রূপচর্চায় নির্দিষ্ট রুটিন থাকা চাই। একটু গুছিয়ে, সময় নিয়ে ত্বক এবং চুলের যত্ন নিতে প্রয়োজন এ রুটিন। এতে যেন বাদ না থাকে ছোটখাটো বিষয়ও। সৌন্দর্যের প্রতি আমাদের স্বাভাবিক সচেতনতা আর অভিজ্ঞ পরামর্শদাতার বেঁধে দেওয়া নিয়ম মেনে তৈরি করতে হবে এ রুটিন...
সারা সপ্তাহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই বলে রূপকাহনে অবহেলা! এর প্রভাব তো ত্বকের ওপর পড়বেই। কিন্তু সপ্তাহের এক দিন মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময় হাতে রাখলেই হলো। মাত্র এক দিন একটু সময় করে যত্ন নিলে, সারা সপ্তাহের সমস্যা মিটে যাবে। তন্মধ্যে আর্দ্র ও গরম আবহাওয়া, সপ্তাহজুড়ে নিজেকে সজীব রাখার জন্য কী কী জরুরি, কীভাবেই বা সেই উপকরণগুলো ব্যবহার করবেন, তা নিয়ে আমাদের আজকের এ আলোচনা।
শুরুটা হোক চুল থেকে
সারা সপ্তাহের রোদ-বৃষ্টি আর ধুলোবালি মাথায় নিয়ে কর্মে দৌড়ঝাঁপ করতে হয়। তার ওপর বাড়তি ঝামেলা নিয়মিত হেয়ার টুলসের ব্যবহার। নিয়মিত অবহেলায় থাকা চুল সুস্থ রাখতে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি ডিপ কন্ডিশনিং মাস্ক ব্যবহার করলে অনেক সমস্যাই মিটবে। এতে চুলের রুক্ষতা এবং নির্জীবতা কমবে। তবে আগের রাতটাকে এ ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারলে আরও ভালো ফল পাবেন। আগের রাতে একটু সময় নিয়ে মাথার স্ক্যাল্পে কুসুম গরম তেল ম্যাসাজ করুন। অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেল হলেই চলবে। পরদিন সকালে এক চা-চামচ অলিভ অয়েল, একটা ডিম, এক চা-চামচ মধু এবং একটা পাকা কলা ভালোভাবে চটকে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি ভালোভাবে মাথায় দিয়ে শাওয়ার ক্যাপ পরে নিন। আধা ঘণ্টা শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করে চুল ধুয়ে নিন।
এর পরই ত্বকের সমাধান
সারা সপ্তাহ ত্বকে কেবল ফেসওয়াশ! সপ্তাহের শেষে সেই ত্বকের বাড়তি যত্ন না নিলেই নয়। এ ক্ষেত্রে ফেসিয়াল মাস্কই বেস্ট অপশন। যাই করুন, ত্বকের সমস্যা বুঝে তবেই ব্যবস্থা নিন। এক টেবিল চামচ অ্যাভোকাডোর ক্বাথ, এক টেবিল চামচ টকদই এবং এক টেবিল চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি চোখ বাদে পুরো মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এরপর ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে ভুলবেন না। সানবার্নের সমস্যা থাকলে একটি পাত্রে ২-৩ চামচ শসার রস, একটা ডিমের সাদা অংশ, একটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং এক চা-চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগান। মাত্র ১৫ মিনিট রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
চোখের নিচে কালো দাগ?
অতিরিক্ত কাজের চাপ, হতাশা, রাত জাগা, অনিয়ম ইত্যাদির কারণে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে। দুটো ব্যবহার করা গ্রিন টি ব্যাগ খানিকক্ষণ ফ্রিজারে রেখে ঠান্ডা হলে তা চোখের ওপর ১০ মিনিট রাখুন। সম্ভব হলে এ ক্ষেত্রে দুধের আইসকিউবও ব্যবহার করতে পারেন।
সঙ্গে ফেসিয়াল এক্সারসাইজ
সারা সপ্তাহ না পারেন অন্তত ছুটির দিন ফেসিয়াল এক্সারসাইজ করুন। যা ত্বকের যৌবনতা ধরে রাখবে। এতে ত্বক হবে মসৃণ, বলিরেখামুক্ত। পাশাপাশি মুখের মেদও কমবে। মুখ ‘ঙ’ আকারে খুলুন এবং তারপর হাসার মতো আড়াআড়িভাবে টানটান করুন। এমনভাবে করবেন, যাতে দাঁত ঠোঁটের ভিতর থাকে, বাইরে থেকে দেখা না যায়। চোখের ফোলাভাব কমাতে দুহাতের মধ্যমা রাখুন ভুরুর মাঝে এবং তর্জনী রাখুন চোখের বাইরের কোণে, অর্থাৎ ‘ঠ’ আকারে। এবার চোখ ওপরের দিকে করুন, মাথা তুলবেন না। এরকম অবস্থাতেই আইবল চোখের ভিতরের কোণে আনুন। ৫ সেকেন্ড রেখে রিল্যাক্স করুন। এভাবে ৫-৬ বার রিপিট করুন।
চাই হাত-পায়েরও যত্ন
পেডিকিউর বা মেনিকিউর সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, তাই সারা সপ্তাহে এর জন্য সময় বের করা কঠিন। এমতাবস্থায় সপ্তাহ শেষে অবশ্যই হাত-পায়ের যত্ন নিন। প্রথমে হাত ও পায়ের নখ পরিষ্কার করে নিন। নেলপলিশ লাগানো থাকলে তা তুলে নিন। এরপর নখ কেটে ফাইল করে নিন। এরপর হাতে এবং পায়ের পাতায় ভালোভাবে নারিকেল তেল ম্যাসাজ করুন। গোসলের সময় পায়ে পিউমিস স্টোন ব্যবহার করে গোড়ালি ঘষে নিন। এতে মৃত কোষ উঠে আসবে এবং পা ফাটার সমস্যা থাকলে, তাও কমবে। পা ফাটার সমস্যা থাকলে খানিকটা দুধের সর, এক চা-চামচ মধু এবং কয়েক ফোঁটা পাতিলেবুর রস মিশিয়ে ফাটা অংশে লাগিয়ে নিন।