জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে সিট সংকটের কারণে ভোগন্তিতে পড়েছে হলটির ৪৭তম আবর্তনের ৫৪ জন ছাত্রী। নিজস্ব সীটের দাবিতে সোমবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ওই ছাত্রীরা। স্থায়ী সিট না পাওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা।
গত ২৩ জানুয়ারি নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল প্রশাসন রুম সংস্কার করা হবে এমন নোটিশ দিয়ে হলটির ১১৪ ও ১১৫ নং রুমে অবস্থানরত ওই ছাত্রীদেরকে পাশের অন্য তিনটি হলে সাময়িক সময়ের জন্য স্থানান্তরিত করে। এর মধ্যে শেখ হাসিনা হলে ২৯ জন, জাহানারা ইমাম হলে ২০ জন এবং বেগম সুফিয়া কামাল হলে ৪জন শিক্ষার্থীকে স্থানান্তর করা হয়।
সোমবার হল প্রশাসন জানিয়েছে রুম দুটির সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া, সম্প্রতি হল প্রশাসনের অনুষ্ঠিত এক সভায় স্থানান্তরিত ছাত্রীদের ফিরিয়ে আনতে খাট ও পড়ার টেবিল তৈরীর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যেখানে ঈদের পর স্থায়ী সিটে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পর্যাপ্ত বাজেট না থাকার অজুহাতে আসবাবপত্র তৈরী না করেই নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল প্রশাসন স্থানান্তরিত ছাত্রীদেরকে হলে ফিরতে নির্দেশ দিয়েছে। জাহানারা ইমাম ও সুফিয়া কামাল হলে স্থানান্তরিত হওয়া ছাত্রীরা হল প্রশাসনের নির্দেশে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের গণরুমে ফিরে আসলেও শেখ হাসিনা হলের ২৯ ছাত্রী গণরুমে ফিরে আসতে অস্বীকৃতি জানায়। এই ছাত্রীরাই সিটের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন আজ।
আন্দোলনকারী ছাত্রীরা বলেন, ‘আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের সিট নেই। ৪৭তম ব্যাচের অন্য হলের বান্ধুবীরা নিজেদের সিট পেয়েছে। অথচ দেড় বছর পরও আমাদেরকে গণরুমে থাকতে হচ্ছে। প্রশাসন নয় মাস যাবৎ আশ্বাস দিয়ে এলেও কোনো ফলাফল পাইনি। সমঅধিকারের দোহাই দিয়ে এমন অবিচার মানা সম্ভব না। তাই আজকে রাস্তায় নেমে এসেছি।’
তারা বলেন, ‘আমাদের একটি নির্দিষ্ট হলের ছাত্রী না ভেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ভাবা হোক। উদ্বাস্তুর মতো জীবন আমরা চাই না। আমরা সুষ্ঠু সমাধান চাই। পড়াশুনা ও বসবাসের জন্য সুস্থ পরিবেশ চাই।’
এ বিষয়ে জানতে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাহিদ হককে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তার বিভাগে গিয়েও তার সাক্ষাৎ পাওয়া যায় নি। ‘ছাত্রীদের দাবি যৌক্তিক’ স্বীকার করে হল প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ বলেন, সবার সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর