অংশগ্রহণ ও জবাবদিহিতা না থাকলে গণতন্ত্র হয় না। আমাদের এখানে যে ‘উন্নয়ন’ বলা হচ্ছে এর মুল ত্রুটিটা কী? এটা বন্টন বাদ দিয়েই ‘উন্নয়নবাদ’। এখানে বন্টনের কথা কেউ বলে না।
বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ ‘দ্য আইডিওলজি অব দ্য ন্যাশন স্টেট: সাম রিফ্লেকশান অন ন্যাশন-বিল্ডিং, লিবারাল-ইন্ডিভিজ্যুয়াল, এন্ড ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক এ বিশেষ বক্তৃতার আয়োজন করে।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য(শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল। আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের সভাপতিত্বে এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহামের স্কুল অব ল এন্ড হিউম্যান রাইট্স এর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন। মূল প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশ নেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সি আর আবরার প্রমুখ। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. সীমা জামান।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, আমাদের দারিদ্র্যের যে মাপকাঠি দেওয়া হচ্ছে, আমাদের জাতীয় আয়(মূলত মাথাপিছু আয়) বেড়ে আড়াই হাজার ডলার হয়েছে। সর্বনিম্ন আয় কতো? কারণ জিডিপির মাপ, গড়পড়তা দিয়ে কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা হবে না। সর্বনিম্ন মজুরি কত, এটাই হবে মাপকাঠি। যেখানে সর্বনিম্ন মজুরির মান মানবেতর, মাসে ছয় হাজার, আট হাজার, তাকে কোনো ক্রমেই উন্নয়ন বলা যায় না। অথচ আমাদের উন্নয়নের বটিকা খাওয়ানো হচ্ছে।
মূল প্রবন্ধে উত্তর-ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রের সাথে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সম্পর্কের অবস্থা নিয়ে কথা বলেন অধ্যাপক ড. শাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, উত্তর-ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রগুলোর ক্ষমতায় যারা থাকেন, তারা রাষ্ট্রকেই একটি ‘আইডিওলজি’তে পরিণত করেন। এর তিনটি উপাদান হলো, একটি জাতিরাষ্ট্র, উদারনীতিভিত্তিক সাংবিধানিক ব্যবস্থা এবং উন্নয়নের এজেন্ডা। এসব রাষ্ট্রে যারা ক্ষমতায় আসেন, তারা উপনিবেশিক অবস্থাগুলোকে চ্যালেঞ্জ বা সংশোধনও করেন না। বিদ্যমান শ্রেণিচরিত্র, কর্তৃত্ব সবই আগের মতই থাকে। এভাবে সৃষ্ট আইডিওলজি’র মাধ্যমে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর উপর কর্তৃত্ব বজায় রাখে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন