প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে ভর্তিচ্ছুদের হাতে কখনো তুলে দিয়েছেন পানি, কলম। কখনো হলের রুমে পেতে দিয়েছেন চাদর কিংবা তোষক। রাত হলে মশার কয়েল আর এরোসল হাতে ঘুরেছেন হলের রুমে রুমে ৷ গভীর রাত জেগে হল গেইটে দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা জানাতে হয়েছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা পরীক্ষার্থীদের। হলের ছাত্রীদের সঙ্গে সমন্বয় করে ঠিক করেছেন প্রত্যেক আগন্তুকের থাকার নিশ্চয়তা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিচ্ছুদের জন্য এভাবেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক ফৌজয়া নিজাম তামান্না। গত ২৭ অক্টোবর থেকে এই ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। তিনি বলেন, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয় নেতাকর্মীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। দূর-দূরান্ত থেকে আসা ছেলে-মেয়েদের অসহায়ত্ব ভুলিয়ে দিতেই ছাত্রলীগ পাশে থাকে। আমি মনে করি এটি ছাত্রলীগের উপর ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অধিকার। ছাত্রলীগের সৃষ্টিই হয়েছে শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিতের জন্য।
তামান্না আরো বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দায়িত্বে থাকলেও আমার রাজনীতির আঁতুরঘর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। তাই ভর্তি পরীক্ষার সময় প্রথম বর্ষ থেকেই যেমন আমরা ভর্তিচ্ছুদের জন্য কাজ করেছি। এখনো এই বিষয়টি আমাকে টানে। তাই ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা ছেলে-মেয়েদের জন্য ক্যাম্পাসে চলে এলাম। নিজের রুম-বিছানাপত্র, পড়াশুনা বাদ রেখেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই সহযোগিতা করেছে। এটি ছাত্রলীগের জন্য একদিকে উৎসবের, অন্যদিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ চর্চা ও প্রসারের অন্যতম উদ্যোগও।
তিনি আরো বলেন, চবি ক্যাম্পাসের অবস্থান শহর থেকে অনেক দূরে হওয়ায় ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা মেয়েদের কষ্টটা একটু বেশিই। কারণ মেয়েদের সবার আগে প্রয়োজন নিরাপত্তা। ক্যাম্পাসের আশপাশে বা শহরে মেয়েদের জন্য অস্থায়ী নিরাপদ থাকার স্থান নেই বললেই চলে। তাই ছাত্রী হলগুলোই ভরসা। হল প্রশাসনও যথেষ্ট সক্রিয় থেকেই মেয়েদের থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তামান্না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষেই ছাত্ররাজনীতে হাতেখড়ি তার। তৃণমূলের রাজনীতিতে সফল হওয়ায় স্বীকৃতি মিলেছে তার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটিতে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া চট্টগ্রাম বিভাগের একমাত্র মেয়ে তামান্না, যিনি কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। সাম্প্রতিক কোনো কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই শুধু নয়; কেন্দ্রীয় কমিটিতে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির উপ-সম্পাদকীয় পদ পাওয়া একমাত্র নারী প্রতিনিধিও তামান্না।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা