শিরোনাম
১৬ জানুয়ারি, ২০২২ ১৩:৩৬

কুল বিক্রিতে বাজিমাত

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

কুল বিক্রিতে বাজিমাত

ফরিদপুরে মিশ্র জাতের কুল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন তরুণ উদ্যোক্তা মফিজুর রহমান মাফি। গাছ লাগানোর ১ম বছরেই অভাবনীয় সাফল্য পাবার পর এ বছর অধিক জমিতে চাষ করা হয়েছে বিভিন্ন জাতের কুল। শিক্ষিত যুবক হয়ে চাকুরীর পেছন না ছুটে নিজের উদ্যোগে কিভাবে সাফল্য পাওয়া যায় সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ বছর প্রায় ১ কোটি টাকার কুল বিক্রির আশা করছেন তিনি। বর্তমানে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা ভিড় করছেন তার কুল বাগানে। মাফির সাফল্যে দেখে আগ্রহী হয়ে উঠছেন বিভিন্ন স্থানের বেকার যুবকেরা। 

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের তরুন উদ্যোক্তা মফিজুর রহমান মাফি। পড়ালেখা শেষ করে চাকুরীর জন্য বিভিন্ন স্থানে আবেদন করেও চাকুরী পাননি। পরে সিদ্ধান্ত নেন বিদেশে যাবার। ইউটিউব দেখে আগ্রহ দেখান কৃষিকাজে। বিদেশ না গিয়ে বিভিন্ন জাতের ফল আবাদে উদ্যোগ নেন। এরই সূত্র ধরে বাড়ির আঙ্গিনার পাশে ৮ বিঘা জমিতে কাস্মেরি আপেল কুলের চারা রোপন করেন। গাছ লাগানোর প্রথম বছরেই কুলের ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় আগ্রহ বেড়ে যায় মাফির।

এবছর তিনি ৩৬ বিঘা জমিতে ভারত সুন্দরী, বলসুন্দরী, আপেলকুল, বাউকুলসহ মিশ্র জাতের ৭ হাজার কুল গাছ লাগিয়েছিলেন। বর্তমানে তার কুল বাগানটি জেলার মধ্যে সবচে বড় বাগান। গাছ লাগানোর ৯ মাসের মাথায়  এসব গাছে প্রথম কুল ধরতে শুরু করে। এখন গাছের প্রতিটি ডালেই বিভিন্ন রংয়ের কুল ধরে  আছে। ফলনও হয়েছে অনেক। বাগানে আগাম জাতের কুল থাকায় ইতিমধ্যে গাছ থেকে কুল সংগ্রহ করে বাজারজাত করা হচ্ছে। প্রতি কেজি কুল বাগান থেকেই বিক্রি করছেন ১২০ টাকা কেজি দরে।

মফিজুর রহমান মাফি জানান, তার বাগানে এ বছর বিভিন্ন প্রজাতির কুল ধরেছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা কুল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এ বছর বাজার দরও বেশ ভালো। তিনি আশা করছেন এবার ৭০ থেকে ৮০ লক্ষ টাকা আয় হবে কুল বিক্রি করে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কুল চাষে আগ্রহী অনেকেই তার কাছে পরামর্শ নিতে আসেন। তাদের মধ্যে বেশীর ভাগই শিক্ষিত বেকার যুবক। তিনি তাদের কুল চাষে নানা সাহায্য সহযোগীতা করে থাকেন। মাফি জানান, তার বাগানে শুধু কুল গাছই নয়, আছে পেয়ারা, আম, পেপে, লেবু, মাল্টাসহ দেশী বিদেশী প্রজাতির নানা ফলের গাছ। এ বাগান থেকে প্রতিবছর তিনি লাখ টাকা আয় করে থাকেন। তাছাড়া তার বাগানে বিভিন্ন জাতের ফলের চারা উৎপাদিত হয়। সেটি বিক্রি করেও মাফি বেশ লাভবান হয়েছেন। 

ফরিদপুরের আগ্রহী ব্যক্তিদের ফল চাষের বিষয়ে সহযোগীতা করছেন বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. মোঃ হযরত আলী। তিনি বলেন, জেলার বিভিন্ন স্থানে শিক্ষিত তরুনেরা কৃষি কাজে বেশ আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আসছে। তাদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগীতা করা হচ্ছে কৃষি বিভাগ থেকে।
জানা গেছে, ফরিদপুর জেলায় এ বছর ১৬০ হেক্টর জমিতে নানা জাতের কুলের চাষ হয়েছে। যা থেকে প্রায় ২ হাজার মেট্রিক টন কুল উৎপাদিত হবে প্রত্যাশা করছেন চাষীরা।

বিডি প্রতিদিন/এএ

সর্বশেষ খবর