দীর্ঘ আট বছর বন্ধ থাকার পর চালু হয়েছে উত্তরবঙ্গের অন্যতম বিদ্যাপীঠ কারমাইকেল কলেজের দুটি ছাত্রাবাস। গোপাল লাল (জিএল) ছাত্রাবাস এরই মধ্যে ছাত্রদের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়েছে। কাশিম বাজার (কেবি) ছাত্রাবাস দুয়েকদিনের মধ্যেই বসবাস উপযোগী হয়ে উঠবে বলে জানা গেছে।
তবে দুই ছাত্রাবাস মিলিয়ে মাত্র ২২০টি আসন প্রায় ২১ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে খুবই অপ্রতুল উল্লেখ করে দ্রুত বাকি ছাত্রবাসগুলোও সংস্কার ও নতুন ছাত্রাবাস নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
কারমাইকেল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ১৫ মার্চ কলেজের সবক’টি ছাত্রাবাস (কেবি, জিএল ও ওসমানী) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। ছাত্রাবাস বন্ধের বিজ্ঞপ্তিতে ‘অনভিপ্রেত’ কারণ উল্লেখ করা হলেও জানা যায়, তখন হলগুলো একটি ছাত্র সংগঠনের ‘ক্যাম্প’ হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ ওঠেছিল।
এদিকে দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায় ওসমানী ছাত্রাবাস ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মুসলিম (সিএম) ছাত্রাবাসটি ২০০৮ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
গতকাল সোমবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জিএল ছাত্রাবাসের সামনে একাধিক ছাত্রের জটলা। অনেকেই ছাত্রাবাসে থাকার নিয়মকানুন জানতে এসেছেন।
জিএল ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ছাত্র ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৪ জন ভর্তি হয়েছে। অনেকে খোঁজখবর নিতে আসছে। এখানে ১৭০ ছাত্র থাকতে পারবে। প্রত্যেকের মাসে খরচ পড়বে দেড় হাজার টাকা। তবে এ ছাত্রাবাসের এখনো আরো সংস্কার দরকার বলে জানান তিনি।
কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দূরদূরান্ত থেকে যারা পড়তে আসেন, তাদের কলেজপাড়া এলাকায় মেসে থাকতে হয়। এতে প্রতি মাসে প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ হয় তাদের। অথচ ছাত্রাবাসে থাকতে পারলে খরচ হবে এর অর্ধেক। এ কারণে ছাত্রাবাস চালু হওয়ায় তারা খুশি। তবে আসন যেহেতু সীমিত, সেহেতু মেধার ভিত্তিতে বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানান তারা।
কারমাইকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন বলেন, বর্তমান অধ্যক্ষ যোগ দেয়ার পর থেকেই অগ্রাধিকারভিত্তিতে ছাত্রাবাস চালুর উদ্যোগ নেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কেবি ও জিএল ছাত্রাবাস খোলা ও আবাসিক ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া এইচএসসির ছেলেমেয়েদের জন্য দুটি ছাত্রাবাস নির্মাণের কাজ চলছে। প্রতিটির আসন সংখ্যা হবে ১৩০।
এদিকে ব্যবহার অনুপযোগী ওসমানী এবং পরিত্যক্ত ঘোষিত মুসলিম ছাত্রাবাস দুটিও চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শেখ আনোয়ার হোসেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল