২০ বছর বয়সে খিলাফত
ইসলামের ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত চরিত্র হারুন অর রশীদ। ৭৬৩ অথবা ৭৬৬ সালের ১৭ মার্চ আব্বাসীয় খিলাফতের অধীনস্থ রাই নামক অঞ্চলে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আল মাহদী ও মায়ের নাম খাইজুরান। বাল্যকালে তিনি ইয়াহিয়া বর্মাকের কাছে বিদ্যা শিক্ষা লাভ করেন। বড় হয়ে শিক্ষাগুরু ইয়াহিয়ার মতই একজন প্রতিভাবান ব্যক্তি হিসেবে পরিণত হন হারুন অর রশীদ। ৭৮৬ সালে হাদির মৃত্যুর পর আব্বাসীয় বংশের ৫ম শাসক হিসেবে ২০ বছর বয়সে খিলাফতের মসনদে আরোহণ করেন তিনি। দক্ষতার সঙ্গে দীর্ঘদিন শাসন করার পর ৮০৯ সালে তুস নগরীতে মৃত্যুবরণ করেন। সেখানেই তাকে সমাধিস্থ করা হয়। মৃত্যুর সময় তিন ছেলেকে রেখে যান। তারা আমিন, মাপুন ও মুহতাসীম। তার ইচ্ছা অনুযায়ী পরবর্তী শাসক হিসেবে মনোনীত হন তার ছেলে আমিন। দাম্পত্য সঙ্গী ছিলেন জুবাইদা। হারুন অর রশীদের শাসনকালে বিজ্ঞান, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির জন্য তার শাসনকালকে আব্বাসীয় খিলাফতের স্বর্ণযুগ বলা হয়ে থাকে। এ সময় ইসলামী শিল্প ও সংগীতের যথেষ্ট প্রসার হয়। তিনি বাগদাদের বিখ্যাত গ্রন্থাগার বাইতুল হিকমাহ প্রতিষ্ঠা করেন। তার শাসনামলে বাগদাদ জ্ঞান, সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের কেন্দ্র হয়ে ওঠে। এ সময় আব্বাসীয় খিলাফতের প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখা বারমাকি পরিবারের ভূমিকা হ্রাস পেতে শুরু করে। ৭৯৬ সালে তিনি বর্তমান সিরিয়ার রাকা শহরে তার দরবার ও সরকারকে স্থানান্তর করেন। হারুন অর রশীদের শাসনকালে অন্যতম ঘটনা হলো আফ্রিকায় বিদ্রোহ দমন। হারুন অর রশীদ ক্ষমতায় আরোহণ করার পর পরই সেখানে বিদ্রোহ দেখা দেয়। বিদ্রোহ দমন করার জন্য হারসামাকে পাঠান। হারসামার অসাধারণ রণনৈপুণ্যে সেখানে বিদ্রোহ দমন করেন এবং ইব্রাহিম ইবনে আগলাবকে সেখানকার শাসক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। এর পরবর্তীতে সেখানে বংশানুক্রমিকভাবে আগলাবি শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
হারুন অর রশীদ বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক ও সামরিক দিক দিয়ে সমৃদ্ধিশালী হওয়ায় তার জীবন ও দরবার বিভিন্ন গল্পের উপাদানে পরিণত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি বহুল প্রচলিত গল্প হলো ক্ষুধার্ত মহিলাকে খাবার প্রদান।
- একরাতে নৈশভ্রমণে বের হয়েছেন খলিফা। মূলত এ ভ্রমণে তিনি রাজ্যের নাগরিকের সুখ-দুঃখের খোঁজ নিতেন। সে রাতে ছিল চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। কিছু দূর যেতেই বাচ্চাদের কান্নার শব্দ শোনা গেলেও অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে সামনের দিকে এগোতে হলো। বেশ কিছু বালুময় বিস্তীর্ণ পথ পাড়ি দেওয়ার পর কান্নার আওয়াজ আসা স্থানটি নির্ণয় করা গেল। দেখা গেল নিভুনিভু আগুনের চিহ্ন। আরও কিছু দূর এগিয়ে গিয়ে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে পুরো ঘটনা অবলোকন করার চেষ্টা করছেন খলিফা ও তার সঙ্গী। প্রথম বোঝা গেল এক মহিলা চুলায় কিছু রান্না করছেন। তার পাশে দুই শিশু খাবারের জন্য কান্না করছে। অথচ মহিলাটি বাচ্চাদের অতিশিগগিরই খাবার দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। এভাবে বেশকিছু সময় অতিবাহিত হলো। তারা দুজন ঠায় দাঁড়িয়ে এসব চিত্র দেখে যাচ্ছেন। এসব চিত্র দেখার ফাঁকেফাঁকে তারা নিজেদের মধ্যে কিছু ছোট ছোট আলাপও করছেন। এরই মধ্যে তাদের কাছে আরও স্পষ্ট হলো বিষয়টি। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরও বাচ্চাদের দেওয়া মহিলার স্বল্প সময়ের আশ্বাস ফুরাচ্ছে না। তখন তারা আগন্তুক হিসেবে মহিলার দিকে এগিয়ে গেলেন। একজন আগন্তুকের বয়স খানিকটা বেশি হলেও অপরজন ছিল যুবক। আগন্তুকরা জিজ্ঞেস করল বাচ্চাদের এভাবে কান্নার প্রকৃত কারণ কী?
তখন মহিলা অত্যন্ত অসহায়তার সঙ্গে বলতে লাগলেন, এই দুই বাচ্চা আমার সন্তান, আমার স্বামী যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। আমি সারা দিন চেষ্টা করেও তাদের জন্য কোনো খাদ্য সংগ্রহ করতে পারিনি। তাই তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য পাতিলের মধ্যে পাথর সিদ্ধ করছি এবং অপেক্ষা করছি কখন তারা কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ে। তখন আগন্তুকদের মধ্যে প্রথমজন খুব মর্মাহত হলেন এবং পাশের যুবককে তাদের খাবারের জন্য নিজ কাঁধে করে আটা এবং খেজুর নিয়ে আসার নির্দেশ দিলেন। অল্প সময়ের মধ্যে খাদ্য নিয়ে ফিরে এলেন যুবক। এর অল্প সময় পরই মহিলা জানতে পারলেন তার জন্য খাদ্য বহন করে নিয়ে আসা ব্যক্তিই খলিফা হারুন অর রশীদের পুত্র মুহতাসীম।
রাজনৈতিক অবদান
হারুন অর রশীদ আব্বাসীয় খিলাফতের মসনদে আরোহণ করার অল্পদিনের মধ্যেই খারেজিরা বিদ্রোহ শুরু করে। মসুল থেকে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানে ছড়িয়ে পড়া এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আল ওয়ালিদ। হারুন অর রশীদ প্রথমে তাকে দমন করলেও উত্তরাধিকারী হিসেবে লায়লা নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তখন ইরাক পর্যন্ত এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। খারেজিদের এই তীব্র আন্দোলন দমন করার জন্য খলিফা কঠোর নীতি গ্রহণ করেন। খারেজিদের পরাজিত করে লায়লাকে স্বাভাবিক নারীসুলভ জীবনে ফিরে যেতে সুযোগ দেন। এতে খারেজি আন্দোলন দমন করা হয়। বাইজানটাইনদের সঙ্গে আল মাহদীর সময় হতেই আব্বাসীয়দের বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজমান ছিল। তখন হারুন বাইজানটাইনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সফলতা লাভ করার জন্যই রশীদ উপাধি লাভ করেন। হারুন অর রশীদ ক্ষমতা লাভ করার পরও এ বিরোধ চলতে থাকে। তবে তার শাসনের শুরুর দিকে ৭৯১ সালে বাইজানটাইন শাসক আইরিনের সঙ্গে হারুন সফলতা লাভ করেন। কিন্তু বাইজানটাইনদের শাসন ক্ষমতা পরিবর্তন হওয়ার পর নাইসেফোরাস ক্ষমতায় এসে আগের কর প্রদানের চুক্তি অস্বীকার ও আব্বাসীয়দের বিরোধিতা শুরু করে। তাকে সমুচিত জবাব দেওয়ার জন্য খলিফা নাইসেফোরাসের বিরুদ্ধে সৈন্য পরিচালনা করেন। এতে নাইসেফোরাস ব্যাপকভাবে পরাজিত হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ৮০৮ সালে আবার বিদ্রোহ করলে আবারও তাকে পরাজিত করেন রশীদ। ঐতিহাসিকদের মতে শুধু এরকম চুক্তি ভঙ্গ দুবারই হয়নি বরং হারুন অর রশীদের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার এরকম ঘটনা ঘটেছে কিন্তু বারবারই হারুন অর রশীদ জয় লাভ করে তার বীরত্ব প্রমাণ করেছেন।
ছদ্মবেশে প্রজার দরজায়
হারুন অর রশীদ শুধু একজন ধর্মীয় শাসকই ছিলেন না বরং সমগ্র মুসলিম বিশ্বের ইতিহাসে একজন শ্রেষ্ঠ শাসক হিসেবে নিজের অবস্থান সুসংহত করেছেন। তার নৈশভ্রমণ ও মানবকল্যাণের স্তুতি নিয়ে বহু আরব্য উপন্যাস রচিত হয়েছে। যাতে তার প্রশংসা কীর্তি, ধার্মিকতা ও মানবকল্যাণের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বাদশা হারুণ অর রশীদ নৈশ ছদ্মবেশে প্রজাদের অবস্থা স্বচোখে দেখতে বের হতেন। গভীর রাতে যখন সবাই ঘুমে বিভোর তখন নির্জন রাজপথে মলিন পোশাকে দুজন মুসাফিরকে দেখা যেত। একজন বৃদ্ধ অন্যজন তরুণ। তাদের অনিদ্রার রোগী বলেও মনে হতে পারত। বস্তুত বৃদ্ধ স্বয়ং বাগদাদের খলিফা হারুন অর রশীদ আর তরুণটি খলিফাপুত্র আল মুহতাসীম। খলিফার প্রশাসনিক দক্ষতার কারণেই আব্বাসীয় খিলাফতের শাসন দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আর এ ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েই তার পরবর্তীতে আব্বাসীয় খিলাফত দীর্ঘদিন শাসন ক্ষমতায় টিকে ছিল। হারুন অর রশীদের অন্যতম উত্তরাধিকারী আল মামুনের হাত ধরে তা আরও সুসংগঠিত হয়। এসব কৃতিত্বের দাবিদার হিসেবে হারুন অর রশীদকে স্বীকৃতি দেওয়াই যেতে পারে। কেননা বলা হয়ে থাকে তার কারণেই আব্বাসীয় খিলাফত দীর্ঘ প্রায় পাঁচশ বছর শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। হারুন অর রশীদের আরও একটি স্বভাবজাত নিয়ম ছিল। রাতের খাবার কোনো একজন মুসাফিরকে সঙ্গে নিয়ে খাওয়া। শুনতেন তার মনে কথা। বাদশা চেষ্টা করতেন সেই মুসাফিরের কোনো ইচ্ছা পূরণ করতে।
হারুন যুগ
হারুন অর রশীদ ছিলেন পঞ্চম আব্বাসীয় খলিফা। ৭৮৬ থেকে ৮০৯ সালের মধ্যবর্তী সময়কে স্বর্ণযুগ বলা হয়। তিনি যেমন ছিলেন সমরকৌশলী তেমনি প্রজারঞ্জক শাসকও। প্রশস্ত রাজপথের পাশে পরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা অসংখ্যা অট্টালিকা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আদালত, দোকানপাট, খেলার মাঠ ছিল। তার উল্লেখযোগ্য অবদান হলো ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি, গরিব-দুঃখীদের জন্য সরাইখানা চালু করা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন, চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন ও নতুন নতুন মসজিদ-মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা। তার সময়ে নৌযোগাযোগ উন্নত হওয়ার কারণে সুদূর ইউরোপের সঙ্গে আব্বাসীয় খিলাফতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তার শাসনাধীন এলাকায় ব্যবসায়ীদের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয় এবং ব্যবসায়ীদের বিশেষ সুবিধা প্রধান করা হয়। ফলে ব্যবসা ক্ষেত্রে নানা উন্নয়ন সাধিত হয়। তার আমলে অন্যতম একটি আমূল পরিবর্তনকারী ঘটনা হলো ‘আল বিমারিস্তান’ নামক চিকিৎসালয় স্থাপন। এটি ছিল বৃহৎ আকারের একটি চিকিৎসালয় যেখানে মুসলিম বিশ্বের নামকরা সব চিকিৎসা বিজ্ঞানী সেখানে সেবা প্রদান ও গবেষণা কাজে নিযুক্ত ছিলেন। তার সময়ে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলী হলো আরবদের পানির কষ্ট লাঘব করার জন্য ১০ লাখ দিনার ব্যয়ে নির্মিত ‘নাহরে যুবাইদা’। আবদুল্লাহ বিন ইদ্রিস, শফি, আসমায়ী, আবদুল্লাহ বিন নোয়াস প্রভৃতি জ্ঞানীগুণী ও কবিদের পৃষ্ঠপোষকতা দান এবং ইব্রাহিম মসুলির মতো বিখ্যাত গায়কদের নিজ দরবারে আশ্রয় প্রদান করা।
ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত
খলিফা হারুন অর রশীদের শাসনামলে সিরিয়ার রাকা শহরের বিচারক অসুস্থ থাকায় নতুন বিচারকের ব্যবস্থা করলেন। দিন কয়েক যেতেই প্রহরীরা একজন বৃদ্ধা মহিলাকে আসামি হিসেবে দরবারে হাজির করলেন। বৃদ্ধা শহরের এক রেস্তোরাঁ থেকে কিছু রুটি আর মধু চুরি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন। বিচারে বৃদ্ধা স্বীকার করলেন তিনি গত এক সপ্তাহ যাবত অভুক্ত ছিলেন। তার সঙ্গে থাকা এতিম দুই নাতিও না খেয়ে ছিল। ওদের ক্ষুধার্ত চেহারা ও কান্না সহ্য করতে না পেরেই তিনি চুরি করেছিলেন। বৃদ্ধার কথা শুনে বিচারক পুরো দরবারে চোখ বুলালেন। ঘোষণা দিলেন, কাল যেন নগর, খাদ্য, শরিয়া, পুলিশপ্রধান ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকেন। সবার সামনে রায় দেওয়া হবে। পর দিন সকালে সবার উপস্থিতিতে বিচারক রায় ঘোষণা করলেনÑ ‘বৃদ্ধা মহিলার চুরির অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ৫০টি চাবুক, ৫০০ দিনার রৌপ্য মুদ্রা আর অনাদায়ে এক বছর কারাদ- দেওয়া করা হলো। তবে অকপটে সত্য বলার কারণে হাত কাটা মাফ করা হলো। বিচারক প্রহরীকে চাবুক আনার নির্দেশ দিয়ে নিচে নেমে ওই বৃদ্ধা মহিলার পাশে দাঁড়ালেন। বিচারক বললেন, যে নগরে একজন ক্ষুধার্ত বৃদ্ধ মহিলা না খেয়ে ক্ষুধার যন্ত্রণায় চুরি করতে বাধ্য হয় সেখানে সবচেয়ে বড় অপরাধী সে দেশের খলিফা। আর আমি এসেছি খলিফার প্রতিনিধি হয়ে। তাই ৫০টি চাবুকের ২০টি আমার হাতে মারা হোক। আদেশ অনুযায়ী বিচারকের হাতে ২০টি চাবুক মারা হলো। চাবুকের আঘাতে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। কেউ একজন বিচারকের হাত বাঁধার জন্য এগিয়ে গেলে বিচারক নিষেধ করেন। এরপর বিচারক বললেন ‘যে শহরে নগরপ্রধান, খাদ্যগুদাম প্রধান ও অন্যান্য সমাজ হিতৈষীরা একজন অভাবগ্রস্ত মহিলার ভরণ-পোষণ করতে পারেন না। সেই নগরে তারাও অপরাধী। তাই বাকি ৩০টি চাবুক সমানভাবে তাদের মারা হোক।’ এরপর বিচারক নিজ পকেট থেকে বের করা রুমালের ওপর ৫০টি রৌপ্য মুদ্রা রাখলেন। তারপর বিচারপতি উপস্থিত সবাইকে বললেন, ‘যে সমাজ একজন বৃদ্ধমহিলাকে চোর বানায়, যে সমাজে এতিম শিশুরা উপবাস থাকে সে সমাজের সবাই অপরাধী। তাই উপস্থিত সবাইকে ১০০ দিনার রৌপ্য মুদ্রা জরিমানা করা হলো।’ এবার মোট ৫০০ দিনার রৌপ্য মুদ্রা থেকে ১০০ দিনার রৌপ্য মুদ্রা জরিমানাবাবদ রেখে বাকি ৪০০টি রৌপ্য মুদ্রা থেকে ২০টি চুরি যাওয়া দোকানের মালিককে দেওয়া হলো। বাকি ৩৮০টি রৌপ্য মুদ্রা বৃদ্ধাকে দিয়ে বললেন ‘এগুলো আপনার ভরণ-পোষণের জন্য। আর আগামী মাসে আপনি খলিফা হারুন অর রশীদের দরবারে আসবেন। খলিফা হারুন অর রশীদ আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থী।’ এক মাস পরে বৃদ্ধা খলিফার দরবারে গিয়ে দেখেন; খলিফার আসনে বসা সেই লোকটিই বিচারক। খলিফা চেয়ার থেকে নেমে এসে বললেন, আপনাকে ও আপনার এতিম দুই নাতিকে উপোস রাখার জন্য সেদিন বিচারক হিসেবে ক্ষমা চেয়েছিলাম। আজ দরবারে ডেকে এনেছি প্রজা অধিকার সমুন্নত করতে না পারা অধম এই খলিফাকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য। আপনি দয়া করে আমাকে ক্ষমা করুন।