১৫ আগস্ট, ২০১৯ ২০:৫০

পুলিশ ঘটনা আড়াল করতে মিথ্যাচার করছে: ভিপি নুর

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

পুলিশ ঘটনা আড়াল করতে মিথ্যাচার করছে: ভিপি নুর

বুধবার দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত হন ভিপি নুর

প্রকাশ্য দিবালোকে তার উপর হামলার ঘটনাকে পুলিশ ভিন্নখাতে নিয়ে গণমাধ্যমে নানান বক্তব্য দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভিপি নুরুল হক নুর। ঘটনার সময় ভয়ে দৌড়ে পালাতে গিয়ে হয়তো আহত হয়েছে নুর- বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন বক্তব্য দেয়ায় গলাচিপা থানার ওসি’র উদ্যেশ্যে নুর বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকের ঘটনা আড়াল করতেই পুলিশ মিথ্যাচার করছে। আবোল তাবোল কথা বলে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিচ্ছে পুলিশ। এটা কোন সভ্য দেশে সম্ভব নয়।

বৃহস্পতিবার বিকেলে মোবাইল ফোনে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেয়া সাক্ষাতকারে তার ও বন্ধুদের উপর হামলার বিষয়ে নুর বলেন, গলাচিপা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহিন শাহ, মাঈনুল ইসলাম রনো, আসিফ, কচিন, নুর আলমসহ ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতা-কর্মীরা আমাদের উপর হামলা করলো, আমি ও আমার বন্ধুরা মার খেলাম। আহতাবস্থায় পাশের একটি ঘরে আমরা আশ্রয় নিলাম, সেখান থেকে পুলিশ উদ্ধার করে আহত অবস্থায় আমাদের বেশ কয়েকজনকে গলাচিপা হাসপাতালে ভর্তি করা হলো। যে ঘটনা সবাই দেখেছে সেখানে পুলিশ বলছে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা দু’দিক থেকে আসায় নুর ভয় পেয়েছে। 

পুলিশের বক্তব্য হাস্যেকর মন্তব্য করে নুর বলেন, যেখানে নিরাপত্তার অভাবে বাড়িতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে আমাকে এটাই প্রমাণ করে পুলিশের ভূমিকা কি ছিল। গলাচিপা হাসপাতালের ডাক্তারদের বরাত দিয়ে নুর বলেন, আমার মাথায় সিটি স্ক্যান প্রয়োজন, রক্তের ক্রিটিনাল পরীক্ষা করতেও পরামর্শ দেন চিকিৎসক। 

পুলিশ ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের চাপে ডাক্তার আমাকে ছাড়পত্র দিতে বাধ্য হয়েছে জানিয়ে নুর দাবী করেন, আমাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী অথবা বরিশাল পাঠাতে দেয়নি ক্ষমতাশীনরা। কারণ রেফার করলেই গণমাধ্যমে চলে আসবে হামলায় গুরুতর আহতের কথা। তাই ছাড়পত্র দিতে ডাক্তারকে বাধ্য করা হয়েছে বলেও দাবি করেন নুর। তিনি আরও বলেন, তাকে ও তার সঙ্গীদের মেরে জখম করা হয়েছে। উপর্যুপরি কিল-ঘুষি-লাথি মারা হয়েছে। তার পিঠে রক্ত জমা হয়েছে। শরীরের সব স্থানে ব্যথা পাচ্ছেন। তার বন্ধুরাও আহত। নিরাপত্তাহীনতাই বাড়িতে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। সময় সুযোগ বুঝে ঢাকায় গিয়ে উন্নত চিকিৎসা করাবেন জানিয়ে নুর বলেন, পটুয়াখালী-বরিশাল যেতেও পথে আমার উপর হামলা হতে পারে, সেখানেও আমি নিরাপত্তাহীনতায় চিকিৎসা নিতে পারছি না।

ফের হামলা এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণে গতকাল বুধবার গলাচিপা হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে যান বলে দাবি করেন নুর। তিনি বলেন, স্থানীয় দু’জন প্রাকটিশনার ও উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাক্তার তার ও তার বন্ধুদের চিকিৎসা দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে গলাচিপা থানার ওসি আখতার মোর্শোদের সরকারি মোবাইল ফোনে বহু চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। এবং তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে এএসপি সার্কেল (গলাচিপা) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, হাসপাতালের বিষয়টি আপনি ডাক্তারের সাথে কথা বলেন। একজন অসুস্থ্য রোগী সুস্থ্য না হলে ডাক্তারতো তাকে ছাড়পত্র দিবে না। এছাড়া আর কোন মন্তব্য করেননি পুলিশের এই কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার দুপুরে কয়েকটি মোটর সাইকেলে বন্ধুদের নিয়ে দশমিনায় বোনের বাড়ি যাওয়ার পথে গলচিপা উপজেলার উলানিয়া বন্দর অতিক্রম করার সময় দুর্বৃত্তদের হামলায় নুরসহ ৪-৫ জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বথন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল থেকে নূরকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে গ্রামের বাড়ি চরবিশ্বাস পাঠায়।

বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর