ইরাক ও ইরানের আরব অঞ্চলে কার্পেটশিল্পের প্রসার ঘটে ইসলাম আগমনের বহু আগে। প্রাচীনকাল থেকেই ইরাকের উন্নতমানের পশম ও সুতার সুখ্যাতি ছিল আরবে। ইসলাম আগমনের পর কার্পেটশিল্পের সঙ্গে যুক্ত হয় জায়নামাজশিল্প। দৃষ্টিনন্দন কার্পেট ও জায়নামাজ তৈরি হতো এ অঞ্চলে।
বিশ্বের বিভিন্ন রাজদরবারে তা শোভা পেত। আর্মেনিয়া অঞ্চলের তাঁতিরা আরব অঞ্চল থেকে উন্নতমানের পশম নিয়ে সুতা তৈরি করত এবং তা দিয়ে পাটি তৈরি করত। মিসান অঞ্চলেও তৈরি হতো উন্নতমানের পাটি। রেশমি পর্দা, বিছানার চাদর, গালিচা, বালিশ ইত্যাদিও তৈরি হতো বিস্তৃত আরব অঞ্চলে।
হিরা শহরটি ছিল স্বল্পমূল্যের মানসম্পন্ন কাপড়ের কারখানা, যাকে তানাফিস বলা হতো। মুসলিম শাসনামলেই আরবে রঙিন ও ছাপার পোশাকের প্রচলন হয়। এসব পোশাকে ফুল, গাছ, পাখি ও প্রাণীর ছবি থাকত। মসুলে উৎপন্ন পর্দা ও পাপোশ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি হতো।
জাহেজ, আত-তাসসুর বিল তিজারা, পৃষ্ঠা-৩২; আসরুন নুহদা ফিল ইসলাম, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৩০৪)
মিসরের ফুয়ুম শহর মূল্যবান পর্দা, দীর্ঘ বিছানা, পশমের তাঁবুর জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। কখনো কখনো একটি পর্দার দৈর্ঘ্য ৩০ গজেরও বেশি হতো। তার মূল্য হতো ৩০০ স্বর্ণমুদ্রারও বেশি। হিরাব ও আর্মেনিয়া অঞ্চলেও উন্নতমানের কার্পেট ও জায়নামাজ তৈরি হতো। ইবনে জাওঝি ২৯৯ হিজরির ঘটনাপ্রবাহের বর্ণনায় লিখেছেন, ‘আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান অঞ্চলের গভর্নর ইউসুফ বিন আবিস-সাজা খলিফা মুকতাদির বিল্লাহর কাছে যে উপঢৌকন পাঠান তাতে আর্মেনীয় বিছানার চাদরও ছিল।
একটি বিছানা পাঠিয়েছিলেন, যার দৈর্ঘ্য ৭০ গজ এবং প্রস্থ ৬০ গজ ছিল। প্রায় ১০ বছর সময়ে তা তৈরি হয়। কেউ তার মূল্য নির্ধারণ করতে পারছিল না।’ (ইবনে জাওঝি, আল মুনতাজিম ফি তারিখিল মুলুকি ওয়াল উমাম, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-১১০)
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ