রাজধানীর শান্তিনগরের নিজ বাসা থেকে এনটিভির বার্তা সম্পাদক সীমান্ত খোকনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বিকালে শয়নকক্ষে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস নেওয়া অবস্থায় তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চামেলীবাগের ২৩ নম্বর বাড়ির অষ্টম তলায় থাকতেন সীমান্ত খোকন। তাঁর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার দামিহা ইউনিয়নে। ঘটনার সময় পরিবারের সদস্যরা বাসায় ছিলেন। তবে সবার অগোচরে তিনি গলায় ফাঁস নেন। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সীমান্ত খোকন দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫১ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন, সহকর্মী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে কর্মস্থল এনটিভিতে শ্রদ্ধা জানানো হবে। এরপর গ্রামের বাড়ি পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
ডিএমপির পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিরুল আমীন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তিনি আরও বলেন, সকাল থেকে সীমান্ত খোকনের রুমের দরজা বন্ধ ছিল। দুপুর দেড়টার দিকে পরিবারের সদস্যরা চাবি দিয়ে রুমে প্রবেশ করে দেখেন, তিনি ফ্যানের সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস নিয়েছেন। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ছিলেন সীমান্ত খোকন। এ ছাড়া তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ক্রীড়া সম্পাদক এবং কিশোরগঞ্জ সাংবাদিক ফোরাম ঢাকার সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। জানা গেছে, সীমান্ত খোকন দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। পুলিশের ধারণা, অসুস্থতা এবং নানা বিষয় নিয়ে মানসিকভাবে অস্বস্তিতে ছিলেন সীমান্ত খোকন। এ ঘটনায় সীমান্ত খোকনের ছেলে পল্টন থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন। জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি হাসান হাফিজ ও সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সীমান্ত খোকনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। অন্যদিকে এক শোকবার্তায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সীমান্ত খোকনের মৃত্যুতে তাঁর পরিবার-পরিজনদের মতো আমিও গভীরভাবে সমব্যথী। সৎ ও নিষ্ঠাবান সাংবাদিক হিসেবে দায়িত্ব পালনে তিনি ছিলেন আপসহীন। পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার কর্তৃক গণতন্ত্রহরণ ও গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের গণবিরোধী আচরণের বিরুদ্ধে তিনি সব সময়ই ছিলেন সোচ্চার। সাংবাদিকতার পেশাগত দায়িত্ব পালনে বরাবরই ছিলেন নির্ভীক ও দ্বিধাহীন। বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।