রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র আবু সাঈদ জীবন দিয়ে আইকনে পরিণত হয়েছেন। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেন আরেক আইকন। আবু সাঈদের বীরত্ব আর দেশপ্রেম বিস্মিত ও মুগ্ধ করেছে গোটা বিশ্বকে। পুলিশের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন এ সাহসী তরুণ। হাতে ছিল সামান্য একটি লাঠি। তিনি কাউকে আক্রমণ করেননি। অকারণেই পরপর তিনটি গুলি তাকে করে পুলিশ। প্রথম ও দ্বিতীয় গুলি করার পরও তিনি সরেননি। তৃতীয় গুলির পর তাকে তুলে নিয়ে যান ছাত্ররা। গত ১৬ জুলাই কোটাবিরোধী আন্দোলনকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শহীদ হন তিনি। এ আন্দোলনের প্রথম শহীদ তিনি।
গত ১০ আগস্ট রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম বাবনপুরে আবু সাঈদের বাড়িতে যান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সঙ্গে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ। বাংলাদেশ দেখে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। সাঈদের বাড়ির উঠানে প্লাস্টিক চেয়ারে বসে সাঈদের মা-বাবা, আত্মীয়স্বজনের কথা শোনেন প্রধান উপদেষ্টা। চারপাশে ঘিরে ছিলেন গ্রামের অসংখ্য মানুষ। ছিল না কোনো নিরাপত্তাবেষ্টনী। কোনো সরকারপ্রধানের সাধারণ মানুষের মধ্যে বসে এভাবে কথার দৃশ্য আগে এ দেশে দেখিনি। কথা বলতে বলতে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধান উপদেষ্টা। উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম মানুষের মাঝে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদতে থাকেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সাঈদ সবার সন্তান। সাঈদের মা সবার মা, সবার মা সাঈদের মা’। চিরদিন সাঈদের পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। তিনি সাঈদের পরিবারের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন। সম্পূর্ণ আবরণহীন সাদাসিধে এ উপদেষ্টা চারপাশের জনতার উদ্দেশে আন্তরিকভাবে অভিবাদন জানান। এরপর তিনি যান শহীদ আবু সাঈদের বিদ্যাপীঠ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানেও দেখি এক অবাক দৃশ্য! নেই কোনো মঞ্চ, নেই লাখ টাকার ফুল বা সাজসজ্জা। তার জন্য একটি আলাদা চেয়ার রাখা হয়েছিল। তিনি নিজে চেয়ারটি সরিয়ে অন্যদের মতো সাধারণ চেয়ার টেনে বসেন। ছাত্রদের কথা শোনেন, নিজের মতামত জানান। আমরা যে কোনো অনুষ্ঠানে চাকচিক্য মঞ্চভরা ফুল, আলাদা পোডিয়াম দেখে অভ্যস্ত। এসব করতে লাখ লাখ টাকা বেরিয়ে যায় সরকারের। এবার সম্পূর্ণ নতুন চিত্র দেখলাম।
অনেক কিছুই নতুন দেখছি। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন উপদেষ্টামণ্ডলী। এতকাল আমরা দেখেছি ফুলের স্তবকটির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন দেশপ্রধান। এবার দেখলাম স্তবকটির কেন্দ্রে দাঁড়ালেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী দুই উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টা তাদের পাশে দাঁড়ালেন। যারা আন্দোলন করে এ বিজয় আনলেন তাদের প্রতিনিধিদের দেওয়া হলো সর্বোচ্চ মর্যাদা। ইতোমধ্যে আদেশ জারি করা হয়েছে যেন প্রধান উপদেষ্টার ছবি দিয়ে কোনো বিজ্ঞাপন দেওয়া না হয়। তিনি রাস্তা চলাচলে কোনো ভিআইপি প্রটোকল নেন না। দেশের মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে তিনি একা রাস্তায় চলাচল করেন না। তিনি অন্য সবার মতো ঢাকার যানজটের রাস্তায় চলাচল করেন। তিনি বুঝিয়ে দিচ্ছেন দেখানোতে কিছু নেই, আছে কাজে। শুধু ছবি নয়, তার নাম এবং অন্য উপদেষ্টাদের নাম ও ছবি দিয়ে যেন কোনো প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন না দেওয়া হয় সেই আদেশও জারি করা প্রয়োজন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মারা গেছেন অসংখ্য ছাত্র যুবক সাধারণ নাগরিক। তাদের অল্প কজনের কথাই আমরা জানি। জানি না অসংখ্য মানুষের কথা। মুগ্ধ আন্দোলনকারীদের নিজ হাতে পানি খাওয়াচ্ছিলেন। তিনি পরিশ্রান্ত আন্দোলনকারীদের হাতে পানি তুলে দিচ্ছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন পিপাসার্ত ছাত্র-সৈনিকদের পানি দিয়ে তাদের লড়াই করার শক্তি বাঁচিয়ে রাখতে। পানি দিতে দিতেই মারা যান তিনি। অসাধারণ মেধাবী আর চৌকশ মুগ্ধ চলে গেলেন দেশের জন্য। ফারহান রেসিডেনশিয়াল মডেল স্কুলের অসাধারণ মেধাবী এক ছাত্র। আন্দোলনে শহীদ হলো সেও। সে বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। পাবনায় রাফি নামে একজন ভাই মারা গেছেন। তার বাবা নেই। আছেন একমাত্র বোন। তিনি মারা যাওয়ার আগে আরজি জানিয়ে গেছেন যেন তার বোনের দায়িত্ব কেউ নেয়। তারিক নামে আরেক ভাই মারা গেছেন। তার স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। এটাই তাদের প্রথম সন্তান। এমন অসংখ্য সাঈদ, মুগ্ধ, ফাইয়াজ জীবন দিয়েছেন আন্দোলনে। তাদের সবার নাম আমরা জানি না। অনেকে আন্দোলনে গুলি খেয়ে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানেই মারা গেছেন। তাদের অনেকেরই মৃত্যুসনদ নেওয়া হয়নি। এরাও কিন্তু এ লড়াইয়ের শহীদ। এদের কথা ভুললে চলবে না। এদের একজনের নাম ইমন। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরে মারা যান। ইমনের বাড়ি মুরাদনগর। আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। তালিকা প্রণয়ন করা প্রয়োজন আহতদের। জানি ইতোমধ্যে তালিকা প্রণয়নের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। আহতদের চিকিৎসার ভার নিয়েছে সরকার। মুক্তিযুদ্ধের পর পর তালিকা প্রণয়ন করা হলে আজ এত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার জন্ম হতো না। আমরা চাই জুলাই আন্দোলনে যেন তেমন ঘটনা না ঘটে।
শুরু হয়েছে নানাবিধ ষড়যন্ত্র। পুলিশ কাজ করছিল না অনেক দিন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তাদের দাবি-দাওয়া পূরণের আশ্বাস দেওয়ার পর কাজ করছে। দেশব্যাপী শুরু হয়েছিল বিশৃঙ্খলা, ডাকাতিও হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় মন্দির ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। কঠোরভাবে এ প্রবণতা রোধ করেছে ছাত্র-জনতা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা চার দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন। তাদের দাবির মধ্যে সংসদে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য ১০% কোটা সংরক্ষণের দাবিও আছে। অবাক হলাম। যে কোটাবিরোধী আন্দোলন গণ অভ্যুত্থানে পরিণত হয়ে বিগত সরকারের পতন হলো সেই কোটাই তারা চাইছেন! চাইছেন পৃথক মন্ত্রণালয়। এ বিভাজন তারা কেন চাইছেন একই দেশে বাস করে? যেখানে মাদরাসার ছাত্র আর সাধারণ জনগণ তাদের বাড়িঘর মন্দির পাহারা দিচ্ছেন সেখানে কেন তারা রাজপথে? তাছাড়া সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার যেসব ছবি দেখানো হচ্ছে তার অধিকাংশ ভুয়া। ভারত থেকে তা প্রচার করা হচ্ছে। এর আগেও তো বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তখন তো তারা এমন আন্দোলন গড়ে তোলেননি! তাহলে আজ কেন? সংগত কারণেই এ প্রশ্ন এসে যায়। আসলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করছে কোনো একটি পক্ষ। ভালোমন্দ নির্বিশেষে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, লুটপাট হয়েছে, শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, হত্যা করা হয়েছে, পুড়িয়ে মারা হয়েছে। একটা দলের সবাই খারাপ নন। কিন্তু ঝড়ে বক পড়ার মতো তারাও নির্যাতিত হয়েছেন। এ নির্যাতন আর যারাই হোক, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্ররা করেননি। ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা সংখ্যালঘু আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে বলেছেন, হিন্দু মুসলিম বলে কিছু নেই, সবাই মানুষ। মানুষ হিসেবে তাদের অধিকারের কথা বলতে বলেছেন তিনি। বিভিন্ন কারাগারে বিক্ষোভ হয়েছে, আসামি পালিয়ে গেছে। কিছু আসামি ধরাও পড়েছে। বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা-কমর্চারীরা নানান দাবি-দাওয়া তুলে বিক্ষোভ করছেন। ইসলামী ব্যাংকে গোলাগুলি হয়েছে।
সরকার সবে কাজে হাত দিয়েছে। তাদের একটু সময় তো দিতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা সমস্যা এক দিনে দূর করা সম্ভব নয় সেটা বুঝতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগেই বিভিন্ন দল বড় বড় সভা ডেকে নিজেদের অস্তিত্ব আর দাবি-দাওয়া প্রকাশ করেছে। সবকিছু কেমন যেন একটি সাজানো ঘটনার মতো একের পর এক ঘটছে।
বঙ্গবন্ধু মিউজিয়ামে আগুন দেওয়া হয়েছে। লুটপাট হয়েছে গণভবনে। সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সেতু ভবন, মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর হয়েছে। ভাঙা হয়েছে অসংখ্য ভাস্কর্য। ছাত্ররা বারবার বলেছেন, এসব ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের সঙ্গে তারা জড়িত নন। এসব ঘটনা যখন ঘটে তখন তারা ছিলেন শাহবাগে। ছাত্ররা বরং লুট হওয়া জিনিসপত্র ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতোমধ্যে বেশ কিছু জিনিস ও টাকা ফেরত পাওয়া গেছে। ঘটনাগুলো কারা ঘটিয়েছে জানি না। তবে যারাই করে থাকুক দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য করেছে। বঙ্গবন্ধু ভবন পুড়িয়ে দেওয়ায় ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। যারা এ কাজ করেছে তাদের বোঝা উচিত ছিল এটা কারও বাড়ি নয়- মিউজিয়াম, জনগণের সম্পত্তি। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে যারা অপমান করেছে তারা কুরুচির মানুষ। ছাত্ররা পরে ঠিকই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে মালা পরিয়ে এসেছে।
ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়ে গেছে নানান আলোচনা। যারা কোটা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা ছাত্র নন, একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য, দেশের সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে তারা প্রতারণা করেছেন। উপদেষ্টাদের কারও কারও চরিত্র নিয়ে লম্বা লম্বা লেখা হচ্ছে, তাদের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে সংযুক্তির বিষয়ও উঠে আসছে, উপদেষ্টা নির্বাচনে বৈষম্য, উপদেষ্টা নির্বাচনেও কাজ করেছে কোটা পদ্ধতি, টাকা-পয়সার লেনদেন হয়েছে ইত্যাকার বহুবিধ কথা আসছে ফেসবুকে।
এ ধরনের আলোচনা যে কোনো সরকার গঠনের পরই হয়, এটা নতুন নয়। তবে এবার যেন বড় বেশি হচ্ছে। আমার কথা হচ্ছে, তারা যদি ছাত্র না হন, তবে ছাত্র প্রতিনিধি তারা, রাজনৈতিক দলের সদস্য কি না এসব নিয়ে আমি ভাবতে চাই না। গোটা দেশের মানুষ তাদের ম্যান্ডেট দিয়েছেন, তাদের ডাকে পথে নেমে এসেছেন, জীবন দিয়েছেন। এখনো তারা পথে ট্রাফিকের কাজ করছেন, শহর রাঙাচ্ছেন নানা রঙে, বাজার মনিটরিং করছেন। এর জন্য তারা কারও কাছ থেকে এক পয়সা নেননি। পুলিশবিহীন দেশে অনেক দিন তারা সামাল দিয়েছেন।
জনগণ ছাত্রদের নিয়ে খুব খুশি। তারা বলছেন, ছাত্রদের কোনো প্রশিক্ষণ নেই। তারপরও তারা আগের চেয়ে অনেক ভালো চালাচ্ছেন। অসংখ্য লোক তাদের খাবার আর পানি দিচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে এক পয়সাও খরচ হচ্ছে না। যাদের ডাকে এত বড় ঘটনা ঘটেছে তাদের প্রতি আস্থা রাখতে চাই আমি। আমি বিশ্বাস করি, তারা পারবেন।
ছাত্রদের আন্দোলন এবং বিজয়কে স্বাগত জানানোয় দু-একজন আমার ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এ বিষয়ে আমার বক্তব্য স্পষ্ট। আমি রাজনীতি করি না, কোনো দিন করিনি, তবে রাজনীতি সচেতন, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, মৌলবাদকে ঘৃণা করি। বিগত সরকার আমলেও আমি তাদের অনিয়ম ও অনাচারের সমালোচনা করে কলাম লিখেছি। অনেক সময় সেই কলাম ছাপা হয়নি। লেখার জন্য নানারকম অসুবিধায় পড়তে হয়েছে আমাকে। ভালো যা যা করেছে সেগুলো নিয়েও সবিস্তারে লিখেছি। বিএনপি সরকারের আমলেও আমি তাদের অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে লিখেছি। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হত্যাকাণ্ড নিয়ে লেখায় অফিশিয়ালি অনেক ভুগতে হয়েছে আমাকে। আমি থামিনি। সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে লেখায় একই রকম ঘটনা ঘটেছে। জাতীয় পার্টির আমলেও সত্যকথনের জন্য আমাকে ভুগতে হয়েছে। আমি কেউ ভালো করলে ভালো বলি। দল সাপোর্ট করা ভালো, অন্ধত্ব ভালো নয়। এ সরকার সবে এসেছে। যদি কোনো অন্যায় আমি দেখি, অবশ্যই এদেরও সমালোচনা করব। মত প্রকাশের অধিকার সবার আছে। ছাত্ররাও সে কথা বলেছেন। বরং তারা আরও ঊর্ধ্বে উঠে বলেছেন, দ্বিমত প্রকাশের অধিকার তারা চান। কাজেই আমি দ্বিমত হলে অবশ্যই দ্বিমত পোষণ করব। একসঙ্গে সবার মন রাখা সম্ভব নয়, উচিতও নয়। এটা করে সুযোগসন্ধানীরা। সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলা উচিত।
আমি আশা করি আন্দোলনকালে যে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছিল তা বর্তমান সরকার পালন করবে। যে বিশ্বাসে দেশবাসী ছাত্রদের ওপর আস্থা রেখেছেন সে বিশ্বাসের মূল্য ছাত্ররা দেবেন। আবু সাঈদদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। আবু সাঈদরা সবার সন্তান হয়েই বেঁচে থাকবেন।
লেখক : কথাশিল্পী, গবেষক