ে হত্যার দায় শিকার করে বলেন, চার বছর আগে কবিরাজের মাধ্যমে নোয়াজ আলীর ছেলেকে তাবিজ করে মেরে ফেলেন নুরুল ইসলাম। এ থেকেই নোয়াজ আলীর রাগ-ক্ষোভ জন্মায় নুরুল ইসলামের ওপর। সোমবার গভীর রাতে ঘুমন্ত নুরুল ইসলামকে গাছের গুঁড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন। পরে ঘরে মাটিচাপা দিয়ে রাখেন।’
মুদি দোকানদার আলী আকবর, রফিকুল ইসলাম ও স্বপ্না বেগম বলেন, ‘তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। যা সহ্য করার মতো ছিল না। আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। কিন্তু পাইনি। পরে চরবাকর-এলাহাবাদ সংযোগ সড়ক দিয়ে হাঁটাচলার সময় লোকজন দেখতে পায় সড়কের পাশে একটি ঘরে গর্তের মধ্যে মানুষের হাত।’
দেবিদ্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিনুল ইসলাম বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় এনেছিলাম। জিজ্ঞাসাবাদে দুজনের জড়িত থাকার সত্যতা পাইনি। বাকি একজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হওয়ার পর আদালতে পাঠানো হবে।’