সীমান্ত দিয়ে বেআইনিভাবে আগমণ ঠেকাতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি কঠোর পরিশ্রমী অভিবাসীদের উচ্চ বেতনের চাকরির পথ সুগম এবং দ্রব্যমূল্য ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার লক্ষ্যে কাজের সংকল্প ব্যক্ত করলেন রিপাবলিকান পোল কিং।
নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের জ্যামাইকা, কুইন্স ভিলেজ, রোজডেল ভিলেজ, সাউথ জ্যামাইকা, হলিস, রিচমন্ডহিল, ব্রডচ্যানেল, ক্যাম্ব্রিয়া হেইটস, হাওয়ার্ড বিচ, কিউ গার্ডেন, লোরেলটন, সেন্ট আলবেন্স, স্প্রিংফিল্ড গার্ডেন, জেএফকে এয়ারপোর্ট এবং ওজোনপার্কের অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-৫ থেকে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী পোল কিং ২৫ অগাস্ট এক সংবাদ সম্মেলন করেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ অ্যামনেস্টি দেওয়া হয় ১৯৮৬ সালে। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিগ্যান সেটি দিয়েছিলেন। এরপর ডেমক্র্যাটরা অনেক চাপাবাজি করেছেন, কিন্তু কেউই কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের দুর্দশা লাঘবে আন্তরিক অর্থে ন্যূনতম পদক্ষেপ নেয়নি। অধিকন্তু অনেক ক্ষেত্রেই কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। তাই নভেম্বরের নির্বাচনে যদি জয়ী হতে পারি এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প যদি বিজয়ী হন তাহলে নিশ্চয়ই অভিবাসনের ভঙ্গুর অবস্থাকে ঢেলে সাজাতে সরব থাকব।
জ্যামাইকার হিলসাইডে ধানসিড়ি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে রিপাবলিকান পোল কিং-কে উপস্থাপন করেন কমিউনিটি লিডার শরাফ সরকার। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশি আমেরিকান রিপাবলিকান পার্টির প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মেরাজ এবং সেক্রেটারি এহসান রহমান খোকন। বিশিষ্টজনদের মধ্যে আরও ছিলেন কমিউনিটি নেতা ওসমান গণি।
পোল কিং বলেন, আমি কংগ্রেসে লড়ছি বিরাট একজন ব্যবসায়ী হিসেবে নয়, প্রিয় পরিচিত এলাকাবাসীর ঘনিষ্ঠ একজন হিসেবে। কারণ, সময়ের বিবর্তনে আমেরিকান স্বপ্ন অনেকেরই ভেঙে চৌচিড় হয়েছে। এ অব্স্থার অবসান ঘটিয়ে আমাদের সন্তান, নাতি-পুতিদের জন্য বসবাসের উপযোগী একটি আমেরিকা গড়ার বিকল্প নেই। এবং তা হতে পারে বৈধ-অবৈধ সকলের জন্যই।
তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থাকেও ঢেলে সাজাতে চাই। বর্তমানে কুইন্স এবং লং আইল্যান্ডের অনেক হাই স্কুলেই লেখাপড়ার মান উন্নত নয়। বিশেষ করে অংকে সকলেই কাচা।
পোল কিং বলেন, ডিগ্রি গ্রহণ করেও অনেকে প্রত্যাশিত চাকরি পাচ্ছেন না। ব্যবসা শুরু করবেন-এমন অর্থের সংস্থানও নেই অনেকেরই। ফলে আমেরিকান স্বপ্ন থমকে থাকছে বছরের পর বছর। আর এই অবিশ্বাস্য সংকট তৈরি হয়েছে রাষ্ট্রীয় নীতি-নির্ধারকদের ব্যর্থতার জন্য। তারা যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণে সক্ষম হননি।
রিপাবলিকান এই নেতা বলেন, ট্যাক্সের অর্থ কল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে না। যুদ্ধ লাগিয়ে দিয়ে ব্যবসার নামে ফায়দা লুটার ফাঁদ পাতা হলেও মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি সাধারণ আমেরিকানরা।
পোল কিং বলেন, এভাবেই দু’বছর পরপর নির্বাচন আসে, আপনারা একেকজনের প্রতিশ্রুতির বন্যায় অভিভূত হয়ে ভোট দেন। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
পোল কিং আরও উল্লেখ করেন, এক্ষুণি যদি সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হই তাহলে নাতি-পুতিদের হাতে ভিক্ষার ঝুলি উঠতে বাধ্য। কারণ, শিগগিরই জাতীয় দেনার পরিমাণ ৫ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
আগে থেকেই ১১ মিলিয়নের অধিক কাগজপত্রহীন বিদেশির সমস্যা সমাধানে নজর না দিয়ে গত ৩ বছর সীমান্ত খুলে দেওয়ায় লাখ লাখ বিদেশি ঢুকে পড়েছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। সিটিজেন অথবা বৈধ অভিবাসীর কাজ আরও কম পারিশ্রমিকে বেআইনিভাবে ঢুকে পড়া বিদেশিরা লুফে নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, বাইডেন প্রশাসন অনেক বিদেশিকে (যারা বেআইনিভাবে ঢুকেছে) পাঁচ তারকা হোটেলে রাখছেন। খাবারের জন্য নগদ অর্থ সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন ইতালি বংশোদ্ভূত আমেরিকান পোল কিং।
তিনি বলেন, ট্যাক্স প্রদানকারীদের চেয়ে বেআইনিভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারীরা বেশি সুবিধা পাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি রুখে দিতেই সামনের নির্বাচনে আমি বিজয়ী হতে বাংলাদেশি আমেরিকানদের সমর্থন চাচ্ছি।
বিডি প্রতিদিন/একেএ