২ এপ্রিল, ২০২০ ২১:৫৭

করোনার উপসর্গ থাকায় চিকিৎসা মেলেনি, ইবি ছাত্রীর আবেগঘন স্টাটাস

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

করোনার উপসর্গ থাকায় চিকিৎসা মেলেনি, ইবি ছাত্রীর আবেগঘন স্টাটাস

তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। কিন্তু করোনার উপসর্গ সন্দেহে তার চিকিৎসা দেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বরং অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। ফলে মারাত্মক অসুস্থ হওয়া সত্বেও কোনো প্রাথমিক চিকিৎসা মেলেনি ভুক্তভোগীর।

এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ও খুলনার রুপসা উপজেলার বাসিন্দা সাবিকুন্নাহার মিতা। গত বুধবার বিকেলে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে তার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, গত কয়েকদিন যাবত তীব্র শ্বাসকষ্ট ও টনসিলের প্রদাহে ভুগছিলেন ওই ছাত্রী। যা বৈশ্বিক মহামারী নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ। ফলে গুরুত্বর অসুস্থতা নিয়েই ঘণ্টাখানেক খুলনা মেডিকেল হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষে ছুটে বেড়ালেও চিকিৎসা পাননি। পরে নিরূপায় হয়ে স্থানীয় এক ডাক্তারের চিকিৎসা নেন ওই ছাত্রী। 

এর প্রেক্ষিতে বুধবার রাত ১১টা ৫১ মিনিটে হাসপাতালে ভোগান্তির কথা জানিয়ে নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন ওই ছাত্রী। যা এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো : 

‘আমার বাংলাদেশ,
গত ৩ দিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছি। আজ আর না পেরে খুলনা মেডিকেলে গিয়েছিলাম, কিন্তু কপাল খারাপ। যখন শুনলো শ্বাসকষ্ট, তখন বলে তারা রোগী দেখে না। আমি উত্তরে বললাম তাহলে আমাদের মত লোক কোথায় যাবে?? উত্তর আসলো ৩/৪টা। 
 
১. প্রাইভেট ক্লিনিক-এ যান।
২. সদর হাসপাতালে যেতে পারেন। আমরা সরি।
৩ নম্বরটা ছিল মজার উত্তর... ঠিক তখন ৪ জন পুলিশ ২ জন মধ্যবয়সী লোক নিয়ে আসে। জরুরি বিভাগ থেকে ৩ নং উত্তর আসে ঠিক এভাবে, ‘আমরা এই সব রোগী যায় হোক দেখবো, কিন্তু আপনাকে না।’

আমি..
তাদের ২ নং কথার উত্তর হিসেবে বলছি, ‘আপনারাই যদি রোগী না দেখেন, সদরের ওরা কিভাবে কি করবে।’ ওরা চুপ।

আমি বললাম কোন ডাক্তার নাই আমাকে দেখার মত। আমি তো দম নিতে পারছি না। তারা বলে আজ হবে না কাল আসেন। তখন আমি বললাম আমার অবস্থা খারাপ হচ্ছে, তারা বলে সারা দিন কি করছেন?

আমি : আর সহ্য করতে না পেরে এখন (৪:৩০) আসলাম।
তারা তখনও বলে হবে না। 

আর আমার আপনার প্রশাসনের পুলিশ ভাইয়ারা তখনও দেখল পুরোটা, কিন্তু কোনো রেসপন্স নাই। ওখান থেকে চলে আসি আর গ্রাম্য ডাক্তার দেখাই, এখন একটু কম কষ্ট হচ্ছে। 

আজকের প্রশাসন তাদের চেতনা নিয়ে জেগেও ঘুমিয়ে ছিল। বাহ বাহ..। বড় লেকচার ছাড়েন অথচ আপনারা রোগী দেখেন না আর শ্বাসকষ্টে কেউ মারা গেলে করোনা সন্দেহ তাই না? শেষে জানাজা মিলে না। আমার জন্য দোয়া করবেন। ধন্যবাদ বাংলাদেশ।’

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর