শান্তা হালদার। আগৈলঝাড়া সরকারি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রি কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী। তার ঘরে খাবার ছিল না, মা অসুস্থ... কী খেয়ে এইচএসসির পরীক্ষা দিতে যাবে— এ নিয়ে দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না শান্তা হালদার ও তার মা কাজলি হালদারের। এ কথা জানতে পারে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের মানব কল্যাণমূলক সংগঠন বসুন্ধরা শুভসংঘ। এরপর গত ৩০ জুন শান্তার বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে হাজির হয় তারা।
বসুন্ধরা শুভসংঘের দেওয়া খাদ্যসামগ্রী পেয়ে তাদের সব দুশ্চিন্তা চলে যায়। শান্তা এ বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৯২ পায়। বসুন্ধরা শুভসংঘ তার পড়াশোনার দায়িত্ব নেয়। বসুন্ধরা শুভসংঘের জন্য শান্তা এখন ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে।
আগৈলঝাড়া বসুন্ধরা শুভসংঘের অস্থায়ী কার্যালয়ে শান্তা ও তার মা কাজলি হালদারের হাতে চাল, আটা, ডাল, তেল, লবণ, বিস্কুট, সাবান ও কলমসহ এক মাসের খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। এসব সামগ্রী তুলে দেন বসুন্ধরা শুভসংঘের উপদেষ্টা এসএম ওমর আলী সানি।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন আগৈলঝাড়া উপজেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজল দাস গুপ্ত, বসুন্ধরা শুভসংঘ আগৈলঝাড়া শাখার সহ-সভাপতি আয়কর আইনজীবী সমিরন রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবিক খান, সদস্য চয়ন হালদার ও রাশেদুল ইসলাম।
শান্তার মা কাজলি হালদার কান্নাভেজা কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ঘরে কোনো খাবার ছিল না। আমি অসুস্থ ছিলাম। আমার মেয়ে কী খেয়ে পরীক্ষা দিতে যাবে, এ নিয়ে আমি দুশ্চিন্তায় ছিলাম। বসুন্ধরা গ্রুপের মানবিক সংগঠন বসুন্ধরা শুভসংঘ আমাদের খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সহায়তা করে। আমার মেয়ে শান্তা বসুন্ধরা শুভসংঘের খাবার খেয়ে এইচএসসি পরীক্ষা দেয়। আমার মেয়ের আর না খেয়ে পরীক্ষা দিতে হয়নি। শুভসংঘ আমাকে দুশ্চিন্তামুক্ত করেছিল। আমার মেয়ে এখন ভালোভাবে পাস করেছে। বসুন্ধরা শুভসংঘ আমার মেয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছে। এখন আমার মেয়ের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে।’
শান্তা হালদার বলে, ‘আমি ২০২২ সালের এসএসসিতে বিজ্ঞান শাখায় জিপিএ-৫ পাই। কলেজে ভর্তি হওয়ার মতো টাকা ছিল না। বসুন্ধরা শুভসংঘের সহযোগিতায় আগৈলঝাড়া সরকারি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হতে পারি। আমি কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকে বই, কলম, খাতা, বেতন, পরীক্ষার ফরম পূরণের খরচসহ সবকিছু দিয়ে আমার লেখাপড়া চালাতে সহায়তা করছে।’
‘বসুন্ধরা শুভসংঘের সহযোগিতার কারণে আজ লেখাপড়া করতে পারছি। আমার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন এবং আমার জীবনও অন্ধকারের দিকে যাচ্ছিল। বসুন্ধরা শুভসংঘ আমার পাশে দাঁড়ানোয় আমি ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। আমার এইচএসসি পরীক্ষার সময় আমাদের ঘরে খাবার ছিল না। এমন সময়ে বসুন্ধরা শুভসংঘ চাল, আটা, ডাল, তেল, লবণ, বিস্কুট, সাবান ও কলম দিয়ে সাহায্য করেছে। আমি বসুন্ধরা শুভসংঘের দেওয়া খাবার খেয়ে পরীক্ষা দিতে পেরেছি। আমি ডাক্তার হওয়ার জন্য সামনে ভর্তি পরীক্ষা দেব। বসুন্ধরা শুভসংঘ আমার পাশে আছে বলে আমি ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখছি।’
বিডি প্রতিদিন/ইই