শিরোনাম
২০ আগস্ট, ২০১৯ ১৩:৩৬

সাদিয়াকে বাঁচাতে মা-বাবার আকুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাদিয়াকে বাঁচাতে মা-বাবার আকুতি

সাদিয়া সুলতানা

কিছুদিন আগেও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মরণব্যাধি ‘ক্যান্সার সচেতনতা ও স্বেচ্ছায় রক্তদান’ কর্মসূচি করেছিল সে। নিজেও একাধিকবার মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দেয়। ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত ছিল স্বেচ্ছায় রক্তদাতের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাঁধনের কার্যক্রমে। কিন্তু সেই শিক্ষার্থী সাদিয়া সুলতানাই আজ মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। 

অসহনীয় ব্যথা ও ক্যান্সারের যন্ত্রণায় কিছুক্ষণ পরপর ছটফট করছে। সাদিয়ার বাঁচার আকুতি ও বাবা মায়ের বুকফাটা আর্ত-চিৎকারে ভারি হচ্ছে রাজধানীর মিরপুরের আলোক হেলথ কেয়ারের পরিবেশ। 

চিকিৎসক বলছেন, কোলন ও ওভারি ক্যান্সার দুটির চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এই মুহূর্তে অর্থ যোগানের বিকল্প নেই। শিগগিরই তিনটি কেমোথেরাপি বিদেশ থেকে আনতে হবে। যার একেকটির ব্যয় পড়বে ৬ লাখ টাকা।

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সাদিয়া। গত ২০১৮ সালে মে মাসে পরীক্ষার কেন্দ্রে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে উত্তরা মহিলা মেডিকেল ও পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। 

দীর্ঘদিন সেখানে চিকিৎসা নেয়া হয়। পরে অবস্থার আরও অবনতি হলে উত্তরার আর এম সি হাসপাতালে জরুরি অপারেশন করা হয়। অপারেশনে কোলন ক্যান্সার ধরা পড়ে। মাঝে কিছুদিন ভালো ছিলও সাদিয়া। নিয়মিত নিজের ক্লাস ও টিউশনিও করেছে। কিন্তু ফের রমজানের আগে আবার ব্যথা শুরু হলে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আছাদুজ্জামান বিদ্যুতের তত্ত্বাবধানে এখন আলোক হাসপাতালে বিশোর্ধ সাদিয়ার চিকিৎসা চলছে। 

সাদিয়ার মা কামরুন নাহার জানান, ৮টি কেমোথেরাপির পর আরও একটি অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর চিকিৎসক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখে ক্যান্সার সমস্ত পেটে ও জরায়ুতে ছড়িয়ে পড়ছে। এর মাঝে আমরা কোলকাতার টাটা মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাই। কিন্তু চিকিৎসা ব্যয় অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় আবার দেশে চলে আসি। এখন মেয়ের পা ফুলে মোটা হয়ে গেছে। পেটও ফুলে গেছে। ব্যথ্যায় অস্থির হয়ে গেছে। পানি ছাড়া কিছুই খেতে পারছে না। আমার মেয়েটা সব সময় মানুষের সেবায় কাজ করেছে। মানা করলেও অন্যকে রক্ত দিত। 

শুক্রবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, মেয়ের পাশে দাঁড়িয়ে ফুপিয়ে কাঁদছেন সাদিয়া বাবা মঈন উদ্দিন হেলালী। বাসা রাজধানীর বিমানবন্দরের কাওলা এলাকায়। সেকানেই একটি দোকান আছে তার। 

তিনি বলেন, আল্লাহ যাতে কোনও মেয়েকে এমন রোগ না দেয়। মেয়ের কষ্ট দেখে আর থাকতে পারছি না। কয়েকদিন আগে আবারও দু’টি টেস্ট করিয়েছি। প্রায় ১ লাখ টাকা লেগেছে। এ পর্যন্ত মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিজের ভিটে মাটিটাও বিক্রি করে দিয়েছি। আর কোলাতে পারছি না। বাধ্য মেয়ের জীবনের জন্য সবার দারস্থ হতে হচ্ছি। 

ক্যান্সারে আক্রান্ত সাদিয়া সুলতানাকে আর্থিক সহায়তায় ব্যাংক হিসাব নং- কামরুন নাহার (সাদিয়ার মা)- আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক (খিলক্ষেত শাখা) ৯৯০১১৮০৫৯৯৫৬৭। 

বিডি প্রতিদিন/২০ আগস্ট, ২০১৯/মানিক মুনতাসির/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর