সিরিয়ার উপকূলীয় শহর লাটাকিয়ায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গতকাল সকালের দিকে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে। একই দিনে ইয়েমেনে অত্যাধুনিক বোমারু বিমান বি-৫২ থেকে হুতিদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রায় এক মাস ধরে লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাত চলছে; এর মাঝেই ইয়েমেনে এ হামলা চালাল মার্কিন সামরিক বাহিনী। লেবাননেও ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। সূত্র : এএফপি, রয়টার্স
সিরিয়া, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী, লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের অন্যতম মিত্রশক্তি হিসেবে পরিচিত। ১ অক্টোবর ইসরায়েলে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। এ ছাড়া প্রায় প্রতিদিন ইরানের মিত্র গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েলি ভূখ লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে।
এদিকে দক্ষিণ লেবাননের লাবোউনে গ্রামে নিজেদের পতাকা উত্তোলন করেছে ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইসরায়েলের সেনারা। ভিডিওতে পতাকা উত্তোলনের সময় ইসরায়েলি সেনাদের উল্লাস করতে দেখা গেছে। ওই ফুটেজে এক সেনা হাত মুঠো করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ এবং পতাকা উত্তোলন উদ্যাপন করেন। এর মাধ্যমে ইসরায়েলি সেনারা হয়তো প্রতীকীভাবে তাদের উপস্থিতি এবং শক্তির জানান দিতে চেয়েছে। খবরে বলা হয়, একটি স্মৃতিস্তম্ভে এ ঘটনা ঘটানো হয়, যেটি ২০০৬ সালে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধের সমাপ্তির স্মারক হিসেবে স্থাপন করা হয়েছিল। খবরে এও আশঙ্কা করা হয়, এ ধরনের উসকানিমূলক কর্মকা সীমান্ত এলাকার উত্তেজনা আরও বাড়াবে। এদিকে লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধারা জানায়, ইসরায়েল-অধিকৃত শেবা ফার্মের লেবানন-সিরিয়া সীমান্তবরাবর আল-সাদানায় ইসরায়েলি সেনাদের সমাবেশ লক্ষ্য করে এক দফা হামলা চালিয়েছে তারা।
ইরানের হুঁশিয়ারি : ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডসের প্রধান হোসেন সালামি আবারও ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েল যদি ইরানি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় তবে দেশটিকে আবার জবাব দেওয়া হবে। গতকাল বিপ্লবী গার্ডসের জেনারেল আব্বাস নিলফোরুশানের জানাজায় অংশ নিয়ে হোসেন সালামি এ হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, ‘আপনারা (ইসরায়েল) যদি ভুল করে ফেলেন এবং এ অঞ্চলে বা ইরানে আমাদের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালান, তবে আমরা আবারও যন্ত্রণাদায়ক হামলা চালাব।’ আরেক খবর অনুযায়ী, ইসরায়েলি নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, হিজবুল্লাহর নৌশক্তি এখনো কার্যকর রয়েছে। তাদের হাতে ইসরায়েলে হামলা চালানো সম্ভব নেভাল ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে। ইসরায়েলের দাবি, ইরানের সমর্থনে হিজবুল্লাহ একটি গোপন নৌ ইউনিট তৈরি করেছে। তবে আইডিএফ তাদের সক্ষমতার কিছু অংশ ধ্বংস করেছে। এর পরও তাদের অত্যাধুনিক সক্ষমতা রয়ে গেছে। তাদের কাছে উপকূলে অভিযান ও জাহাজে হামলা চালানোর মতো অস্ত্র রয়েছে। এ ছাড়া হিজবুল্লাহর উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র ও রাডার রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, হুতিদের ব্যবহৃত নৌ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দেখে পশ্চিমা অনেক গোয়েন্দা সংস্থা অবাক হয়েছে। এটির নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানার ইলেকট্রো-অপটিক্যাল ক্ষমতা রয়েছে; যা ব্যাপক উচ্চতা থেকে তীক্ষè কোণে জাহাজের ওপর নেমে আসে। ফলে নেভাল আয়রন ডোম দিয়ে এর মোকাবিলা করা নতুন চ্যালেঞ্জ।