স্বপ্নযাত্রী ফাউন্ডেশন পরিচালিত ‘স্বপ্নযাত্রী অবসর পাঠাগার’-এ উপহার পাঠালো বসুন্ধরা শুভসংঘ। দেশের খ্যাতনামা কথাসাহিত্যিক ও বসুন্ধরা গ্রুপের সম্মানিত উপদেষ্টা ইমদাদুল হক মিলন তার লেখা পঞ্চাশেরও অধিক বই শুভসংঘের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন পাঠাগারটিতে। উপহার পাওয়া এই বই পাঠ্যভ্যাস বৃদ্ধিতে একটি যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করে স্বপ্নযাত্রী ফাউন্ডেশন।
গতকাল মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বসুন্ধরা শুভসংঘ স্বপ্নযাত্রী অবসর পাঠাগারের নিকট বইগুলো হস্তান্তর করে। বইগুলো স্বপ্নযাত্রী অবসর পাঠাগারের প্রধান সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় সদস্য সাফায়েত রায়হান শিহাবের হাতে তুলে দেন বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সিনিয়র অফিসার মো. মামুন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গ্রীন লাইন পরিবহনের ম্যানেজার সম্রাট হাওলাদার, স্বেচ্ছাসেবী মো. হাসিবুল হাসান, বসুন্ধরা শুভসংঘ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য তাহমিদ আরেফিন সাজিদ এবং বসুন্ধরা শুভসংঘ পল্লবী থানা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মবিনুল হায়দার শুভ্র।
স্বপ্নযাত্রী পাঠাগারের অপারেশন টিমের চীফ কো-অর্ডিনেটর সাফায়েত রায়হান শিহাব জানান, প্রবাদ আছে- ‘বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না।’ বই অজানাকে জানায়, অচেনাকে চেনায় এবং অদেখাকে দেখায়। এক কথায় বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। অনেক সময় কাউন্টারে বাসের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়। যা কখনও কখনও বিরক্তির পর্যায়ে পৌঁছায়। যাত্রীদের অপেক্ষার সময়টুকু আনন্দময় করতে উদ্যোগ নেয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বপ্নযাত্রী ফাউন্ডেশন। ডিএমপির ট্রাফিক মতিঝিল বিভাগ এবং সিএমপির ট্রাফিক উত্তর ও দক্ষিণ বিভাগের সহযোগিতায় বিভিন্ন বাস কাউন্টারে গড়ে তুলেছে ব্যাতিক্রমী পাঠাগার। এটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বপ্নযাত্রী অবসর পাঠাগার’।
রাজধানীসহ সারাদেশের মানুষ বাসযোগে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করেন। ৪ বছর ধরে বাস কাউন্টারে যাত্রীদের জন্য পাঠাগার গড়ে তোলার কাজ করছে স্বপ্নযাত্রী পাঠাগার অপারেশন টিম। ২০২০ সালে প্রথম রাঙামাটিতে পাহাড়িকা বাস কাউন্টারে অবসর পাঠাগার চালু হয়। স্বপ্নযাত্রী পাঠাগার অপারেশন টিমের পরিচালনায় ‘অবসরে পড়ি বই, আলোকিত মানুষ হই’ স্লোগানে এ পর্যন্ত বিভিন্ন বাস কাউন্টার, সেলুন এবং ইউনিয়ন পরিষদে ১৫ টি অবসর পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে। ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্বলিত বই, উপন্যাস, গল্পের বই, আত্মউন্নয়নমূলক বই, কাব্যগ্রন্থ, সায়েন্স ফিকশন, থ্রিলার, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনি, শিশুতোষ গল্পের বই দিয়ে সমৃদ্ধ করা হয়েছে এসব পাঠাগার।
বইগুলো হস্তান্তরের সময় গ্রীন লাইনের অপেক্ষারত যাত্রী মিসেস মমতাজ বেগম বলেন, ‘ইমদাদুল হক মিলনের লেখা বই শুধু কল্পনার জগত নয়, বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি। তিনি আমাদের তরুণ প্রজন্মের কাছে সাহিত্যকে আকর্ষণীয় করে তুলেছেন। তার উপহার শুধু বই নয়, এক জীবন্ত অনুপ্রেরণা।’
অন্য একজন যাত্রী বলেন, ‘স্বপ্নযাত্রী অবসর পাঠাগার তৈরি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়, যাত্রীরা অপেক্ষারত অবস্থায় বইগুলো পড়ে সময় কাটাতে পারবেন। এছাড়াও, বসুন্ধরা শুভসংঘ থেকে প্রাপ্ত বইগুলো গ্রন্থাগারে যুক্ত হওয়ায় এর সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে।’
গ্রীন লাইন পরিবহনের ম্যানেজার সম্রাট হাওলাদার বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের এই মহতী উদ্যোগ, বিশেষ করে মিলন স্যারের ব্যক্তিগত আগ্রহ ও ভালোবাসা, প্রমাণ করে যে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোরও সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে এবং তা তারা যথাযথভাবে পালন করছে।’
উল্লেখ্য, স্বপ্নযাত্রী ফাউন্ডেশন বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের তরুণ সমাজকে আলোর পথে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছে। পাঠাগারটি স্থানীয় তরুণ ও পাঠকদের কাছে একটি জ্ঞানের আলো হয়ে উঠছে প্রতিদিন।বইগুলো পাঠাগারে পৌঁছানোর মাধ্যমে শুধু একটি পাঠাগার নয়, বরং একটি সম্প্রদায়ের মধ্যে পাঠাভ্যাস ও জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়বে—এমনটাই আশা রাখছে বসুন্ধরা শুভসংঘ ও স্বপ্নযাত্রা ফাউন্ডেশন।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ