অ্যাকাউন্টিংয়ে অনার্স পাস করেও গৃহিণী ছিলাম। আমাদের চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চর আগস্তি গ্রামটি খুবই দুর্গম এলাকা। ইচ্ছা করলেই স্বামী-সন্তান, সংসার রেখে কোথাও চাকরি করা সম্ভব ছিল না। বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে চাকরি হওয়ায় আমার সব স্বপ্নই পূরণ হচ্ছে।
সকালে স্কুলে গেলে রঙিন পোশাক পরে সব শিশু যখন ক্লাসে আসে, দেখে মন ভরে যায়। সব অবসাদ দূর হয়ে যায়। সাধ্যমতো সর্বোচ্চ চেষ্টা করি অসহায় দরিদ্র পরিবারের শিশুদের পাঠদান করানোর। সব কিছু অর্থের বিনিময় হয় না।
নিজেদের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকতে হয়। বসুন্ধরা গ্রুপ যখন এমন দুর্গম এলাকার শিশুদের নিয়ে ভাবছে, এলাকার নাগরিক হয়ে আমাদেরও কিছু করার থাকে। সে তাগিদ থেকেই আমি এখানে সময় দিচ্ছি। চর আগস্তি গ্রামের বেশির ভাগ পরিবারই দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে।
মৌলিক সব চাহিদা পূরণ করা তাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। ইচ্ছা থাকলেও দারিদ্র্যের কশাঘাতে যখন জীবন বিপর্যস্ত, তখন পেটের ধান্দা করতে হয় সবাইকেই। ছোট ছোট শিশুকে দিয়ে সংসারের আয় বাড়াতে কাজ করাতে হয়। মা-বাবা-ভাইয়ের সঙ্গে ক্ষেতে বা নৌকায় মাছ ধরার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে হয়। তবে এ এলাকায় বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল হওয়ার পর থেকে এখানকার মানুষের চিন্তার পরিবর্তন ঘটেছে।
এখন সবাই শিশুদের পড়াশোনা করাতে চেষ্টা করছে। এলাকার মানুষের মধ্যেও একটি বন্ধন সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে অভিভাবকরা স্কুলে বসে আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করেন। স্কুলটি এখন গ্রামের মানুষের মেলবন্ধন হিসেবে কাজ করে।
লেখক: শিক্ষক, বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল, চর আগস্তি, গলাচিপা, পটুয়াখালী