বসুন্ধরা শুভসংঘ একটি অরাজনৈতিক, সামাজিক ও মানবিক সংগঠন হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে সমাজ পরিবর্তনে এবং মানবিক মূল্যবোধ গঠনে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় সংগঠনটির গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (গাকৃবি) শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ‘ঈদ উপহার বিতরণ ও নবীনবরণ অনুষ্ঠান’। গতকাল মঙ্গলবার (২৭ মে) পড়ন্ত বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন অডিটোরিয়ামে আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র কল্যাণ পরিষদের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল আলমের সভাপত্বিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রফেসর ড. জি. কে. এম. মুস্তাফিজুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘তোমরা যেভাবে নিজেদের সময় ও শ্রম দিয়ে অন্যের মুখে হাসি ফোটাচ্ছ, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এই পথচলা যেন থেমে না যায়।মনুষ্যত্বই আসল। শুধু অর্থ থাকলেই চলবে না, বরং মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং ভালো কাজ করার মানসিকতাই একজন প্রকৃত মানুষকে পরিচিত করে। তিনি হাদীসের আলোকে ভালো কাজের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন এবং শিক্ষার্থীদের নৈতিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সমাজ গঠনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. আব্দুল্লাহ মৃধা, বসুন্ধরা শুভসংঘ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি শামীম আল মামুন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইমরান হোসেন। বসুন্ধরা শুভসংঘ গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন সহ-সভাপতি প্রসেনজিৎ রায় ও সাধারণ সম্পাদক ফাহিদুল হাসান হিমেল। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন দপ্তর সম্পাদক সুপর্ণা চ্যাটার্জী।
অনুষ্ঠান শুরু হয় বিগত বছরের ভালো কাজের উপর একটি অনুপ্রেরণাদায়ক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে। এতে বসুন্ধরা শুভসংঘের বিভিন্ন মানবিক উদ্যোগ, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং স্বেচ্ছাশ্রমে পরিচালিত কার্যক্রমের চিত্র ফুটে ওঠে। এই অংশটি নতুন ও পুরাতন সকল সদস্যের মাঝে অনুপ্রেরণার বার্তা ছড়িয়ে দেয়। এরপর পুরাতন সদস্যদের হাত ধরে নবীন সদস্যদের বরণ করে নেওয়া হয়, যা শুভ সংঘের ঐতিহ্যবাহী বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।
সদ্য সাবেক সহ-সভাপতি মাহবুব হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মেহেনাজ আক্তার মীমকে তাদের নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের জন্য বিদায়ী ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। মেহেনাজ আক্তার মীম তার বক্তব্যে বসুন্ধরা শুভসংঘে কাজ করার চমৎকার অভিজ্ঞতাগুলো নবীনদের মাঝে তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের সবচেয়ে হৃদয়ছোঁয়া অংশ ছিল দরিদ্র ও অসহায় শিশুদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ। প্রতিটি শিশুর মুখে ছিল আনন্দের ঝিলিক, যা এই উদ্যোগকে আরও অর্থবহ করে তোলে। শেষে এক মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক আয়োজন পরিবেশিত হয়।
গান পরিবেশনায় ছিলেন তানজিম হোসাইন, গৌরব রয় অর্ক, মহিবুর। কবিতা আবৃত্তি করে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন কদর, নৃত্য পরিবেশনায় ছিলেন অনামিকা ও সুপর্ণা চ্যাটার্জী।
অনুষ্ঠানের সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল আলম তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ‘তোমরা ভালো কাজের মাধ্যমে এগিয়ে যাও। আমরা সবসময় তোমাদের পাশে আছি এবং থাকবো ইনশাআল্লাহ। তোমাদের ভবিষ্যৎ হোক সুন্দর ও উজ্জ্বল। শুভসংঘের হাত ধরে সমাজের প্রতিটি স্তরে মানবিকতার আলো ছড়িয়ে পড়ুক।’
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ