যে বয়সে অন্য শিশুরা বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়া-আসা করে, সেই বয়সে ঘরে মায়ের সঙ্গে রান্নার কাজে সহযোগিতা করত সালমা। এ ছাড়া ঘরে বসেই খেলাধুলা আর মায়ের বকাঝকা শুনেই সময় কাটত তার। স্কুল অনেক দূরে, তাই ইচ্ছা থাকলেও পড়ার উপায় ছিল না। দুর্গম চর আগস্তি গ্রামে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল প্রতিষ্ঠার পর অন্য ৭৬ শিশুর মতোই শিক্ষার সুযোগ পেয়েছে সালমা।
পড়াশোনার অদম্য ইচ্ছা আর মায়ের সহযোগিতায় স্কুলে নিজেকে সেরা হিসেবে প্রমাণ করতেও ভুল করেনি। সালমার বাবা চর আগস্তি গ্রামের সামান্য কৃষক। মা সাথী বেগম গৃহিণী। ছোট বোন ছোয়ামনির চার বছর বয়স।
ঝড়-বৃষ্টিতেও সালমার স্কুলে আসা বন্ধ হয় না। স্কুল আর পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটায় সালমা। তাই বলে মায়ের সঙ্গে রান্নার কাজেও সময় দিতে ভুল হয় না। ছোট্ট সালমা বলে, ‘আমি বড় হইয়া ম্যাডামের মতো মাস্টারি করমু। আমি অনেক পড়াশুনা করমু। আমি স্কুলে বান্ধবীগো লগে অনেক ভালো থাহি। হারাদিন পড়তে ইচ্ছে করে। আমার মায় কইছে যত বেশি পড়াশুনা করমু, তত বেশি ভালো পাইবে। অনেক বড় কেলাসে (ক্লাসে) উঠলে আব্বায় হেই স্কুলেও ভর্তি করাইয়া দিবে। আমি দেখছি যেরা লেহাপড়া করে নাই হেগো হগুলডি খারাপ চোহে দেহে। আবার সবাই মিল্লা ঠগায়ও। আমি ঠগতে (ঠকতে) চাই না। আমি শিক্ষিত হমু।’